আজ : রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীর খানখানাপুরে চাঞ্চল্যকর রকি হত্যার ২ আসামী দু’টি পিস্তলসহ গ্রেফতার


প্রতিবেদক
জনতার মেইল.ডটকম

প্রকাশিত: ৪:২৬ অপরাহ্ণ ,১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ | আপডেট: ১:০৮ পূর্বাহ্ণ ,১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২
রাজবাড়ীর খানখানাপুরে চাঞ্চল্যকর রকি হত্যার ২ আসামী দু’টি পিস্তলসহ গ্রেফতার

স্টাফ রিপার্টার।। গত ১০/৯/২২ তারিখে রাজবাড়ীর খানখানাপুরে চাঞ্চল্যকর আরিফুল ইসলাম রকি(২৯) হত্যা মামলার ২ আসামিকে গ্রেফতার করেছে রাজবাড়ী থানা পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দুটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, পাঁচটি গুলির খোসা ও একটি রবারের মুখোশ উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- রাজবাড়ী জেলা সদরের চর খানখানাপুর গ্রামের মোঃ নজরুল ইসলামের ছেলে সৌরভ আহম্মেদ শাওন(২০) এবং কুষ্টিয়া জেলা সদরের দহকুলা গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে মোঃ ইয়ামিন আলী(২২)।

সোমবার (১২ই সেপ্টেম্বর-২২) বেলা ১২,টায় রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান তার নিজ কার্য্যালয়ের কনফারেন্স কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

পুলিশ সুপার জানান; গত ১০/০৯/২০২২ তারিখ বিকেল সাড়ে ৫ ঘটিকায় রাজবাড়ী থানাধীন খানখানাপুর ইউপিস্থ সুরাজ মোহিনী ইনস্টিটিউট স্কুল এন্ড কলেজের সামেনে দুটি মোটরসাইকেল যোগে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী জনৈক আরিফুল ইসলাম রকি(২৯) কে হত্যার উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা গুলি করে, ফলে ঘটনাস্থলে আরিফুল ইসলাম রকি লুটিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন ভিকটিমকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন।

এ ঘটনায়, মৃত আরিফুল ইসলাম রকির বাবা রাজবাড়ী জেলা সদরের খানখানাপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সরদারপাড়া গ্রামের আবদুর রাজ্জাক শেখ বাদী হয়ে ১৬ জনকে আসামি করে রাজবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

ওই হত্যা সংঘটিত হওয়ার পর হতে খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে রাজবাড়ী থানা পুলিশ হত্যা কান্ডে প্রত্যেক্ষভাবে জড়িত ২ আসামী মোঃ রাকিব শেখ ও মোঃ ইয়ামিন আলী গ্রেফতার করেন। এ সময় গ্রেফতারকৃতদের নিকট থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ২ টি বিদেশী পিস্তল ও ৫ টি কার্তুজের খোসা এবং ২ টি কার্তুজের মাথার অংশ উদ্ধারসহ জব্দ করেন।

বর্ণিত ঘটনায় রাজবাড়ী সদর থানায় হত্যা ও অস্ত্র আইনের ২টি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়। যাহা রাজবাড়ী থানার মামলা নং-১৭ তারিখ-১১/০৯/২০২২ইং, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড। এবং মামলা নং- ১৯ তাং- ১১/০৯/২০২২খ্রিঃ, ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯ (ক) ধারা।

এই ঘটনায় জড়িত সংশ্লিষ্ট সকল আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে মামলার সুষ্ঠু তদন্ত সম্পন্ন করে। তদন্ত ফলাফল বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

পুলিশ সুপার আরও জানান, এলাকায় বেশ কিছু দিন ধরে বিএনপি’র দুটি গ্রুপ আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছিলো। নিহত রকিবের সঙ্গে ৫ মাস আগে রাকিব, ইয়ামিনদের মারামারির ঘটনা ঘটেছিল। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের পাল্টা-পাল্টি মামলা হয়। ওই মামলায় নিহত ছাত্রদল কর্মী রকি এতো দিন কারাগারে ছিলো। সাম্প্রতি জামিন পেয়ে এলাকায় ফিরে আসার পর ফের উত্তেজনা দেখা দেয়। ওই ঘটনার রেস ধরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে গ্রেফতারকৃত আসামিরা স্বীকার করেছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে- রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সালাহউদ্দিন, মো. মাইনউদ্দিন চৌধুরী, মোঃ শাহনেওয়াজ, ডিআইও ওয়ান মোঃ সাইদুজ্জামান সহ জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ঘটনার পরমূহুর্তে দোকানদার মির্জা ফয়সাল জানান- সন্ধ্যার আধাঘন্টা আগে আরিফুল ইসলাম রকি তার বন্ধু শিশির, এখলাস ও হামজু সহ ৫/৬ জন আমার দোকানে এসে কফি’র অর্ডার দিয়েছিল, আমি কফি তৈরি করছিলাম, ৫/৭ মিনিট পর খানখানাপুরের বাজারের দিক থেকে ২ টি মটরসাইকেল যোগে ৪ জন এসে ২ বাইক থেকে দু’জন নেমে রকি কে গুলি করে দূ্র্বৃত্তরা রসুলপুরের দিকে চলে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রকি কিছুদিন আগে শামিম গ্রুপের এক কর্মীকে হাতের কব্জি কেটে ফেলেন। সেই ঘটনার এজাহারনামীয় আসামি আরিফুল ইসলাম রকি এতদিন জেল হাজতে আটক ছিল। বর্তমানে রকিজামিনে থাকায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এই সূত্র ধরে আজ এ গুলির ঘটনা ঘটতে পারে।

Comments

comments