রাজবাড়ীর বালু মহলে চাঁদাবাজী ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ৬ জন আহত
প্রকাশিত: ৪:৫১ পূর্বাহ্ণ ,১ মার্চ, ২০২৩ | আপডেট: ২:০০ পূর্বাহ্ণ ,৩ মার্চ, ২০২৩
রাজবাড়ী প্রতিনিনিধি।। রাজবাড়ীর পদ্মা নদীর বালু মহলে আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজীকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংর্ঘষ ঘটনা ঘটছে।
সোমবার (২৭শে ফেব্রুয়ারি-২৩) বেলা সারে ১১.টার দিকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের কাবিলপুর গ্রামে পদ্মা নদীর তীরে ও মিজানপুর ইউপির সূর্যনগরে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণে দুই পক্ষের ৬ জন আহত হয়েছে।
আহতরা হলোঃ জেলা পরিষদ সদস্য আজম মন্ডল গ্রপের- ওমর ফারুক(৪২), সে রাজবাড়ী সদর উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের নব গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। আরিফুল ইসলাম ওরফে মারুফ(৩২), সে কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার ইনছান নগর গ্রামের মোঃ মারাফাত মন্ডলের ছেলে। রাজবাড়ী শহরের সজ্জনকান্দা গ্রামের মৃত আব্দুল বারীর ছেলে টিউলিফ, জৌকুড়া গ্রামের বিল্লাল শেখের ছেলে মোঃ আরিফ(৩৪) ও মিলন সরদার(৩৩)। এবং ইউপি চেয়ারম্যান টুকু মিজি গ্রুপের শরীফ উল্লাহ(২৩)। আহতরা ৫জন রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে এবং শরীফ উল্লাহ(২৩) ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎস্যাধীন রয়েছে।
স্থানীয়সূত্রে জানাগেছে, জেলা পরিষদ সদস্য- মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বাল্কহেড মালিক সমিতির সভাপতি আজম মন্ডলের নেতৃত্বে তার গ্রুপের আহতরাসহ আরও লোকজন বেশ কিছু দিন ধরে রাজবাড়ীর পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলন ও বালুবাহী বাল্বহেড (নৌকা) থেকে দির্ঘদিন ধরে নদীতে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে আসছিলেন। এই চাঁদাবাজীকে কেন্দ্র করে জেলা পরিষদ সদস্য ও আওয়ামীলীগ নেতা আজম মন্ডলি এবং মিজানপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক টুকু মিজি সমর্থকদের মধ্যে কয়েকদফা গুলি বিনিময় ও মারধরের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায়, জেলা পরিষদ সদস্য- মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বাল্কহেড মালিক সমিতির সভাপতি আজম মন্ডল বলেন- তিনি বৈধভাবে বাল মহল ইজারা নিয়ে নদীতে বালুর ব্যবসা করছেন। কিন্তু একটি গ্রুপ সেখানে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে আসছিলেন। সেই চাঁদা না দেওয়াকে কেন্দ্র করে সোমবার দিন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মিজানপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আমিন উদ্দিন আহম্মেদ টুকু মিজির ছেলে জয়ের নেতৃত্বে দুলাল, শফিক, রাজীব, শিমুল,কামরুল, মালেক, সোহেল একদল দুর্বৃত্ত এসে আতর্কিত ভাবে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে আহত করে। খবর পেয়ে তিনি এগিয়ে আসলে দুর্বৃত্তরা তার ওপরও হামলা করে। এ ব্যাপারে তিনি থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান।
এ ঘটনায়, মিজানপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আমিন উদ্দিন আহমেদ টুকু মিজি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন- জেলা পরিষদের সদস্য আজম মন্ডল দির্ঘদিন ধরে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে নিজেই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। সে বিভিন্ন জায়গা থেকে সন্ত্রাসীদের এনে বালু ঘাট দখল করার চেষ্টা করছে এবং নদীতে বালুবাহী নৌকা হতে চাঁদাবাজী করে আসছে। এখন এই ঘটনা ঘটিয়ে আমার নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আপনারা একটু খোঁজ-খবর নিলেই দেখতে পাবেন, আজম মন্ডলের সথে যারা চলাফেরা করে তাদের বেশিরভাগ বহিরাগত সন্ত্রাসী দুর্বৃত্ত। এতে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আজম মন্ডল যাদের দিয়ে চাঁদাবাজি করতো, তাদের টাকা না দেওয়ায় তাদের সাথেই বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে আমার ছেলে জয়ের বন্ধু শরিফুল্লাহকে তারা মেরে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এখন আমার ছেলে ও আমাকে জড়িয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তারা আমার ও ছেলেকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এ অবস্থায় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মোঃ শাহাদাত হোসেন বলেন- খবর পেয়ে রাজবাড়ী সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করাসহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে গোলাগুলির বিষয়টি সঠিক নয়, আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।