আজ : শুক্রবার, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অতিদরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসুচীর আওতায় মুলঘরে ৬০ দিনের কর্মসুচীর প্রকল্পে অনিয়ম! পর্ব-১।


প্রতিবেদক
জনতার মেইল.ডটকম

প্রকাশিত: ৬:৪১ অপরাহ্ণ ,১১ জুন, ২০২২ | আপডেট: ১২:১২ পূর্বাহ্ণ ,১৪ জুন, ২০২২
অতিদরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসুচীর আওতায় মুলঘরে ৬০ দিনের কর্মসুচীর প্রকল্পে অনিয়ম! পর্ব-১।

বিধান কুমার।। গ্রামীন অবকাঠামোর উন্নয়নের জন্য গ্রামীন জনগোষ্ঠীর মধ্য থেকে হতদরিদ্র পরিবারের সদস্য ও অতিদরিদ্রদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি গ্রামীন অবকাঠামোর মান সমুন্নত রাখার জন্য সরকার ৪০ দিনের কর্মসুচী বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। উপজেলার সার্বিক তত্বাবধানে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্যগণ প্রকল্পের (পিআইসি) সভাপতি হয়ে নির্দিষ্ট সংখ্যক জনবল দেখিয়ে কাজ নেন। কাজ পেয়েই সল্প-সংখ্যক জনবল দিয়ে কাজ করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।
এরই ধারাবাহিকতায় রাজবাড়ী জেলা সদরের মুলঘর ইউনিয়নে ২ টি প্রকল্পে ৫৯ জন জনবল দিয়ে কাজ করার জন্য ১ম পর্যায়ে ৯ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা ও ২য় পর্যায়ে ৪ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা সহ সর্বোমোট ১৪ লক্ষ ১৬ হাজার টাকার কাজ পান। এতে অনুসন্ধানে ১ম ও ২য় পর্যায়ে অতিদরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসুচীর আওতায় (মাটির রাস্তা নির্মান) কাজে অধিক জনবল দেখিয়ে সল্প জনবল দিয়ে কাজ করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ সহ ব্যাপক অনিয়মের চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। ইতিপূর্বে ৪০ দিনের কর্মসুচীতে ১৪ জন জনবল কম দিয়ে কাজ করিয়ে তাদের দৈনিক পারশ্রমিক মূলঘরের দূর্ণীতিবাজ চেয়ারম্যান ওহিদুজ্জামান, ইউপি সদস্য হান্নান ও আসাদুর মেম্বার ২ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে।
৬ই জুন-২২ সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অতিদরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসুচীর আওতায় ১ম পর্যায় ও ২য় পর্যায়ে ৫৯ জন জনবল দিয়ে ৪০ দিনের ও ২০ দিনের কর্মসুচীতে কাজ করার কথা থাকলেও ৩৫ জন জনবল পাওয়া যায় সরেজমিনে। পরিষদের ৬ জন গ্রাম পুলিশ সহ এটুআইয়ের উদোক্তার নামও রয়েছে শ্রমিক তালিকায়। এবং কি, কাজে নিয়জিত জুলেখা ও আকব্বর প্রামানীক নামের দুই জন “শ্রমিকদের বক্তব্য অনুসারে” তারা বলেন আমরা ৪০ দিনের কর্মসুচীতে ২০ জন করে কাজ করেছি বর্তমানেও ২০ জন করে কাজ করে যাচ্ছি। এর আগে চেয়ারম্যান ২ হাজার করে টাকা নিয়েছেন তাও কিছু লোককে ফেরত দিয়েছেন। “তাদের বক্তব্য অনুসারে” ২ প্রকল্পে ২০+২০ জন সহ ৪০ জন জনবল দিয়ে কাজ করছে মুলঘর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও পিআইসি মেম্বারগণ। কিন্তু পাওয়া যায় মাত্র ৩৫ জন।
২য় পর্যায়ের ২০ দিনের প্রকল্পের বাঘিয়া ঝিনেদা ৩০ জন জনবল দিয়ে কাজ করার কথা থাকলেও সরেজমিনে পাওয়া যায় ১৬ জন। ২ নং প্রকল্পে ২৯ জন জনবলের মধ্যে ১৭ জন জনবল পাওয়া যায়। যেখানে ১৪ জন জনবল কম দিয়ে কাজ করার ব্যাপক অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ারম্যানকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই ও মেম্বারগণ এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে অস্বীকার করেন। ইউপি সচিব এ প্রতিবেদককে জানান, আমি মুলঘর ইউনিয়ন ছাড়াও অন্য ইউনিয়নে অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছি। তবে মুলঘরে অনিয়ম হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। তবে গ্রাম পুলিশের যে লিস্ট দেখেছেন এ টা খসড়া তালিকা। বর্তমান তালিকায় নাম নেই। আমর কাছে কাজে জনবল কম তারও কোন অভিযোগ পাইনিই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।
এ বিষয়ে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মার্জিয়া সুলতানা জনতার মেইল এর প্রতিবেদককে জানান, আমি শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ বাস্তবায়ন করার জন্য চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের বলেছি। যেখানে অনিয়মের বিষয়ে শুনেছি সেখানেই আইনানুগ ব্যাবস্থাও গ্রহন করা হয়েছে। এরপরেও যদি অনিয়ম করে থাকে তাহলে কঠোর আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। আমি চাই শতভাগ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতার মাধ্যমে কাজ বাস্তবায়ন করতে। তাতে দূর্ণীতি মুক্ত ও শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের জন্য এতটুকু কারু-কৃর্পণতা করবো না।
এ বিষয়ে, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাহাবুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান- কাজে অল্প জনবল দিয়ে কাজ করার বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনিই। তবে, এ রকম কাজ করার কোন বিধান নেই। যদি কোন ইউনিয়নে অনিয়ম হয়ে থাকে প্রমান পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Comments

comments