আজ : রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মধ্যরাতে সাংবাদিককে ধরে নিয়ে মদ-গাঁজা দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জেল


প্রতিবেদক
জনতার মেইল.ডটকম

প্রকাশিত: ৪:০০ অপরাহ্ণ ,১৪ মার্চ, ২০২০ | আপডেট: ৫:৩৪ অপরাহ্ণ ,১৪ মার্চ, ২০২০
মধ্যরাতে সাংবাদিককে ধরে নিয়ে মদ-গাঁজা দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জেল

জনতার মেইল ডেস্ক।।  কুড়িগ্রামে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মধ্যরাতে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ১৩ মার্চ-২০২০ শুক্রবার দিবাগত রাত ২.টার দিকে আরিফুল ইসলাম নামে ওই সাংবাদিককে কারাদণ্ড দিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তিনি নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।

সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার মিতু জানান- গতকাল রাত ১২.টার পর জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমার নেতৃত্বে কয়েকজন ম্যাজিস্ট্রেট আনসার সদস্যদের নিয়ে তার শহরের চড়ুয়া পাড়ার বাড়িতে যান। একপর্যায়ে দরজা ভেঙে তার ঘরে প্রবেশ করে তার স্ত্রী সন্তানের সামনেই তাকে মারধর করে ধরে নিয়ে আসেন। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে এসে বাসায় আধা বোতল মদ ও দেড়শ গ্রাম গাঁজা রাখার অভিযোগ দিয়ে তাকে এক বছরের কারাদন্ড দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

তিনি বলেন, ‘শুক্রবার রাত ১২.টার দিকে খাওয়া শেষে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এ সময় হঠাৎ কে বা কারা দরজা ধাক্কাধাক্কি শুরু করলে আমার স্বামী ফোনে স্বজনদের বিষয়টি জানান। এক পর্যায়ে দরজা ভেঙে তারা আমার স্বামীকে মারধর শুরু করে। আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকেও মারতে উদ্যত হয়। পরে আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়।’

কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি মাহফুজুর ইসলাম বলেন- ‘আমরা জানতে পেরেছি ডিসি অফিসের লোকজন সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে নিয়ে এসে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি কাবিখা প্রকল্পের অর্থে জেলার একটি পুকুর খনন করে তা নিজের নামে নামকরণ করার প্রয়াস চালিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন। এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছিলেন সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম। ওই নিউজ করার পর থেকেই তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন ডিসি। এছাড়া, সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে রিপোর্ট করতে চেয়েছিলেন সাংবাদিক আরিফ। এ বিষয়ে জানতে পেরে জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে তাকে বেশ কয়েকবার ডেকে নিয়ে সতর্ক করা হয়। এছাড়াও সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে ‘নিয়োগ বাণিজ্য’ বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন তিনি।

অভিযোগ উঠেছে, এসব কর্মকাণ্ডে ক্ষিপ্ত হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই সাংবাদিককে সাজা দেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা ও জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি।

সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে এসে তার নামে মাদকের মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হলেও কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহফুজার রহমান জানান- তার নামে এর আগে মাদক সংক্রান্ত কোন অভিযোগ নেই।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক দুলাল বোস বলেন- ‘আমার জানা মতে সাংবাদিক আরিফুল মদ-গাঁজা তো দূরের কথা কোনদিন সিগারেটও স্পর্শ করেননি। বরং যারা ধূমপান করেন তাদের বিভিন্ন সময় তিরস্কার করতে দেখেছি।              (সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন)

Comments

comments