ভিপি জমি হাতিয়ে নিতে জাল দলিল দ্বারা রাজবাড়ী আদালতে মামলা। জবাব নেই সরকার প্রতিনিধির
![প্রতিবেদক](http://www.janatarmail.com/wp-content/uploads/2018/03/icon-1.png)
প্রকাশিত: ৫:১০ অপরাহ্ণ ,৮ এপ্রিল, ২০২৩ | আপডেট: ২:২৩ পূর্বাহ্ণ ,১২ এপ্রিল, ২০২৩
![ভিপি জমি হাতিয়ে নিতে জাল দলিল দ্বারা রাজবাড়ী আদালতে মামলা। জবাব নেই সরকার প্রতিনিধির ভিপি জমি হাতিয়ে নিতে জাল দলিল দ্বারা রাজবাড়ী আদালতে মামলা। জবাব নেই সরকার প্রতিনিধির](https://janotarmail.com/wp-content/uploads/2023/04/10-32.jpg)
স্টাফ রিপোর্টার।। ভিপি জমি হাতিয়ে নিতে- সরকারি ভলিউম বুকে নাই (জাল) দলিল দ্বারা সরকারের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেছে হানিফ সেখ। গত ১১/০৪/২০২২ইং তারিখে দাখিলকৃত দেওয়ানী মামলা নং ৯৭ /২০২২। মামলায় এ পর্যন্ত সরকার পক্ষ কাউন্টার না দেওয়ায় আগামী ১২/০৪/২০২৩ইং তারিখে এক তরফা শুনানী হবে মর্মে আদালতের আদেশসূত্রে জানা যায়।
এ ব্যপারে, সরকার পক্ষের এ্যাড. আদালতের জিপি আনোয়ার হোসেনকে এ প্রতিবেদক অবগত করলে তিনি বলেন, এ মামলার বিষয়ে আমি জানতাম না।
বাদী:- মোঃ হানিফ সেখ, পিং- মক্কেল সেখ, সাং- ইন্দ্রনারায়নপুর, ডাকঘর- হমদমপুর, উপজেলা ও জেলা- রাজবাড়ী।
বিবাদী:- গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ১. রাজবাড়ী জেল প্রশাসক, ২. রাজবাড়ী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), ৩. রাজবাড়ী সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং ৪. আলীপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী। মামলার নথিসূত্রে জানা যায়, আদালত থেকে সবাইকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
উক্ত মামলায় উল্লেখ করে যে, ততকালীন উক্ত সম্পত্তি টুকু উপযুক্ত মূল্য দিয়ে হানিফ সেখ তার নিজ নামে গত ইং ২৪/১২/১৯৬৯ তারিখে ছাপ কবলা দলিল করেন। যাহার দলিল নং ১০২৭৪। জমি ক্রয়ের পর গত ইং ১০/১২/১৯৭২ তারিখে N/o T.o ix-p-1-114/71-72 নং নামপত্তন কেসে সরকার সেরেস্তায় করাদী আদায় দিয়া দাখিলপ্রাপ্তে ভোগ-দখল করছেন। বিএস রেকর্ড ভুলবসত সরকারের নামে হয়েছে, তাহা পরিবর্তন করে তাহার নামে করতে আদালতের আদেশ চান। সেই সাথে নালিশী ভূমিতে প্রবেশ ঠেকাতে ১-৪ নং বিবাদীদের বিরুদ্ধে আদলতের নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন।
