গোয়ালন্দে ওসির বদলি ঠেকাতে মানববন্ধন! কেন?
প্রকাশিত: ৫:৪০ অপরাহ্ণ ,৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ | আপডেট: ৩:৩১ পূর্বাহ্ণ ,১০ সেপ্টেম্বর, ২০২০
নিজস্ব প্রতিনিধি।। একসময়ে ৫০/১০০ টাকায় দেহ বিলিয়ে দেয়া যৌনকর্মী ঝুমুর গোয়ালন্দ ঘাট থানায় ওসি আশিকুর রহমান যৌনপল্লীর প্রবেশপথে “জনগনের দরবার” নামে অফিস খোলার পর সে হয়ে ওঠে দৌলতদিয়া ঘাটের শীর্ষ মাদকের গডফাদার ও যৌনকর্মীদের নারীনেত্রী।
যৌনকর্মী ঝুমুর বাড়ীওয়ালী এখন কোটিপতি, পাপিয়া। চলাফেরা করে ৪০ লক্ষ টাকার প্রায়ভেটকার গাড়িতে, আর রাত্রি যাপন করে কোটি টাকার বাড়িতে! এসব টাকার মূল উৎসাহ নারী ব্যবসা, মাদক ব্যবসা আর যৌনপল্লীতে জুয়ার আসর থেকে।
অপরদিকে, ওসি আশিকুর রহমান গোয়ালন্দ ঘাট থানায় যোগদানের পর থেকেই দৌলতদিয়া ঘাটে বন্ধ করেন পরিবহণে চাঁদাবাজী, করেন যৌনকর্মিদের জানাজা, বিভিন্ন স্থানে জনগনের দরবার বসান এমন বেশ কিছু ভাল কাজ করে গণমাধ্যমে প্রসংশনীয় হন। প্রথমদিকে ভাল কজ করে নজরে আসলেও পরে তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগও সৃষ্টি হয়। এর বছরখানেক পর তার অন্যত্রে বদলির আদেশ আছে। গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমানের সেই বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে ৮ সেপ্টেম্বর-২০ বুধবার দৌলতদিয়া ক্যানাল ঘাট এলাকায় অসহায় হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর নামীয় এক ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সে মানববন্ধন বক্তারা বলেন- গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান যোগদানের পর থেকেই শুরু হয় যৌনপল্লীতে মৃত্যুর পরে তাদের জানাজা। জনগণের কাছে সহজে আইনি সহায়তা পৌঁছে দিতে উপজেলার বিভিন্নস্থানে জনগণের দরবার নামে তিনি গাছতলায় অফিস শুরু করেন। যৌনকর্মীদের নিরাপত্তার জন্য দৌলতদিয়া যৌন পল্লীর প্রবেশ পথেও জনগণের দরবার নামে ক্যাম্প করেছেন। তিনি একজন মানবিক মানুষ হিসেবেই যৌনকর্মীদের কাছে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন।
বক্তারা আরো বলেন- গোয়ালন্দ কে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পরিপাটি করে তোলার অন্যতম কারিগর ওসি আশিকুর রহমানের বদলির আদেশ প্রত্যাহার করা খুবই প্রয়োজন। এ সময়ে তিনি চলে গেলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন বক্তারা।
পক্ষান্তরে, একসময়ে ৫০/১০০ টাকায় দেহ বিলিয়ে দেয়া দৌলতদিয়া ঘাটের শীর্ষ মাদকের গডফাদার ও যৌনকর্মীদের নারীনেত্রী যৌনকর্মী ঝুমুর বাড়ীওয়ালী এখন কোটিপতি, পাপিয়া। চলাফেরা করে ৪০ লক্ষ টাকার প্রায়ভেটকার গাড়িতে, আর রাত্রি যাপন করে কোটি টাকার বাড়িতে! এসব টাকার মূল উৎসাহ নারী ব্যবসা, মাদক ব্যবসা আর যৌনপল্লীতে জুয়ার আসর থেকে।
স্থানীয়সূত্রে জানাযায়- দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫-নং ওয়ার্ড সদস্য জলিল ফকিরের কথিত স্ত্রী। তার সাথে দৃর্ঘদিন অবৈধ সম্পর্ক থাকায় যৌনকর্মী ঝুমুর হয়ে ওঠে পাপিয়া। অপকর্ম ঢাকতে তৈরী করে অসহায় নারী ঐক্য সংগঠন। এই সংগঠনের নামে যৌনকর্মীদের মাঝে ত্রাণ বিতরন করে প্রশাসনের কাছে হয়ে ওঠে নেত্রী, ঢেকে রাখে তার অপরাধের কালো ছায়া।
