আজ : শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আদালতের দেয়া সময়সীমা পেরোলেই জিপি-রবিতে প্রশাসক: জয়


প্রতিবেদক
জনতার মেইল.ডটকম

প্রকাশিত: ৯:২১ অপরাহ্ণ ,১২ জানুয়ারি, ২০২০ | আপডেট: ৯:২৪ অপরাহ্ণ ,১৩ জানুয়ারি, ২০২০
আদালতের দেয়া সময়সীমা পেরোলেই জিপি-রবিতে প্রশাসক: জয়

নিউজ ডেস্ক।। প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা পাওনা দাবি ইস্যুতে আদালতের নির্দেশ না মানলে সময়সীমা পেরোলেই প্রশাসক বসবে জিপি-রবিতে।

রোববার সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় দুই অপারেটরের কাছে অডিট আপত্তির পাওনা দাবির বিষয়ে আলোচনায় এমন নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

সভায়- ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার সভাপতিত্ব উপস্থিত ছিলেন- বিভাগের সচিব নূর-উর রহমান, বিটিআরসির চেয়ারম্যান মোঃ জহুরুল হকসহ বিভাগ ও বিভাগের বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন- অপারেটর দু’টির কাছে পাওনা ইস্যুতে আর কোনো সমঝোতার উদ্যোগ নয়, বরং আদালত যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছে সেভাবেই বিটিআরসি এগিয়ে যাবে। সেই অনুসারে ব্যবস্থা যা নেয়ার নেয়া হবে।

আদালতের দেয়া সময়সীমার মধ্যে নির্দেশনা না মানলে সময়সীমা শেষ হওয়ার একদিন পরেই প্রশাসক বসিয়ে দিতে বলেন তিনি।

সভার সভাপতি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন- ‘আমরা আইনের মধ্যে থেকে সবগুলো বিষয় কাভার করেছি। বারবার আলাপ-আলোচনা করে সমঝোতার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এখন আর সমঝোতার সুযোগ নেই, কোনো শব্দ উচ্চারণ করার সুযোগ নেই। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করবো’ বলেন মন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, প্রশাসক বসানোর সিদ্ধান্ত, নোটিশ সবই আগেই দেয়া হয়েছে। বাদ ছিল শুধু প্রশাসক ঠিক করা।

গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৯৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা এবং রবির কাছ ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা দাবি নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসির। ২০১৯ সালের শুরুর দিকে ওই টাকা দাবি করে কমিশন দুই অপারেটরকে চিঠি দেয়।

২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগ গ্রামীণফোনকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) দাবি করা ১২ হাজার ৫৯৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকার মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে এ আদেশ দিয়েছেন।

আদেশে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময় তিন মাসের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করতে পারলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবে বিটিআরসি।

গ্রামীণফোনের জন্ম থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত অডিট করে বিটিআরসি। বেসরকারি অডিটদের করা ওই নিরীক্ষায় অপারেটরটির কাছে ১২ হাজার ৫৯৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা কমিশনের পাওনা বলে উঠে আসে।

এদিকে গ্রামীণফোন শুরু থেকেই এই দাবিকে অযৌক্তিক বলে আসছে। পর্যায়ক্রমে দেশের আদালতে যাওয়ার পাশাপাশি অপারেটরটি তাদের বিনিয়োগকারীদরে মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আদালতে শুনানিতে যাওয়ার বিষয়ে একটি নোটিশও সরকারকে পাঠায়। এমনকি মহামান্য রাষ্ট্রপতিকেও ‘উকিল নোটিশ’ পাঠায় অপারেটরটির মূল কোম্পানি টেলিনর।

অন্যদিকে ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি রবিকে পাঁচ মাসে সমান কিস্তিতে ১৩৮ কোটি টাকা  বিটিআরসিকে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

অডিট আপত্তিতে বিটিআরসিতে দাবি করা মোট পাওনা ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকার মধ্যে আপাতত এই টাকা পরিশোধ করতে হবে অপারেটরটিকে। প্রথম কিস্তি দিতে হবে ৩০ জানুয়ারির মধ্যে।

রবিও তাদের কাছে বিটিআরসির এই পাওনা দাবিকে অযৌক্তিক বলছে। এক সময় তারাও আদালতে যায়।

পাওনা দাবির ইস্যু আদালত পর্যন্ত আসার আগে দাবি আদায়ে পুরো ২০১৯ সাল জুড়েই নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বিটিআরসি। এর মধ্যে ব্যন্ডউইথ কমিয়ে দেওয়া এবং ওই বছরের ২২ জুলাই থেকে অপারেটর দুটি যাতে আর নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং নতুন সেবা নিয়ে আসতে না পারে সে জন্য তাদের সব অনুমোদন বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এরপর বিষয়টি সমাধানে প্রথমে অর্থমন্ত্রী এবং পরে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা আলাদা পদক্ষেপ নেন। কিন্তু তাতে সমস্যার সুরাহা হয়নি।

Comments

comments