ডিজিটাল আইন সংশোধনের দাবিতে সম্পাদক পরিষদের মানববন্ধন
প্রকাশিত: ৪:৫৭ অপরাহ্ণ ,১৬ অক্টোবর, ২০১৮ | আপডেট: ৪:৫৭ অপরাহ্ণ ,১৬ অক্টোবর, ২০১৮
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী উল্লেখ করে, আগামী জাতীয় সংসদ অধিবেশনেই আইনটি সংশোধন করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও স্বাধীন সাংবাদিকতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে সম্পাদক পরিষদ।
১৫ অক্টোবর-১৮ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্পাদক পরিষদের ডাকা মানববন্ধনে লিখিত বিবৃতি পাঠ করেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম।
বিবৃতিতে মাহফুজ আনাম বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০০৮’ পাশ হওয়ার আগে থেকেই এই আইনটির বিভিন্ন ধারা নিয়ে আমরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলাম। এই আইনটি স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মুক্ত গণমাধ্যমের পরিপন্থী।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরোধী নয়, তবে বর্তমান আইন শুধু সাইবার জগৎ নয়, স্বাধীন গণমাধ্যমের ও পরিপন্থী।’
মানববন্ধনে সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে সাত দফা দাবি পেশ করা হয়। দাবিগুলো হল,
১. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩, ৫৩ ধারা অবশ্যই যথাযথভাবে সংশোধন করতে হবে।
২. এসব সংশোধনী বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশনে আনতে হবে।
৩. পুলিশ বা অন্য কোনো সংস্থার মাধ্যমে কোনো সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালানোর ক্ষেত্রে তাদেরকে শুধু নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু আটকে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া যাবে। কিন্তু কোনো কম্পিউটারের ব্যবহার বন্ধ করার অনুমতি দেওয়া যাবে না। তারা শুধু তখনই প্রকাশের বিষয়বস্তু আটকাতে পারবে, যখন সংশ্লিষ্ট সংবাদ প্রতিষ্ঠানের সম্পদকের সঙ্গে আলোচনা করে কোনো ওই বিষয়বস্তু আটকে যাওয়া উচিৎ সে বিষয়ে যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে পারবে।
৪. কোনো সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের কোনো কম্পিউটার ব্যবস্থা আটকে দেওয়া বা জব্দ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আদালতের আগাম নির্দেশ নিতে হবে।
৫. সংবাদমাধ্যেমের পেশাজীবীদের সাংবাদিকতার দায়িত্বের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধের ক্ষেত্রে প্রথমেই আদালতে হাজির হওয়ার জন্য তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করতে হবে। এবং সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীদের কোনো অবস্থাতেই পরোয়ানা ছাড়া ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ ছাড়া আটক বা গ্রেফতার করা যাবে না।
৬. সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবী দ্বারা সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরে গ্রহণযোগ্যতা আছে কি-না তার প্রাথমিক তদন্ত প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যম করা উচিৎ। এই লক্ষ্যে প্রেস কাউন্সিলকে যথাযথভাবে শক্তিশালী করা যেতে পারে।
৭. এই সরকারের পাশ করা তথ্য অধিকার আইনকে দ্ব্যর্থহীনভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ওপর প্রাধান্য দেওয়া উচিৎ। এই আইনে নাগরিক ও সংবাদমাধ্যমের জন্য যেসব স্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, সেগুলোর সুরক্ষা অত্যাবশ্যক।