আজ : শুক্রবার, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীর দাদশি শশুর বাড়িতে জামাইয়ের রহস্যজনক মৃত্যু! লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ


প্রতিবেদক
জনতার মেইল.ডটকম

প্রকাশিত: ৭:১৫ অপরাহ্ণ ,৮ মার্চ, ২০২৩ | আপডেট: ১২:৫৫ পূর্বাহ্ণ ,১০ মার্চ, ২০২৩
রাজবাড়ীর দাদশি শশুর বাড়িতে জামাইয়ের রহস্যজনক মৃত্যু! লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি।। দাদশি শশুর বাড়িতে জামাই আব্দুল আলিম(২৮) এর রহস্য জনক মৃত্যু। কেউ বলছে পরিকল্পিত হত্যা, কেউ বলছে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্নহত্যা।

৭ মার্চ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজবাড়ী জেলা সদরের দাদশি ইউনিয়নের সিঙ্গা মুহাম্মাদপুর গ্রামে আব্দুল খালেক মিয়ার বাড়িতে তার মেয়ে জামাইয়ের এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ও আলিমের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে।

শাশুড়ীর নাম- মালেকা বেগম, স্ত্রীর নাম- খালেদা খাতুন। মৃত আলিম- একই উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডস্থ আলাদিপুর গ্রামের মোঃ মজিদ সর্দারের (অসুস্থ) এর মেঝ ছেলে। সে ডেকোরেটর শ্রমিক(মিস্ত্রী)। জানাযায়, তাদের বিয়ে হয়েছে ৬ বছর ধরে, তাদের ঘরে প্রায় ৩ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে, তার নাম আরিফা।

আলিমের স্ত্রী খালেদা খাতুন জানায়- গত ৩ দিন ধরে আলিম অমার বাড়িতে বেড়াতে যাই। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে কাজ শেষ করে আমার বাবার বাড়ি ফেরে রাত ১২টার পরে। সেদিন নিজের বাড়ী থেকে খেয়ে যাওয়ার কারনে শশুর বাড়িতে না খেয়েই শুয়ে পড়ে। প্রতিদিনের ন্যায় আমাদের মেয়েসহ ৩ জনই ঘুমিয়ে পড়ি। রাতে হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙে গেলে দেখি আমার স্বামী পাশে নেই, ঘরের লাইট জ্বালিয়ে দেখি কোমরের বেল্ট দিয়ে গলায় ফাঁস নিয়ে আলিম আত্নহত্যা করেছে। এটা দেখে আমি চিৎকার করলে আমার মা সহ বাড়ির সবাই এগিয়ে আসে। কি কারনে গলায় ফাঁস নিলো প্রশ্নের জবাবে বলেন, দেনার দ্বায়ে আত্নহত্যা করতে পারে বলে তার স্ত্রী জানায়।

ও শাশুরী মালেকা বেগম- মেয়ের চিৎকারে এগিয়ে আসলে আমার মেয়ে দরজা খুলে দিলে দেখতে পাই, আলিম গলায় বেল্ট পেচিয়ে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলে আছে, তখন কাচি দিয়ে বেল্ট কেটে নামিয়ে ফেলি, তখন গ্রাম্য ডাক্তার হালিমকে ডেকে আনলে সে বলে মারা গেছে।

আলিমের মা রোকেয়া জানান- যেখানে আলিমের স্ত্রী, শাশুরীসহ ওর শশুর বাড়ির লোকজন বলছে আমার (আলিম) ছেলে না-কি গলায় আত্নহত্যা করেছে! সেখানে আমাদের বলার কি আছ? তারা দেখেছে, আমরা তো আর দেখি নাই। তবে, ডাক্তারের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর কারন জানা যাবে।

তবে, আলিমের বোন খাদিজা বলছে- ছোট ছেলেদের কাপড়ের এক হাত মাপের একটা বেল্ট দিয়ে কিভাবে গলায় ফাঁস নেওয়া যায়? পাশেই টিনের বেড়া, মৃত্যুর সময় মানুষ একটু হলেও বাচার চেষ্টা করে। পা শাটাশটি করলেও টিনের শব্দ হতো সবাই শুনতে পারতো, আবার সেখানে ২টা বাইসাইকেল ছিলো শাশাটিতে সাইকেল পড়েও শব্দ হতো, অথচ সেখানে কোন শব্দও না-কি হয়নাই। গলায় কোন দাগ দেখা যায় নাই, জ্বিহব্বাও বেড় হয় নাই, দাগ দেখা গেছে আমার ভাইয়ের বুকের উপর। আমি বলবো এটা হত্যা, আলিমকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্য করা হয়েছে।

এদিকে গ্রামের লোকের কানাঘুষা থেকে জানাযায় যে- জমি ক্রয়ের জন্য আলিম না-কি তার শশুরের কাছে ধারাবাহিক ভাবে আড়াই লাখ টাকা জমিয়েছিল, সে টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে মনোমালিন্য সৃষ্টি হওয়ায় হত্যা বা আত্মহত্যা হতে পারে বলে জনসাধারণের মন্তব্য।

আব্দুল আলিমের বড় ভাই সেলিম জানায়- আমি ঢাকায় থাকি, আজ বিকেলে এইমাত্র এসেছি, শুনেছি গত ৩ দিন ধরে আলিম শশ্বুর বাড়িতেই থাকতো, গত রাতেও মান্নান শেখদের সাথে আলিপুর আড়পাড়ায় মিটিংয়ের প্যান্ডেরলের কাজ করে শশুর বাড়িতে চলে যায়, সেখানেই তার মৃত্যু হয়েছে, এ খবর পেয়ে আমি একটু আগে বাড়ি এসেছি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নিহত আলিমের বাড়ীতে মানুষের ভিড় আর কান্নার আহাজারী । তখন নিহত আলিমের লাশ মর্গ থেকে ময়না তদন্ত করে বাড়ীতে আনা হয়েছে ।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মোঃ শাহাদাত হোসেন বলেন- আমি সহ সদর সার্কেল ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম, ঋণের চাপে আলিম নামে ছেলেটি আত্ন হত্যা করেছে বলে জানাগেছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে । এ বিষয়ে একটি অপ মৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে ।

Comments

comments