ফরিদপুর র্যাবকে ধন্যবাদ ও রাজবাড়ীর দূর্গম পদ্মা চরের মানুষের হালচাল
প্রকাশিত: ২:১৬ অপরাহ্ণ ,১৩ মার্চ, ২০১৮ | আপডেট: ২:০২ পূর্বাহ্ণ ,২২ এপ্রিল, ২০১৮
নিজস্ব প্রতিনিধি।।র্যাব-৮, সিপিসি-২, ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রইছ উদ্দিন কে ধন্যবাদ জানালেন রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের দূর্গম পদ্মা পারের বেতকা চরের সাধারন মানুষ ।
রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের দূর্গম পদ্মা পারের বেতকা চর এলাকায় ‘আশ্রায়ন প্রকল্প’ নির্মান হবে । এমন খবর জানতে পেরে ১০ই মার্চ-১৮ শনিবার দুপুরের দিকে এ প্রতিবেদক ওই এলাকায় ‘আশ্রায়ন প্রকল্পের নির্ধারিত জমি পরিদর্শনে গেলে, এলাকাবাসি তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে বলেন, নির্ধারিত স্থান হতে ‘আশ্রায়ন প্রকল্প’টি অন্যত্রে নির্মান করিয়া হত দরিদ্র ভূমিহীন কৃষকদের চাষাবাদ করিয়া জীবিকা নির্বাহের মাধ্যমে পরিবার পরিজন লইয়া বেঁচে থাকার সুযোগ চেয়ে সরকারের প্রতি আকুল আবেদন জানান । ১টি মাধ্যমিক স্কুল বিশেষ প্রয়োজন, কাশেম মোড় হইতে বেতকা সঃ প্রাঃ বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তা পয়োজন, বাল্যবিবাহ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে এবং এলাকার অতিত/বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সহ বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়েও কথা বলেন তারা । এ সময় সাবেক মেম্বর জালাল উদ্দিন, মোঃ খলিল মন্ডল(৬৮), মোঃ লোকমান প্রামানিক(৫০), রহম সেখ(৫৫), আক্কাছ আলী মন্ডল(৫৫) আবুল মন্ডল ও মোজাই সেখসহ অন্তত ২০/২২ জন এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন । এলাকার অতিত/বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে কথা বলতে গিয়েই র্যাব-৮, সিপিসি-২, ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রইছ উদ্দিন সহ সকল র্যাব সদস্যদের ধন্যবাদ জানান ও কমান্ডার রইছ উদ্দিনের দির্ঘায়ু কামনা করেন ওই দূর্গম পদ্মা পারের স্থানীয় সাধারন মানুষ ।
র্যাবকে ধন্যবাদ দেওয়ার কারন হচ্ছে, বেশ কিছুদিন আগে চরমপন্থী সন্ত্রাসীদের অভয়রণ্য ছিল পদ্মা নদীর ওপারে জেগে ওঠা চড়েরর বেতকা গ্রাম । চরমপন্থী নেতা বাপ্পী ও লালনের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছিল একটি সন্ত্রাস বাহিনী । ওই বাপ্পী-লালনের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাস বাহিনীর অন্যায় অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল এই বেতকা চরের জনসাধারন ।
