অপসংস্কৃতি ভেঙে দৌলতদিয়ার আরেক যৌনকর্মীর জানাজা অনুষ্ঠিত
প্রকাশিত: ১১:৩০ অপরাহ্ণ ,২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | আপডেট: ১২:৪৫ অপরাহ্ণ ,২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
নিজস্ব প্রতিনিধি।। কুসংস্কার আর অপসংস্কৃতি ভেঙে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে দ্বিতীয়বারের মত এবার রিনা বেগম (৫৫) নামের আরেক যৌনকর্মীর জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। আগের ইমাম নয়, এবার গোয়ালন্দ থানা জামে মসজিদের ইমাম আবু বক্কর সিদ্দিক এ জানাযা নামাজ পড়ান।
রাজবাড়ী পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান পিপিএম বারের উদ্দ্যোগে ২০ ফেব্রুয়ারি-২০২০ বৃহস্পতিবার রাত ১০.টার দিকে দৌলতদিয়া পতীতাপল্লীর পাশে ওই যৌনকর্মীর এ জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে পল্লীর কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে যৌনকর্মী রিনা বেগম মারা যান। খবরটি রাজবাড়ীর পুলিশ সুপারের কানে গেলে তাৎক্ষণিক তিনি ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী ওই যৌনকর্মীর জানাজা নামাজ পড়ানোর উদ্যোগ নেন।
কিন্তু যৌনকর্মী বলে স্থানীয় কোনো ইমাম তার জানাজা পড়াতে রাজি হননি। তাই গোয়ালন্দ ঘাট থানা মসজিদের ইমামকে সঙ্গে নিয়ে তার জানাজা নামাজ পড়ানোর ব্যবস্থা করেন পুলিশ সুপার।এতে স্থানীয় বাসিন্দাসহ পল্লীর বাসিন্দাদের মধ্যে স্বস্তির দেখা মেলে।
স্থানীয়সূত্রে জানাযায়, যৌনকর্মী বা পতীতাপল্লীর বাসীন্দা বলে এদেরকে মৃত্যুর পর কোন ইমাম জানাযা পড়াতে রাজি হতো না। যার কারণে মৃত্যুর পর তাদেরকে কলসি বেঁধে পদ্মায় ডুবিয়ে অথবা মাটি চাপা দেওয়া হতো। সেই প্রচলিত কুসংস্কার আর অপসংস্কৃতি ভেঙে প্রথমবারের মতো চলতি মাসের ২ ফেব্রুয়ারি হামিদা বেগম নামে এক যৌনকর্মীর জানাজা পড়ানোর মাধ্যমে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান।
তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাতে দ্বিতীয়বারের মতো আরেকজনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফকির আব্দুল জব্বার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সালাহউদ্দিন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান ও দৌলতদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মণ্ডলসহ স্থানীয় এলাকাবাসী।
পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান বলেন- আল্লাহ সর্বশক্তিমান, আল্লাহ ক্ষমাশীল। একজন মানুষের শেষযাত্রায় সামাজিক কারণে যদি জানাজা না দেই, তাহলে মানুষ হিসেবে মানুষের প্রতি অবিচার করা হবে। সেই আলোকে প্রথম যৌনকর্মীর জানাজা শেষে আজ দ্বিতীয় যৌনকর্মীর জানাজার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকবে।