রাজবাড়ীতে বালু মহলে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পদ্মা নদীতে গুলাগুলি! একজন গুলিবিদ্ধ
প্রকাশিত: ৪:৩৯ অপরাহ্ণ ,১০ আগস্ট, ২০২২ | আপডেট: ২:০৩ পূর্বাহ্ণ ,১১ আগস্ট, ২০২২
স্টাফ রিপোর্টার।। রাজবাড়ীর ধাওয়াপাড়া-জৌকুড়া এলাকার ইজারাকৃত বালু মহলে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পাবনা জেলার চড়-জাজিরা প্রান্তে পদ্মায় দুর্বৃত্তদের অস্ত্র মহরা ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে মোঃ আনোয়ার হোসেন মিয়া(৪২) নামে এক ড্রেজার শ্রমিক মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত অবস্থায় তাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার বাবুশিয়া গ্রামের রফিক মিয়ার ছেলে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আনোয়ার হোসেন বলেন- সে সূর্যনগরের আজম মন্ডলের ড্রেজারের শ্রমিক। গত ৩/৪ দিন ধরে পদ্মা নদীতে স্পিড বোর্ড যোগে দুর্বৃত্তরা অস্ত্র মহরা দিয়ে আসছে, রাজবাড়ী সদর উপজেলার চরজাজিরা চরে বালু উত্তোলনের সময় আজ দুপুর ১ টার দিকে পাবনা নাজিরগঞ্জের দিক থেকে একটি স্পিডবোটযোগে ৪/৫ জন দুর্বৃত্ত এসে এলোপাতাড়ি গুলি করে চলে যায়। আমার মাথার পিছনে গুলি লেগেছে।
রাজবাড়ী জেলা ও পাবনা জেলার মাঝামাঝি সিমান্তে পদ্মা নদিতে ড্রেজার দ্বারা বালি কাটার সময় আজ বুধবার (১০আগষ্ট-২২) দুপুর ১.টার দিকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের চর জাজিরিয়া এলাকার পদ্মা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে, এই গুলাগুলির ঘটনায় নদীতে বালি উত্তোলন বন্ধ রয়েছে এবং ধাওয়া পাড়া বালু ঘাটে বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে, যে কোন সময়ে দু’পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ বিষয়ে, রাজবাড়ী বাল্বহেড সমিতির সভাপতি ও ড্রেজার মালিক আজম মন্ডল বলেন- বালুকাটা নিয়ে ইজারাদারদের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা বা পানা দেনা নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।
রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন- পদ্মা নদীতে গুলির ঘটনা ঘটছে। একজন শ্রমিক গুলি বৃদ্ধ হয়েছে। তবে এ ঘটনা পাবনার জেলার চর জাজিরা এলাকায় ঘটেছে। যেহেতু পাবনার ঘটনা, নদীতে নৌ-পুলিশ বা পাবনা পুলিশ ব্যাবস্থা নেবেন। তাছাড়া ঘটনা জানা মাত্র রাজবাড়ী হাঁসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় কোন অভিযোগ পাই নি। যদি পাই আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
উল্লেখ্য, রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের ০৫.৩০.৪২০০.০২০.৩৮.০০৮.২১.৩৯০ নং দরপত্র ১২ই ফেব্রুয়ারি আহবান করেন। এই দরপত্রে চড়-জাজিরা, চড়-পদ্মা, চড় নরসিংহদিয়ার ইজারা দেওয়ার জন্য সর্বসাধারনের নিকট হতে দরপত্র আহ্বান করলে, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জ ইউপির সরদার শাহাদাৎ হোসেনের ছেলে হুমায়ুন কবির রোকন ও একই এলাকার ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য রেনু বেগম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারে ভুমি মন্ত্রনালয়ের সচিব, বিআইডাব্লিওটিএর চেয়ারম্যান, রাজবাড়ী ও পাবনা জেলার জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করে রিট করেন। রিটে উল্লেখ করেন “বালুমহাল ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০” লঙ্ঘন করে দরপত্র আহ্বান করেন। যার কেস নং-৭১৫৭/২২। যার স্থগিতাদেশ ৬মার্চ-২২ পর্যন্ত বহাল থাকবে ও নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই স্থাগিতাদেশ বহাল থাকবে মর্মে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খন্দকার দিলরুজ্জামানের সমন্বিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পরবর্তীতে, হাইকোর্ট ডিভিশনের ওই আদেশ প্রত্যাহার হওয়ার পর বালু মহল পূনরায় টেন্ডারের মাধ্যমে ইজারা গ্রদান করা হয়।
তবে প্রকাশ থাকে যে, রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের ইজারা কৃত বালু মহলের বাহিরে বালু উত্তোলন ও সরকারের নির্ধারিত পরিমাপের চেয়ে অতিরিক্ত (যাহা অবৈধ) বালু উত্তোলনের কালো টাকা ভাগবাটোয়ারা কে কেন্দ্র করে এই গুলাগুলির ঘটনা ঘটছে বলে এলাকাবাসী জানান। এই অবৈধভাবে কামানো টাকার ভাগ নিতেই সন্ত্রাসীদের আনাঘুনা ঘটে বলে জানাযায়। আবার এই কালো টাকা রক্ষার জন্যও সাংবাদিকদের হুমকি-ধামকিসহ ভয়ভিতি প্রদর্শনের জন্য ইজারাদাররাও সন্ত্রাসী পুষে! সরকার কতৃক নির্ধারিত পরিমাপের চেয়ে অতিরিক্ত (যাহা অবৈধ) বালু উত্তোলনের ব্যপারে ও শহর রক্ষা বাধের বাহিরে নদীর পাড়ে বিশাল বালির খামাল (স্তুপ) করে রাখার সংবাদ গণমাধ্যম যাতে প্রকাশ করতে না পারে।