আজ : শুক্রবার, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাংশার কলিমহরে শিশু মুরছালিনকে খুন করে তার চাচাতো ভাই! আর নাতির লাশ গুম করে দাদা


প্রতিবেদক
জনতার মেইল.ডটকম

প্রকাশিত: ৫:১৪ অপরাহ্ণ ,২১ মে, ২০২১ | আপডেট: ১২:১৯ পূর্বাহ্ণ ,২৭ মে, ২০২১
পাংশার কলিমহরে শিশু মুরছালিনকে খুন করে তার চাচাতো ভাই! আর নাতির লাশ গুম করে দাদা

স্টাফ রিপোর্টার।। রাজবাড়ীর পাংশা উপোজেলার কলিমহর ইউনিয়নের সাজুরিয়া গ্রামের নবাব মন্ডলের ৬ বছর বয়সের ছেলে মুরছালিন ১৬ই মে-২১ রবিবার সকাল সাড়ে ৭.টার দিকে নিখোঁজের পর ওই গ্রামের কালি মন্দির সংলগ্ন পাট ক্ষেত থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় ১৯ মে-২১ বুধবার সকাল ১০ ঘটিকার সময় শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে পাংশা থানা পুলিশ। ওই ঘটনার পর নিখোঁজ শিশুটির বাবা অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে পাংশা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।

প্রত্যক্ষদর্শী মনিরা বেগম (৩৫) বলেন আমি আনুমানিক সকাল ৯.টার দিকে ছাগলের ঘাস কাটার উদ্দেশ্যে পাট ক্ষেতের মধ্যে ঢুকি তখনই আমার নাকে দুর্গন্ধ আসে, উঁকি দিয়ে দেখি একটা বস্তা পরে আছে তাৎক্ষণিক আমি চিৎকার চেঁচামেচি করি সাথে সাথে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসে। পরে থানায় খবর দেওয়া হয়।

ওই দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপার এমএম শাকিলুউজ্জামান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ শরিফ উজ্জামান।

এর পরই থানা পুলিশ তদন্ত কাজ শুরু করে। প্রাথমিক তদন্ত কালেই হত্যাকারী হিসেবে শিশু মুরছালিনের চাচাতো ভাই মোঃ শাকিল আহম্মেদ রনি (১৫) ও তার দাদা মোঃ হাবিবুর রহমান (৬২) কে আটক করে পুলিশ। পরবর্তীতে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হলে আদালতে তারা হত্যা ও লাশ গুম করার দায় স্বীকার করে।

২১শে মে-২১ শুক্রবার বিকালে রাজবাড়ীর জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট শুধাংশ শেখর রায়ের আদালতে ১৬৪ ধারায় শিশু মুরছালিনকে নির্মম ভাবে হত্যা ও মরহেদ গুম করার ঘটনার স্বাকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছেন রনি ও তার দাদা।

আদালতে দাঁড়িয়ে শাকিল আহম্মেদ রনি জানিয়েছে, গত ১৬ মে সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠে দেখে মুরছালিন তাদের বাড়ীতে এসে দেড় বছর বয়সী ছোট ভাই আরিয়ান এর সাথে খেলা করছিল। খেলার এক পর্যায়ে মুরছালিন চর মারে আরিয়ানকে। তা দেখে সেও (শাকিল) মুরছালিনকে চর মারে। এতে মুরছালিন পাশে থাকা দেওয়ালের সাথে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে জ্ঞান হারায়। তখন সে তারাতারি করে মুরছালিনকে পাশে থাকা হাফ পানি ভরা লাল রংয়ের প্লাষ্টিকের বালতির মধ্যে নিয়ে রাখে। তারপর মুরছালিনকে পানি থেকে তুলে সারের সাদা বস্তার ভরে তা পুনরায় বালতির ভিতর রাখে। বালতিটি সে দাদার টয়লেটের পিছনে হাউজের উপরে বাঁশের চাটাইয়ের উপরে ছেড়া জাল দিয়ে ঢেকে রাখে।

দাদা মোঃ হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, গত ১৯ মে ভোরে তার স্ত্রী কাঞ্চন মালা বাথরুমের সামনে গেলে গন্ধ পান। তখন বিষয়টি কাঞ্চনমালা তাকে জানায়। তিনি বাথরুমের পেছনে গিয়ে দেখেন বালতির মধ্যে একটি বস্তা এবং ওই বস্তার ভেতরে মুরছালিনের লাশ। তখন তিনি তার স্ত্রীর অগোচরে মুরছালিনের লাশ বস্তাবন্দি অবস্থায় বাড়ীর উত্তর পার্শ্বে বছিরের পাট ক্ষেতে নিয়ে ফেলে আসে এবং পরে বালতি ভেঙ্গে তা পাশ্ববর্তী মাহাতাব খানের পাট ক্ষেতের ভেতরে রেখে আসে।

পাংশা থানার ওসি মোহাম্মদ শাহাদৎ হোসেন বলেন, নিখোঁজের ৩ দিন গত ১৯ মে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের সাজুরিয়া গ্রামের পাট ক্ষেত থেকে সারের বস্তায় পাওয়া যায় মুরসালিন মন্ডল (৬) এর মরদেহ। সেই সাথে ওই দু’জনকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হলে তারা হত্যার দ্বায় স্বিকার করে।
রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার এমএম শাকিলুজ্জামান বলেন, ক্লুলেস মর্মান্তিক এই হত্যাকান্ডের ঘটনাটি তারা ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই উদঘাটন করতে সমর্থ হয়েছেন। আসা করছেন দ্রুত সময়ের মধ্যেই তারা আদালতে চার্জশীট প্রদান করতে পারবেন।

Comments

comments