আজ : শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীর খানখানাপুরে সেতু নির্মাণ কাজে অনিয়ম; ঠিকাদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ


প্রতিবেদক
জনতার মেইল.ডটকম

প্রকাশিত: ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ ,৮ এপ্রিল, ২০২০ | আপডেট: ১২:৪২ পূর্বাহ্ণ ,৯ এপ্রিল, ২০২০
রাজবাড়ীর খানখানাপুরে সেতু নির্মাণ কাজে অনিয়ম; ঠিকাদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

মোঃ আলমাস আলী।। রাজবাড়ী জেলা সদরের খানখানাপুর ইউনিয়নের ব্যাপারী পাড়া খালের উপর নির্মিত দূর্যোগ ব্যবস্থানা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক সেতু নির্মাণ কাজে অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

নির্ন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার ও সিডিউল বর্হিভূত নির্মাণ কাজ করার অভিযোগে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর বাধার পেক্ষিতে সেতু নির্মাণ কাজ আপাতত বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীসূত্রে জানা যায়, নির্ম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে সিডিউল বহির্ভূতভাবে দরপত্রের শর্ত ভঙ্গ করে কাজ করায় স্থানীয়রা বাধা দেয়। এ বিষয়ে এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট প্রকল্প কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের নিকট ফোনের মাধ্যমে অভিযোগ করেন। অভিযোগের সত্যতার ফলে ঠিকাদারকে কাজ বন্ধ রাখার জন্য নোটিশ প্রদান করা হয়। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার আপাতত কোন প্রকার নির্মাণ কাজ করতে পারবেন না মর্মে প্রকল্প কর্মকর্তা জনতার মেইল.কমের এ প্রতিনিধিকে জানায়। করোনা ভাইরাসের কারনে সরকার ছুটি ঘোষনা করেন। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারের অনুউপস্থিতে অতি সকাল এবং সন্ধা কালিন সময়ে ঢালাইয়ের কাজ শুরু করেন। রাতের আধারে নির্ন্মমানের কাজ করায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়। ফলে গত ৪ এপ্রিল-২০২০ ঠিকাদার এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েন।

সাব-কন্ট্রাক্টার আসাদ সুত্রে জানা যায়, সেতুটির প্রাক্কলপিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ লক্ষ টাকা।কাজটি ঠিকাকা টিটু কাজী। তবে সেতু নির্মাণের কাজটি বাস্তবায়ন করছেন আসাদ নামক সাবঠিকাদার। তিনি স্থানীয় প্রভাবশালীদের শক্তিতে ক্ষমতাবান।তিনি  কোনো প্রকার সিডিউল অনুসরণ না করে নিয়ম বর্হির্ভূত দায়সারাভাবে কাজ করছেন। নির্ন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে সেতু নির্মাণের কাজ করায় স্থানীয়রা কাজে বাধা দেন।

নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন- সেতু নির্মাণ কাজের অনিয়ম-দুর্নীতির বাধা দেওয়ার ফলে ঠিকাদার গোপনে তাদের নাম তালিকাভূক্ত করে পুলিশের নিকট দিয়েছেন।

জানা যায়, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের অধীনে রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের ব্যাপারী পাড়া গ্রামের ব্যাপারী বাড়ী সংলগ্ন খালে ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান টিটু কাজী এর সাব ঠিকাদার আসাদ।

অভিযোগ রয়েছে, এ ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের সাথে কাজের অংশদারীত্ব রয়েছেন উপজেলার দাফিত্বপ্রাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মনোয়ার হোসেন।

শুরুতেই সেতু নির্মাণের জন্য নির্ম্নমানের সামগ্রী সংগ্রহ করে এ ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের সাব-কন্ট্রাক্টার আসাদ। এ নিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার নিকট  অভিযোগ করলেও অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়নী বলে উপস্থিত এলাকাবাসী দাবী করেন।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অনুউপস্থিতে সেতুটির ব্যাচ ঢালাইয়ের নীচে সাড়ে তিন ফুট চওড়া ২৪ ফুট লম্বা কাটাপ ওয়াল না করেই  দুই পাশের ইউং ওয়ালে ২১টি রডের স্থলে ১৫টি রড, ভাটিক্যাল অথ্যাৎ এ্যাপাটম্যান্ট ওয়ালে ৩৩টি রডের স্থলে ২৭টি রড, সিলেকশন বালুর পরিবর্ততে সাদা বালু ব্যবহার করে ব্রীজ  ঢালাইয়ের কাজ করা হচ্ছে। কাজের সাইডে কাজের বিষয়াদি সম্বলিত কোন সাইন র্বোড দেওয়া হয়নাই। করা হয় নাই কোন বাইপাস সড়ক।

এই ধরনের ফাঁকি-ঝুকির কাজ  না করার জন্য সাব-ঠিকাদারকে অনুরোধ জানান স্থানীয়রা। কিন্ত সাব-কন্ট্রাক্টার আসাদ উল্টো এলাকাবাসীকে ধমক দিয়ে বলেন, এই নিয়মেই ব্রীজ নির্মাণ করা হবে। যারা বাধা দিতে আসবেন সবাইকে পুলিশ দিয়ে জেলের ভাত খাওয়ানো হবে। এরপর থেকে ব্রীজের ঢালাই কাজের সময় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাতো দুরের থাক, সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরের কোন ব্যাক্তিকেই অত্র এলাকায় আর দেখা যাচেছ না বলে এলাকাবাসী দাবী করেন। এই ব্যাপারে মোবাইল ফোনে  সাব-কন্ট্রাক্টার আসাদ এর সাথে অনিয়মের বিষয়াদি নিয়ে জানতে চাইলে, ব্রীজ নির্মাণে রড কম দেওয়া, সিলেকশন বালুর পরির্বতে সাদা বালু ব্যবহারের কথা তিনি স্বীকার করেন।

বিষয়টি জানতে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার বিজয় পরামানিকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে, প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) ঐ ব্রীজটির কাজ দেখবল করেন। পিআইও সাহেবের সাথে ব্রীজ নির্মাণ কাজের বিষয়াদি নিয়ে কথা বলার জন্য তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন।

অপরদিকে, প্রকল্প কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেনের মুঠো ফোনে ব্রীজ নির্মাণ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্টান সাথে ব্যবসায়ীক পাটনারশীফ হিসাবে  তিনি জড়িত রয়েছেন কি-না জানতে চাইলে, তিনি অস্বীকার করেন। ব্রীজটির কাজ তদারকী করেন কে ? উত্তরে : ওর্য়াক  এ্যাসিষ্ট্রেন্ড, ইঞ্জিনিয়ার বিজয় বাবুসহ আমরা সকলেই তদারকী করছি বলে জানান। নির্মাণ কাজে অনিয়ম-দূর্নীতি হচ্ছে কি-না ? উত্তরে, আজ ৭ই এপ্রিল ইংরাজী তারিখ কাজ বন্ধের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। প্রশ্নঃ কাজটি এখনো চলমান ? উত্তরে, ঠিকাদার এখনো নোটিশটি রিসিভ করেন নাই, তবে ঠিকাদারকে ফোন করছি বলে তিনি ফোন লাইনটি কেটে দেন।

Comments

comments