আজ : শুক্রবার, ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেবা না দিলে ডাক্তার ও নার্সদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে; প্রধানমন্ত্রী


প্রতিবেদক
জনতার মেইল.ডটকম

প্রকাশিত: ৩:১৩ অপরাহ্ণ ,২৭ জানুয়ারি, ২০১৯ | আপডেট: ১১:৩৩ অপরাহ্ণ ,২৭ জানুয়ারি, ২০১৯
সেবা না দিলে ডাক্তার ও নার্সদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে; প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার।। কর্মস্থলে না থাকলে এবং সেবা না দিলে চিকিৎসক ও নার্সদের ওএসডি করে রাখতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রয়োজনে তাদের চূড়ান্তভাবে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ারও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

২৭ জানুয়ারি-১৯ রবিবার সচিবালয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে এ নির্দেশনা দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সব জেলায় সার্ভে করে দেখবেন। কতো রোগী সেখানে যাচ্ছেন, ডাক্তাররা সেখানে থাকছেন না কেন? যেসব ডাক্তারকে সেখানে বদলি করা হয়, তারা যদি কাজ না করেন ওএসডি করে রেখে দিতে হবে, তাদের দরকার নেই। নতুন ডাক্তার দিতে হবে। এটা করতে হবে-স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের।
তিনি বলেন- দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, নার্সদের ব্যাপারে, তাদের সম্মান দিয়েছি, রোগীর সেবাটা তাদের করতে হবে, এটা বাধ্যতামূলক। না করলে সে চাকরিতে থাকবে না, সে চলে যাবে। অনেক প্রাইভেট জায়গা আছে, কাজের অসুবিধা হবে না। আমরা আবার নতুনদের ট্রেনিং করিয়ে নিয়ে আসবো। লোকেরও অসুবিধা নেই আমাদের।

সব সরকারি হাসপাতালে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করে চিকিৎসকদের হাসপাতালে উপস্থিতি নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

শুধু ওষুধ খাওয়ানোর জন্য তো নার্স না, নার্সদের রোগীর সেবা করতে হবে বলে- নার্সদের সর্তক করে শেখ হাসিনা বলেন, এই মাত্র আমি যে কথাটা শুনলাম সেটি সত্যি অত্যন্ত দুঃখজনক যে তারা দ্বিতীয় শ্রেণি পেয়ে চাকরি পেলো বলে রোগীদের সেবা দেবে না। এটা তো তাদের কাজ না। যারা এই ধরনের মানসিকতা নিয়ে আসবে তাদের তো চাকরিতে থাকারই প্রয়োজন নেই।

এসময় প্রধানমন্ত্রী দ্রুত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নার্সদের কর্মপরিধি আরো সুনির্দিষ্ট করার তাগিদ দেন।

চিকিৎসকদের দুই বছরের ইন্টার্নশিপ চালু করার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসকদের দুই বছর ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করতে হবে। এর মধ্যে এক বছর থাকতে হবে উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে।

চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ডাক্তাররা সব সময় প্রাইভেট চিকিৎসা দিতে পছন্দ করেন। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে ডাক্তাররা যতদিন সরকারি চাকরি করেন ততদিন প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারেন না।

সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সুযোগ তৈরি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা সিঙ্গাপুরে যাবেন, সেখানে ডাক্তারদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সে ধরনের একটি সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।

জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সুযোগ তৈরির চিন্তার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা অন্যান্য জেলা হাসপাতালগুলোতেও এটা করে দিতে পারি। আলাদা একটা উইং করে সন্ধ্যার পর ওখানে প্রাইভেট প্রাকটিসের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। অথবা যারা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করবেন না তাদের জন্য প্রণোদনারও ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

সরকারি হাসপাতালের ডিউটির বাইরে চিকিৎসকদের রাত জেগে প্রাইভেট প্র্যাকটিস প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাসপাতালে রোগী দেখার পর প্রাইভেট হাসপাতালে রাত ১২.টা/১.টা/২.টা পর্যন্ত নাকি কেউ কেউ অপারেশন করেন। যে ডাক্তার রাতভর অপারেশন করবেন সে সকাল ৮.টার সময় এসে রোগী দেখবেন কী করে। তার মেজাজ তো এমনিতেই খিটখিটে থাকবে। কাজেই এটা যাতে না হয় সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া দরকার। এ বিষয়ে নজর দিতে বলবো।

যত্রতত্র অনেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপনে আগ্রহের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মেডিকেল কলেজ অনেক বেশি হয়ে যাচ্ছে। আমরা বাঙালিরা হুজুগে মাতি, যে জায়গায় যাই, সেখানেই একটি মেডিকেল কলেজ দরকার।

মেডিকেল কলেজগুলো নিয়ে সার্ভে করতে মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সব জেলায় করা মেডিকেল কলেজ কী অবস্থায় আছে সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের একটি সার্ভে করা উচিত। কতজন শিক্ষার্থী, কতজন শিক্ষক, শিক্ষার কী কী সুযোগ আছে তা দেখা দরকার।

বেসরকারি মেডিকেল কলেজে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বেসরকারি মেডিকেল কলেজের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। তারা যেন সঠিক শিক্ষা নিয়ে চিকিৎসক হন, সেজন্য মনিটরিং বাড়াতে হবে।

নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।

Comments

comments