জানা যায়, যৌনকর্মী ঝুমুরের আগে ছিলনা কিছুই। এখন তার যৌনপল্লীতে রয়েছে একাধিক বাড়ি, সেখানে দালালদের মাধ্যমে বাহির থেকে নিয়ে আসা ১০-১৫ বছরের মেয়েদের দিয়ে করান জোরপূর্বক দেহব্যবসা। আবার ৮/৯ জন কর্মচারি রেখে যৌনকর্মী ঝুমুর বাড়িওয়ালি টালিয়ে যাচ্ছেন বিয়ার ও দেশী-বিদেশী মদের রমরমা ব্যবসা।
এ বিষয়ে, গত ৯/২/২০২০ইং তারিখ দুপুরে সংবাদ সংগ্রহের জন্য দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর প্রবেশের সময় এ প্রতিবেদক সহ দুই গণমাধ্যম কর্মিদের ভিতরে প্রবেশ নিষেধ করেন গোয়ালন্দ থানার ওসি আশিকুর রহমান। সেখানে জনগনের দরবার নামে অফিসে বসে ওসির সাথে কথা হলে তিনি বলেন- নিউজের জন্য যেতে হলে অফিসের এ্যাসাইন্টমেন্ট নিয়ে আসেন, তাহলে যেতে পারবেন। কিন্তু পুলিশ সাথে যাবে। তানা হলে যেতে পারবেননা। অথবা আমার নিকট থেকে তথ্য নিতে পারেন। আবার, সেক্স করতে চাইলেও যেতে পারবেন। কিন্তু সাংবাদিকতার জন্য অবাধে যেতে পারবেননা। ভিতরে এখন কোন সমস্যা নাই, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি হয়েছে। এখানে কোন অপরাধ হয় না। শুধু মদ বিক্রির জন্য ৪০ টা দোকান আছে। বিয়ার চলে। চলবেনা গাজা, ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিল।
পরবর্তীতে ঝুমুর বেগমের সাথে কথা বলতে চাইলে ওসি তাকে ডেকে এনে সেখানে কথা বলায়ে দিয়েছিল।
এ বিষয় নিয়ে, Morshed Alom Malek নামে এক ব্যাক্তি তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন- “দৌলতদিয়া ঘাটের শীর্ষ মাদকের গডফাদার যৌনকর্মীদের নারীনেত্রী ঝুমুর বাড়ীওয়ালীর বিয়ার ব্যবসা এখন চলবে কেমনে? তার লোকতো আবার জনপ্রতিনিধি? এই নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। তাহলে ঝুমুর ও জলিল মেম্বারের এই মাদক ব্যববসার শেল্টার দাতারা কে?”
ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ক্রাইম রিপোর্টার্স ফাউন্ডেশন (মানবাধিকার) রাজবাড়ী জেলার বিশেষ প্রতিনিধিী অশোক কুমার সরকার বলেন- গত ১/১১/১৯ ইং তারিখে পোরা ভিটায় বস্তা বন্দি লাশ পাওয়া যায়। সেই ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে মদ ব্যাবসায়ী আজিজ প্রামানিক তার বাড়ির মধ্যে নিয়ে আমাকে মারধর করে ও হত্যারে হুমকি দেয়। সেই ঘটনায়ে একটি লিখিত এজাহার লিখে নিয়ে গোয়ালন্দ থানায় মামলা করতে গেলে ওসি আশিকুর রহমান এজাহার জমা নিলেও আজও পর্যন্ত এজাহারটি মামলা হিসাবে রেকর্ড করে নাই।(এ হত্যা মামলায় পরে মাদক কারবাড়ী আজিজ সিআইডি’র হাতে গ্রেফতার হয়েছিল)।
এছাড়াও, “গোয়ালন্দ থানার ইন্সপেক্টর আশিকুর রহমান বলেন- আমি খবর দেখিনা, খবর পরিনা, খবর বানাই” শিরোনামে ২৩/২/২০২০ তারিখে সাপ্তাহিক অপরাধ সন্ধান এ সংবাদ প্রকাশ হয়। “গোয়ালন্দে যত্রতত্র মাদক বিক্রি” শিরোনামে ৮/১২/২০২০ তারিখে “বাংলাদেশের আলো” পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। এমন আরো একাধিক পত্র-পত্রিকায় সয়বাদ প্রকাশ হয়।
প্রতিবেদকের কথাঃ নির্বিঘ্নে এসব কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যৌনপল্লীর প্রবেশ দ্বারে পাহারা বসিয়েছিল গোয়ালন্দ থানার ওসি। সেখানে সাংবাদিক প্রবেশ ছিল বাঁধা। সচরাচর কোন সাংবাদিক যেন প্রবেশ করতে নাপারে। আমাকে ও সাংবাদিক সমির কান্তী বিশ্বাসকে একদিন নিষেধ করেছিল, ওসি পরে ঝুমুর বেগমকে ডেকে এনে সেখানে কথা বলায়ে দিয়েছিল। গেট থেকে ঘুরে চলে এসেছিলাম। ওসির এমন লজ্জাজন ও অসংলগ্ন কথাবার্তায় আমরা দু’জন লজ্জিত ও মর্মাহত হই। সেদিন থেকেই ঘটনার আচ করতে পেরেছিলাম।