আজ : শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীতে চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট সকলের অবহেলায় মৃত্যু ঘটলো ২য় শ্রেনীর ছাত্রের


প্রতিবেদক
জনতার মেইল.ডটকম

প্রকাশিত: ৯:৫০ পূর্বাহ্ণ ,৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ | আপডেট: ১:৫১ পূর্বাহ্ণ ,২ অক্টোবর, ২০১৮
রাজবাড়ীতে চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট সকলের অবহেলায় মৃত্যু ঘটলো ২য় শ্রেনীর ছাত্রের

রাজবাড়ী প্রতিনিধি।।স্কুল কতৃপক্ষের না জানিয়ে ওয়ার্কশপ কতৃপক্ষ কতৃক অসাবধানতার সঙ্গে রাখা লোহার তৈরী স্কুলের নতুন স্লিপার খেলনার নিচে পড়ে ২য় শ্রনীর ছাত্র অলিম শেখ (৭) প্রথমে গুরুতর আহত হয় ও পরে রাজবাড়ী আধুনিকৃত সদর হাসপাতালের চিকিৎসকদের অবহেলায় মৃত্যু ঘটেছে।

এ অপ্রত্যাশিত র্ঘটনাটি ঘটেছে ২৯ সেপ্টেম্বর-১৮ শনিবার সকাল পৌনে ৯.টার দিকে রাজবাড়ী জেলা সদরের আলীপুর ইউনিয়েনর আলাদিপুর আর.সি. সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে।

মৃত- আলিম শেখ রাজবাড়ী জেলা সদরের আলীপুর ইউনিয়নের আলাদীপুর গ্রামের কৃষক মামুন শেখের ছেলে এবং আলাদীপুর আর.সি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেনীর ছাত্র।

সে ১ম শ্রেণী থেকে প্রথম স্থান অধিকার করে। যে কারণে প্রথম শ্রেণীতে তার রোল নম্বর ছিলো এক।

এমন ঘটনার পর মৃত শিশুর স্বজন ও এলাকাবাসীর তোপের মুখে পরেন চিকিৎসকরা। পরে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছে একটি তদন্ত কমিটি।

প্রত্যক্ষদর্শী, শিক্ষক, ছাত্রী, অভিভাবকদের সাথে কথা বলে ‘জনতার মেইল.কম’ জেনেছে যে, আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বিদ্যালয়ের শিশুদের খেলাধুলার জন্য একটি  শ্লিপার স্থাপন করে দেওয়ার কথা ছিল। যার অংশ হিসেবে গত শুক্রবার স্কুল কতৃপক্ষের না জানিয়ে এবং কোন রকম রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা ছাড়াই অসাবধানতার সঙ্গে নব নির্মিত শ্লিপারটি আলাদীপুর আর.সি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে রেখে আসে ওয়ার্কশপ কতৃপক্ষ।

শনিবার সকাল পৌনে ৯.টার দিকে স্কুলে আসেন শিক্ষকরা ও দপ্তরি। তারাও শ্লিপারটির রক্ষাণাবেক্ষনের ব্যবস্থা না করেই ক্লাস শুরু কাজে ব্যস্ত হয়। সে সময় বিদ্যালয়ের একাধিক শিশু কৌতুহল বশতঃ শ্লিপারটিতে গিয়ে ওঠে। এ সময় শ্লিপারটির পাশে অন্যান্য শিশুদের ন্যায় দাঁড়িয়ে ছিল মেধাবি ছাত্র আলিম শেখ। এক পর্যায়ে সকাল ৯.টার দিকে শ্লিপারটি আলিমের গায়ের উপর গিয়ে পরে। এতে মারাত্নক ভাবে আহত হয় আলিম।ওই সময়েই তাকে উদ্ধার করে  বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকরা  রাজবাড়ী আধুনিকৃত সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসে।

হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনার পর শিশু আলিম চিৎকার করলেও তার ওই চিৎকারের শব্দ পৌছাচ্ছিলনা ওই বিভাগে অবস্থানরত মেডিকেল অফিসার মনিজা আক্তারের কানে। তিনি তখন মোবাইল ফোনে মনের সুখে কথা বলছিলেন ও ফেসবুক চালাচ্ছিলেন। প্রায় আধাঘন্টা পর ওই ডাক্তার আলিমের কাছে আসে এবং আলিমের আঘাতপ্রাপ্ত স্থান গুলো এক্সরে করার জন্য বলেন ও টালবাহানা করেন। সে সময় তার অবস্থা ছিলো আশংকাজনক। যে কারণে রোগীর স্বজনরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে চান। তবে চিকিৎসক তাদের ছাড়পত্র না দিয়ে তাকে ক্ষতিগ্রস্থ স্থান এক্সরে করার নির্দেশ দেন। ওই এক্সরে করার পর আলিমকে হাসপাতালের আন্তঃবিভাগে নিয়ে যাবার পর পরই সে মারা যায়।

এ অপ্রত্যাশিত  ঘটনায়, অবিভাবকরা দ্বায়ি করেছে স্কুল কতৃপক্ষকে, তারা বলেছে শিক্ষকরা খেয়াল রাখলে এ ঘটনা ঘটতোনা। শিশুটির মৃত্যুর জন্য শিক্ষকরা দ্বায়ি।

স্কুলের দপ্তরি দ্বায়ি করেছে মৃত্যু হওয়া শিশুটির। সে বলেছে শিশুটি খেলনাটির পাশে না গেলে তার গায়ের উপর পড়তোনা, তার মৃত্যুও হতোনা।

স্কুল কতৃপক্ষ দ্বায় এড়িয়ে দোষরোপ করছে ওয়ার্কশপ কতৃপক্ষের। শিক্ষকরা বলেছে ওয়ার্কশপের লোকজন আমাদের না জানিয়ে স্লিপারটি দাঁড় করে রেখেগেছে, এটা শুয়ায়ে অথবা গাছের সাথে বেঁধে রেখে যাওয়া উচিৎ ছিল। দাঁড় করে রাখায় পড়ে গিয়ে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে, এর জন্য দ্বায়ি ওয়ার্কশপ কতৃপক্ষ।

মৃত শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা শিক্ষকরা দ্বায়ি করেন হাসপাতাল কতৃপক্ষকে। তারা বলেন, হাসপাতাল কতৃপক্ষের অবহেলার কারনে শিশুটির মৃত্যৃ হয়েছ।

প্রতিবেদকের ভাষ্য, যে যার মতো দ্বায় এড়িয়ে একে অপরের দোষারোপ করে চলেছেন। সন্মানিত প্রীয় পাঠকবৃন্দ আপনারাই বলুন আসলে এ দ্বায়ভার কার?

Comments

comments