চর এলাকার মানুষের প্রধান পেশা হচ্ছে শুষ্ক মৌসুমে হালচাষ করে ফসল ফলানো ও বর্ষা মৌসুমে নদীতে মাছ শিকার করে জিবীকা নির্বাহ করে কোন রকমে জীবন-যাপন করা । বর্ষার মৌসুমে ফসলি জমি ও বসত বাড়ী-ঘড় পানির নিচে তলিয়ে যায় । কৃষক জেলে হয়ে নদীতে মাছ শিকার করে জিবীকা নির্বাহ করে থাকে । কত কষ্ট করে জীবন কাটাতে হয় তাদের । আর এমন কষ্টে থাকা কৃষক পরিবারের অন্যায়-অত্যার করত বাপ্পী ও লালন বাহিনীর সন্ত্রসীরা । আর এই সন্ত্রাসীরা ওই চরের মানুষের ভাত খেয়ে বেঁচে থেকে আবার ওই চরের মানুষদেরই অন্যায় অত্যার করে বেড়াতো । চরের বসবাসরত কষ্টে থাকা বিভিন্ন কৃষক পরিপারের যুবক ছেলেদের ওদের সাথে ওঠ-বস করতে ও ওদের দলে নাম লেখাতে বলত, ওদের দলে নাম না লেখালে, ওদের সাথে না মিশলে, তাদেরকেই মারপিট করত, সে ভয়ে ওদের সাথে নিরিহ কৃষক পরিবারের ছেলেদের ওদের সাথে মিশে বেঁচে থাকতে হতো । বিভিন্ন সময় চরে কষ্টে বসবাসরত কৃষক পরিবারের নিকট চাঁদা দাবি করতো না দিলে অস্ত্র দ্বারা ভয়ভিতি প্রদর্শনসহ মারপিট করত । অনেক সময় জমির ফসলসহ গৃহপালিত গরু, ছাগল, হাস-মুড়গি নিয়ে নিত । বিভিন্ন মেয়েদের ও ঝিঁ-বউয়ের উত্তাক্ত ও নির্যাতন করত । এত অন্যায়-অত্যাচার আর নির্যাতন সহ্য করে অশান্তিতে মুখ বুজে সহ্য করতে হতো চরাঞ্চলের মানুষদের । ওদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পেতনা । ওদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ভিটে মাটি ছেড়ে চলে গেছে বেশ কয়েকটি পরিবার । তারা হলেন, মৃত সন্তোশ মন্ডলের ছেলে দুলাল মন্ডল, মৃত হবিবর প্রামানিকের ছেলে ছাত্তার প্রামানিক, মৃত হোসেন মন্ডলের ছেলে শামসু মন্ডল ও খাঁজা মন্ডল । গত বৈশাখ-জৈষ্ঠ মাসের দিকে র্যাব কতৃক চরমপন্থ বাপ্পী ও লালন নিহত হওয়ায় ওই দূর্গম চরের মানুষের মাঝে শস্তি ফিরে এসছে । বাপ্পি-লালনদের অত্যাচারে যারা ভিটে-মাটি ছেড়ে গিয়েছিল তারা আবার ফিরতে শুরু করেছে । তার মধ্যে মৃত হবিবর প্রামানিকের ছেলে ছাত্তার প্রামানিক গ্রামে ফিরেছে বাকীরা ফিরার অপেক্ষায় । চরমপন্থ বাপ্পী ও লালন র্যাবের সাথে বন্ধুক যুদ্ধে নিহত হওয়ায় সরকারের প্রতি আস্থা ফিরে আসে মানুষের মাঝে এবং র্যাবের প্রতি মানুষ অত্যাধিক খুঁশি হয়ে, র্যাব-৮, সিপিসি-২, ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রইছ উদ্দিন সহ সকল র্যাব সদস্যদের ধন্যবাদ জানান ও কমান্ডার রইছ উদ্দিনের দির্ঘায়ু কামনা করেন দূর্গম পদ্মা পারের স্থানীয় সাধারন মানুষ ।
শুধু তাই নয় ২০/২২ জন স্থানীয় ও এ প্রতিবেদকের সন্মুখেও ওই দিন ফরিদপুর র্যাব কমান্ডার মোঃ রইছ উদ্দিনের মুঠোফনে ধন্যবাদ জানিয়ে তার দির্ঘায়ু কামনা করেন মোঃ খলিল মন্ডল(৬৮), মোঃ লোকমান প্রামানিক(৫০) এবং বর্তমানে এলাকার জনসাধারন শান্তিতে আছে বলেও জানান তারা।
নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক ব্যাক্তি এ প্রতিবেদককে বলেন, একদিন সোরাপ মন্ডলের স্ত্রী মাঠে চড়ানো তাদের গরু আনতে গেলে বাপ্পী তাকে প্রথমে কু-প্রস্তাব দেয়, ওই নারী রাজি না হওয়ায় তাকে জোড় করে ধরতে দাঁবড়িয়ে তাদের বাড়িতে ওঠায়, এটি আলোচিত ঘটনা । তিনি আরো বলেন, এমন আরো অনেক ঘটনা আছে, তবে সবারই মান-সন্মান আছে সে কারনে মহিলা বিষয়ক অন্যান্য ঘটনা আমি বলতে চাই না, যা হবার হয়ে গেছে, সেকারনে আপনি অন্য কারো নিকট জানতে পারলেও সেটা না লেখার জন্য অনুরোধ করছি ।