আজ : বৃহস্পতিবার, ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জেলা-উপজেলা-ইউনিয়ন পর্যন্ত কম্পিউটার ট্রেনিং দেয়া হয়েছে ও হচ্ছে


প্রতিবেদক
জনতার মেইল.ডটকম

প্রকাশিত: ২:৪২ অপরাহ্ণ ,২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ | আপডেট: ৯:৫০ অপরাহ্ণ ,২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯
জেলা-উপজেলা-ইউনিয়ন পর্যন্ত কম্পিউটার ট্রেনিং দেয়া হয়েছে ও হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার।। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি বাংলা সাহিত্যের ছাত্রী হলেও এখন আমি একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারের ‘মা’। এ দেশে কম্পিউটারের ব্যবহার বাড়াতে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে আমার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় আমাকে সহযোগিতা করেছে।

২৬ ফেব্রুয়ারি-১৯ মঙ্গলবার  দুপুরে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এন আর বি ইঞ্জিনিয়ার্সদের দু’দিনব্যাপী কনভেনশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেশে কম্পিউটারের ব্যবহার বাড়ানো প্রসঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) ও ব্রিজ-টু বাংলাদেশ (বিটুবি) যৌথভাবে কর্মসূচির আয়োজন করে।

পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ই আর ডি’র ভারপ্রাপ্ত সচিব মনোয়ার আহমেদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী। সূচনা বক্তব্য দেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মনোয়ার আহমেদ। এছাড়াও, বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের কনভেনর ব্রিজ-টু-বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আজাদুল হক।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগ অফিসে একটি কম্পিউটার কিনেছিলাম, তখন ওই কম্পিউটারে খরচ পড়েছিল ৩ লাখ টাকা। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে কম্পিউটারের ব্যবহার বাড়ানোর জন্য নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে ১০ হাজার কম্পিউটার ক্রয়ের বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছিল। তারা অর্ধেক খরচে আমাদের কম্পিউটার দিতে চাইলেন। কিন্তু ইতোমধ্যে ক্ষমতার পরিবর্তন হলো।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার কাছে কে যেন বলেছে, এটা নেদারল্যান্ডসের টিউলিপ কোম্পানি থেকে কেনা। ওই কোম্পানি শেখ রেহানার মেয়ের নামে- এ কথা শুনে খালেদা জিয়া প্রকল্পটি বাতিল করে দেন। ফলে আমাদের অনেক অর্থও লোকসান হয়েছে। এছাড়া তারা (বিএনপি) সাবমেরিন ক্যাবলের সংযোগ থেকেও বাংলাদেশকে বঞ্চিত করেছে। প্রযুক্তি সম্পর্কে না জানার কারণে বাংলাদেশকে তারা বারবার পিছিয়ে দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশে কম্পিউটারের ওপর থেকে ট্যাক্স প্রত্যাহার করে এর ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। জেলা-উপজেলা এমনকি থানা-ইউনিয়ন পর্যন্ত ট্রেনিং দেয়া হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ এখন কম্পিউটারে চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে। এছাড়া আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে-মেয়েরাও এখন অর্থ উপার্জন করছে। বাংলাদেশ এখন হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, যারা একসময় অক্ষর চিনতো না মোবাইল ব্যবহারের ফলে অনেকে বাধ্য হয়ে অক্ষর শিখেছে, পড়াও শিখেছে। মোবাইলে বাংলায় মেসেজ এলে তারা পড়তে পারে। এভাবে দেশে অক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে। আমাদের এমন উদ্যোগের ফলেই একসময় টেবিলে সাজানো থাকা কম্পিউটারে কাজ শুরু হয়েছে। কম্পিউটার নিয়ে আমাদের ব্যাপক পরিকল্পনা রয়েছে। এজন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে হাইটেক পার্ক করা হচ্ছে। বর্তমান যুগকে প্রযুক্তি, বিজ্ঞান ও গবেষণার যুগ হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারা সরকার গবেষণার মধ্য দিয়ে দেশকে উন্নত করে চলেছে।

তিনি বলেছেন, ‘স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে বাংলাদেশে যখন এসেছি তখন একটাই চিন্তা ছিল জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ নির্মাণ করা। এটাকেই আমি কর্তব্য হিসাবে নিয়েছি। এখানে কোনো ব্যক্তিস্বার্থ ও ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া নেই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন তো ইন্টারনেট যুগে সকলের সঙ্গে যোগাযোগ আছে। আজকে আমি আনন্দিত, আপনারা প্রবাসীরা বাংলাদেশের কথা চিন্তা করছেন। আমাদের চিন্তার সাথে তাল মিলিয়ে আপনারা কতগুলো প্রস্তাবনা নিয়ে এসেছেন। আসলে বর্তমান যুগটা হচ্ছে প্রযুক্তির যুগ। বিজ্ঞানের যুগ, গবেষণার যুগ। আর সেই গবেষণার মধ্য দিয়ে আমরা পারি দেশকে উন্নত করতে সেটাও প্রমাণ করেছি।

‘আপনারা যে পলিসি লেভেল চ্যালেঞ্জ ও ইনস্টিটিউশনাল লেভেল চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করেছেন। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশকে আরও সমৃদ্ধশালী, উন্নত করা যায় সেটা আপনারা দেখবেন,’ অনাবাসী প্রকৌশলীদের উদ্দেশে বলে শেখ হাসিনা। আপনাদের যেকোনো উদ্যোগ বাংলাদেশের উন্নয়নকে আরও ত্বরান্বিত করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

২০৭১ সালে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠার শতবার্ষিকী উদযাপন করবো। ২০২০ সালে জাতির পিতা জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করবো। তিনি আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। এই বাংলাদেশ একটা ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হবে, এটা আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। হয়ত আমরা থাকবো না। কিন্তু প্রজন্মের পর প্রজন্ম আসবে তারা একটা সুন্দর সমাজ পাবে, সুন্দর দেশ পাবে, সুন্দরভাবে বাঁচতে পারবে এবং উন্নত জীবন পাবে। আমাদের যে মেধা সেই মেধা বিকাশের সুযোগ পাবে।

Comments

comments