আজ : রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীতে ভার্চুয়াল আদালতের কাজ শুরু।। প্রথম দিনেই ১৯ আসামীর জামিন


প্রতিবেদক
জনতার মেইল.ডটকম

প্রকাশিত: ১১:০৪ পূর্বাহ্ণ ,১৪ মে, ২০২০ | আপডেট: ১০:০৩ অপরাহ্ণ ,১৪ মে, ২০২০
রাজবাড়ীতে ভার্চুয়াল আদালতের কাজ শুরু।। প্রথম দিনেই ১৯ আসামীর জামিন

রাজবাড়ী প্রতিনিধি।। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে (অনলাইনে) ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে রাজবাড়ী আদালতের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ কার্যক্রমের প্রথম দিনেই রাজবাড়ী জেলা কারাগারে অবস্থানকারী ১৯ হাজতী আসামীর জামিন হয়েছে।

আদালত সূত্র জানাযায়, ১৩ মে-২০২০ বুধবার সকালে এ কার্যক্রমের শুভ সূচনা করেন রাজবাড়ীর আমলী আদালত-১ ও ২ এর বিচারক হিসেবে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (ভারপ্রাপ্ত) আবু হাসান খায়রুল্লাহ্।

এরআগে, মঙ্গলবার রাজবাড়ী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নির্ধারিত ই-মেইলে জামিন আবেদন জমা দেন আইনজীবীগণ। আবেদনের কার্যকারণ যাচাই ও পর্যালচনার পর রাজবাড়ীর ১ ও ২ নং আমলী আদালতের জিআর ও সিআর এই দুই ক্যাটাগরীর ১৫ টি মামলার জামিনের আবেদন শুনানীর জন্য (প্রথম দিন) ১৩ মে বুধবার নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের ই-মেইলে সময় জানিয়ে দিয়ে ১২ মে মঙ্গলবার একটি লিংক পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

আবেদনকারী আইনজীবীগণ বুধবার সকালে রাজবাড়ী জেলা বার এসোসিয়েশন ভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে মামলার শুনানীতে অংশগ্রহণ করেন। এসময় বিচারক হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সে শুনানী গ্রহণ করেন রাজবাড়ীর ভারপ্রাপ্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু হাসান খায়রুল্লাহ্।

শুনানী শেষে বিজ্ঞ বিচারিক হাকিম আবু হাসান খায়রুল্লাহ ১৫ টি মামলার মধ্যে ১৩ টি মামলায় জামিনের আবেদন মঞ্জুর এবং ২ টি আবেদন নামঞ্জুর করেন। মঞ্জুরকৃত ১৩ টি মামলায়মোট ১৯ জন আসামী জামিন প্রাপ্ত হয়।

বাংলাদেশের উচ্চ আদালতে দু’দিন আগে এবং বিভিন্ন জেলা আদালতে পর্যায়ক্রমে ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে আদালতের বিচার কার্যক্রম শুরুর অংশ হিসেবে রাজবাড়ীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৩/৫/২০২০ইং তারিখে প্রথম এ কার্যক্রম শুরু হয়।

এ বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাজবাড়ীর ভারপ্রাপ্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু হাসান খায়রুল্লাহ্ বলেন, এ কার্যক্রম বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় নতুন অধ্যায়ের যাত্রা শুরু করেছে।

তিনি রাজবাড়ীর আমলী আদালতসমূহে প্রথমবারের মত তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে জেলা বারের কর্মকর্তাগণ ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের দক্ষতার সাথে অংশগ্রহণের প্রশংসা করেন। একইসাথে করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ ছুটির কারণে দীর্ঘদিন কারাগারে আটক থাকার পর এই আইনের সুফল হিসেবে ১৯ আসামীর জামিনের বিষয়টিও বর্তমান সরকারের কল্যাণমুখী চিন্তার একটি নজির বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এদিকে, রাজবাড়ীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পর বিজ্ঞ জেলা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করে জামিন শুনানী শুরুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এজন্য আইনজীবীদের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট আদালতের ই-মেইলে জামিন আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে।

এদিকে আদালত সূত্র জানিয়েছে, রাজবাড়ীজেলা জজ আদালতে শুনানীর জন্য ২৯ টি আবেদন জমা পড়েছে এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ৬ টি আবেদন জমা পড়েছে। এগুলো আগামী রবিবার শুনানী হতে পারে।

এ বিষয়ে, আসামীর অবিভাকরা বলেন- করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে সরকার ঘোষিত ছুটি ও অবকাশকালে শারীরিক উপস্থিতি ছাড়া তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার যে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার, তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। বর্তমান সময়ের মতো ভবিষ্যতের সকল সময় এমন পরিচালিত কার্যক্রম অব্যাহত থাকারও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।

উল্লেখ্য, করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশের অন্যান্য দপ্তরের মতো বিচার বিভাগের কার্যক্রমও বন্ধ থাকার প্রেক্ষিতে সরকারের আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় গত ৯ মে-২০২০ শনিবার ভার্চুয়াল আদালতের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর ফলে, আদালতে সংশ্লিষ্ট বাদি, বিবাদি, আইনজীবীদের শারীরিক উপস্থিতি ছাড়াই শুধুমাত্র ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে জরুরি বিচারগুলো সম্পন্ন করার সুযোগ সৃষ্টি হয়।

Comments

comments