আজ : শুক্রবার, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অ-ব্যবস্থাপনায় ধ্বংসের মুখে সূর্য্যনগর ও বেলগাছি রেলওয়ে ষ্টেশন, রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে বেহাত ও নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান সম্পদ।


প্রতিবেদক
জনতার মেইল.ডটকম

প্রকাশিত: ৮:১৫ অপরাহ্ণ ,৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ | আপডেট: ৮:১৫ অপরাহ্ণ ,৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১
অ-ব্যবস্থাপনায় ধ্বংসের মুখে সূর্য্যনগর ও বেলগাছি রেলওয়ে ষ্টেশন, রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে বেহাত ও নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান সম্পদ।

বিধান কুমার।।  রাজবাড়ী জেলার ঐতিয্যবাহী সূর্য্যনগর ও বেলগাছি রেলওয়ে ষ্টেশন দুটিতে দীর্ঘদিন অব্যবস্থাপনা ও রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে নষ্ট হচ্ছে ষ্টেশন ঘর আসবাবপত্র সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকার কারনে প্রতিনিয়ত চুরি হচ্ছে প্রয়োজনীয় সামগ্রী। ভেঙ্গে ও খষে পড়ছে দরজা জানালা আসবাবপত্র সহ মূল কাঠামো। জরাজীর্ন দেয়ালে ফাটল, শ্যাওলা, পরজীবী উদ্ভিদ বেষ্টিত ভবন জীর্ণশীর্ণ হয়ে পরছে। নোংড়া-আবর্জনা, গুল্ম-ঘাস বেষ্টিত দেয়াল ও চারিপাশ ব্যবহার অনুপযোগী পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
ষ্টেশনে গরু-ছাগল ঘুরে বেড়াচ্ছে, ঘাস খাচ্ছে, গোবর ও মল ত্যাগ করছে। যেন পশুপালনের চারন ক্ষেত্রে পরিনত হয়েছে। ফলে ক্রমেই ব্যবহার অনুপযোগী ষ্টেশনে পরিনত হচ্ছে। যেহেতু দিনে ২/১ টি ট্রেন ষ্টেশন দুটিতে থামছে এবং যাত্রী উঠানামা করছে, সেহেতু যাত্রী সাধারন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ষ্টেশন ব্যাবহার করতে বাধ্য হচ্ছে। ঝড়-বৃষ্টিতে ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। অতিসম্প্রতি সরেজমিনে দেখে এসে তথ্য ও ছবিতে প্রতিবেদনঃ জগতী টু কোলকাতা ১৮৬২ সাল থেকে বাংলায় রেল চলাচলের ইতিহাস বর্ণিল সময় পার করে আসছিল। স্বাধীনতার পর দেশে সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলেও, রাজবাড়ী জেলার বর্তমান রেল যোগাযোগ ব্যাবস্থা অত্যন্ত নাজুক।
রাজবাড়ী জেলায় মোট ১৪টি রেলওয়ে ষ্টেশনের মধ্যে অনেকগুলোতেই ষ্টেশন মাষ্টারসহ প্রয়োজনীয় লোকবল নাই। তন্মধ্যে বেলগাছি ও সূর্য্যনগর রেলওয়ে ষ্টেশন দুটি অবকাঠামোগত অ-ব্যবস্থাপনা, রক্ষনাবেক্ষনের লোকের অভাব, এবং অবহেলায় ভেঙ্গে যাচ্ছে ষ্টেশন ভবন, নষ্ট ও লোপাট হচ্ছে সরকারী স্থাপনা ও আসবাবপত্র। এভাবে চলতে থাকলে কিছুদিন পর এর অবশিষ্ট অংশটুকুও আর দৃষ্টিতে আসবে না। রাজবাড়ীতে রেল যোগাযোগের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও ট্রেনের অপ্রতুলতা ও সঠিক ব্যবস্থাপনায় অভাবে সে সুযোগ থেকে বঞ্চিতই থেকে গেছে যাত্রী সাধারন। এতে রাজস্ব আয়ের একটি সুয়োগ হারাচ্ছে সরকার। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায় ২০০৭ সালের দিকে ষ্টেশন দুটিতে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। কার্যক্রম পুনরায় চালু করতে কর্তৃপক্ষের কোন উদ্যোগ দেখতে পাওয়া যায়নি বলে তারা আক্ষেপ প্রকাশ করেন।
সূর্য্যনগর রেলওয়ে ষ্টেশনের পোর্টার আব্দুল খালেক এ প্রতিবেদককে বলেন, এই ষ্টেশন বর্তমানে খুবই খারাপ অবস্থায় আছে। ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির সময় ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন, দিনের বেলায়ও অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে। মূল্যবান সম্পদ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখানে থাকার কোন পরিবেশ নাই। আমি এখানে থাকি ঝড়-বৃষ্টিতে কখন যে ভেঙ্গে মাথার উপরে পড়ে তার ঠিক নাই। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও নেতৃবৃন্দের কাছে ৪ হাজার স্বাক্ষর সম্বলিত কয়েকবার গনপিটিশন দিয়েও কোন সুরাহা হয়নি। ষ্টেশন ঘরের দরজা জানালা ভাঙ্গা থাকার কারনে প্রতিনিয়ত প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ও আসবাবপত্র চুরি হচ্ছে। তিনি ঝর-বৃষ্টিতে ঝুকিপূর্ণ ভবন ধসে জানমালের ক্ষতির আশংকা করছেন। এই ষ্টেশনের কোন প্লাটফরম নাই। বাদুরঝুলা হয়ে যাত্রীদের ট্রেনে উঠা-নামা করতে হচ্ছে। মহিলা যাত্রীদেরও করুন অবস্থা। তিনি সূর্য্যনগর ষ্টেশনটি সচল করে যাত্রীদের দূর্দশা লাঘবে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
বেলগাছির এক স্থানীয় বসিন্দা জানান, আগে এখানে ষ্টেশন মাষ্টার ছিল এবং ঐতিহ্যবাহী ও জাকজমকপূর্ণ ষ্টেশন হিসেবে পরিচিতি ছিল। ষ্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সবকিছু নষ্ট ও চুরি হয়ে যাচ্ছে। দেখার কেউ নাই।
রাজবাড়ী রেলওয়ে জুনিয়র ট্রাফিক ইন্সপেক্টর(JTI) শফিকুর রহমান এবং রাজবাড়ী জেলা রেলওয়ে সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী গৌতম বিশ্বাস এর সাথে যোগাযোগ করলে, তারা তদন্ত করে দেখবেন বলে জানান।

Comments

comments