মামলার বাদী মোঃ হানিফ সেখ কতৃক আদালতে দাখিলকৃত দলিলটি সঠিক/ বেঠিক অনুসন্ধানে ফরিদপুর জেলা রেজিস্টারের কার্য্যলয়ে তল্লাশীকালে মহাফেজখানার বালামে কোনো রেকর্ড পাওয়া যায়নি। রেকর্ড কিপার মোঃ মাসুদ আলী মোল্যা জানান; ২৪/১২/১৯৬৯ তারিখে রেজিস্ট্রি হওয়া ১০২৭৪ নং দলিলের বিষয়ে জানতে গোপালগঞ্জ, শরিয়তপুর, মাদারীপুর ও ফরিদপুর আদালত থেকে আমাদের অফিসে নোটিশ দিয়েছে। ভলিউম বইটির ১ থেকে ৮ পৃষ্ঠা নাই। সম্ভববত ১৯৮৮ সালের বন্যায় পানিতে ভিজে ভলিউম বইয়ের পৃষ্ঠাগুলে নষ্ট হয়ে গেছে। সেই সুযোগে প্রতারকরা একই তারিখ ও একই দলিল নং ব্যবহার করে একাধিক জাল দলিল তৈরি করেছে।
এ ব্যপারে, আলীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে তহশীলদার মোশারফ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে, তিনি রেজিস্টার বহি দেখে জানান যে- ইন্দ্রনারায়নপুর মৌজার জেএল নং- ১৫৮, ১/১ নং খতিয়ানে বিএস ৪৩৬ নং দাগের ‘খ’ তপশীলভূক্ত ২৪ শতাংশ নাল জমি রহিয়াছে। সিএস, এসএ ও আরএস রেকর্ডে- ১. ভূবন মহিনী, জং- করুনা সিন্ধু। ২. শরৎ চন্দ্র, পিতা- শিব চন্দ্র। ৩. বিমল চন্দ্র পিতা- সুখেন্দ্র। ৪. অন্নদা চরণ প্রমোদা পিং- আধিকা, এই ৪ জনের নাম রহিয়াছে। এই সম্পতির মালিকগণদের না থাকায় পরবর্তীতে বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী সরকারের নামে বিএস রেকর্ড হয়েছে। অর্থাৎ ১/১ নং খতিয়ানের ‘খ’ তপশীলভূক্ত অন্তর্ভূক্ত হয়েছে।
এলাকাবাসীরসূত্রে ও তথ্যনুসন্ধানে জানাযায়, জেনৈক মক্কেল সেখের ছেলে ও অত্র মামলার বাদী মোঃ হানিফ সেখ অতি ধুরন্দর ব্যক্তি। তার বাড়ি ছিল রাজবাড়ী জেলা সদরের লক্ষ্মীকোল গ্রামের গোদারবাজার এলাকায়। এই এলাকা থেকে গোদারবাজার এর দুরুত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার, সেখান থেকে সে গত ২০০৮/৯ সালের দিকে স্বপরিবার নিয়ে রাজবাড়ীর আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়নপুর গ্রামে আসে, তখন ১৮শতাংশ জমি খরিদ করে বসত বাড়ি করে, যাহার বিএস দাগ নং ৪৩৫। সেই জমির সাথে পূর্বপাশে ১/১ খতিয়ানের ‘খ’ তপশীলভূক্ত ২৪ শতাংশ ভিপি জমি রয়েছে, যাহার বি.এস দাগ নং ৪৩৬। পরবর্তীতে ৩/৪ বছর পূর্বে উক্ত “ভিপি” সম্পত্তি অবৈধভাবে জবর-দখল করে। হানিফ এই এলাকায় এসেছেই ১৪/১৫ বছর ধরে, সে ৫৩ বছর পূর্বে জমি কিনলো কিভাবে?
এলাকাবাসীর ধারনা, ওই ভিপি সম্পত্তি টুকু আত্নসাতের উদ্দেশ্যে ও বিএস রেকর্ড পরিবর্তনের জন্য কোর্ট আদেশ পাওয়ার লোভে এবং সরকার কতৃক ভূমি উদ্ধার ঠেকাতে- এবার সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে দেওয়ানী মামলা করেছে প্রতারক মোঃ হানিফ সেখ। মূলত: অন্যায়কে ন্যায় রূপে প্রতিষ্ঠার জন্য অসৎ উদ্দেশ্যে আইনকে ঢাল বানাতে আদালতে এই মামলা দায়ের করেছে প্রতারক হানিফ সেখ।