আজ : শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে পেঁয়াজের কেজি ২০০, ভারতে ৯, লন্ডনে ৩৫, বার্লিনে ৯ টাকা!


প্রতিবেদক
জনতার মেইল.ডটকম

প্রকাশিত: ১:৩৭ অপরাহ্ণ ,১৫ নভেম্বর, ২০১৯ | আপডেট: ৩:৪৫ অপরাহ্ণ ,১৫ নভেম্বর, ২০১৯
বাংলাদেশে পেঁয়াজের কেজি ২০০, ভারতে ৯, লন্ডনে ৩৫, বার্লিনে ৯ টাকা!

জনতার মেইল।। আগুন লেগেছে পেঁয়াজের বাজারে। ফায়ার ব্রিগেডও হতাশ! লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। এরই ধারাবাহিকতায় এবার পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ২০০ টাকার ওপরে উঠে গেছে। এদিকে, গুগলে সার্চ দিয়ে ইউটিউবের ভিডিওতে দেখা গেছে- ভারতের বাজারে বাংলাদেশি টাকায় প্রতি কেজি পেয়াজ ৯ টাকা, জার্মানির বার্লিন শহরেও ৯ টাকা, আর লন্ডনে ৩৫ টাকা। সেখানে খ্যাত কৃষি প্রধান দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশর বাজারে পেঁয়াজের দাম ঠেকেছে ২০০ টাকায়।

এদিকে, ১৪ নভেম্বর-১৯ বৃহস্পতিবার সংসদ অধিবেশনে ‘পয়েন্ট অব অর্ডারে’ দাঁড়িয়ে পেঁয়াজ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন- বাজারে প্রচুর পেঁয়াজ আছে, তবুও লাফিয়ে লাফিয়ে মূল্য বাড়ছে। আমি মনে করি, এটা একটি ষড়যন্ত্র। পাঁচটা ভালো কাজ নষ্ট হয়ে যায় একটা খারাপ কাজের জন্য। আমাদের সরকার ফেনসিডিল ব্যবসায়ীদের ধরার পর, তারা বন্দুকযুদ্ধে মরে যায়। এভাবে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি যারা করল তারাও দ’জন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মরে যাক। এ রকম হলে একটা উদাহরণ হয়ে থাকবে।

১৪ নভেম্বর-১৯ বৃহস্পতিবার পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে- রাজবাড়ীর জেলা শহরের বাজারগুলেতে কেজি প্রতি ২০০ দামেই বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।

পেঁয়াজ কিনতে আসা লক্ষ্মীকোল গ্রামের শামিম বলেন, একদিন আগেই ১৫০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনেছি, আজ হঠাৎ ২০০ টাকা হওয়ায় আমার পেঁয়াজ কেনা সম্ভব হয়নি। এক সপ্তাহ আগে ছিল ৯০ টাকা। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। তিনি আরো বলেন- জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু যাহা বলেছেন- তা ঠিকই বলেছেন, সন্ত্রাস ও মাদক ব্যবসায়ীদের যেভাবে বন্দুকযুদ্ধে মারা হয়, ঠিক তেমনি ভাবে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি যারা করল তাদেরকেউ ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা উচিৎ।

বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মিন্টু জানান, পাইকারি মোকামে পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায়, পেঁয়াজ কেনা সম্ভব হয়নি।

অন্যদিকে, পেঁয়াজের ঝাঁজে অস্থির হয়ে উঠেছে ক্রেতারা। একদিনের ব্যবধানে প্রতিকেজিতে ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে, আর এক সপ্তাহে বৃদ্ধি পেয়েছে ১২০ টাকা। বৃহস্পতিবার রাজবাড়ীর বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা দরে। একই বাজরে ভাল মানের প্রতিকেজি চাল বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা দরে। এ অবস্থায় ১ কেজি পেঁয়াজের দামে ৫ কেজি চাল পাওয়া যাচ্ছে। দিন দিন পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেলেও নজরদারি নেই স্থানীয় প্রশাসনের।

গত দুই মাসে পেঁয়াজের দাম লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত সোমবার পেঁয়াজের মূল্য ছিল প্রতিকেজি ১৫০ টাকা। একরাতের ব্যবধানে ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে মঙ্গলবার তা বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা দরে। পেঁয়াজের দামের এই ঊর্ধ্বগতিতে নিম্ন আয়ের লোকজন চালের দামের সাথে তুলনা করছেন। তারা বলছেন ১ কেজি পেঁয়াজের দামে এখন ৫ কেজি চাল পাওয়া যাচ্ছে।

ভুক্তভোগী ক্রেতারা বলছেন, প্রশাসনের নজরদারি থাকলে বাজরে সিন্ডিকেট কোনো সুবিধা করতে পারবে না। তারা পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

এদিকে, গুগলে সার্চ দিয়ে ইউটিউবের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, *বাজারে ৯ টাকা কেজি দরে পেয়াজ বিক্রি করে ভারতের এক কৃষক কাঁদছে।

*জার্মানির বার্লিন শহরেও খুবই কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। সেখানে দেখা গেছে একটি সুপার স্টোরে পাঁচ কেজি পেঁয়াজের দাম মাত্র ০.৯৯ ইউরো (বাংলাদেশি ৯২.২৫ টাকা) ধরা হয়েছে। তবে তা ৫০% ছাড়ে বিক্রি হচ্ছে। সে হিসাবে বাংলাদেশি টাকায় পাঁচ কেজি পেঁয়াজের দাম পড়ছে ৪৬ টাকা। অর্থাৎ এক কেজি পেঁয়াজের দাম পড়ছে ৯ টাকা ২০ পয়সা!

‘ছড়িয়ে দিন জীবনের সব রঙ’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ওই ভিডিওটি শেয়ার করার পর তা ছড়িয়ে পড়ে। ‘পিয়াজ নিয়ে হক কথা, বার্লিন, জার্মানি। ১০/১১/২০১৯’ শিরোনামে ভিডিওটি পোস্ট করা হয় ওই পেজে।

ভিডিওতে এক প্রবাসী বাংলাদেশি বার্লিন শহরের একটি বাজারের সুপার শপে পেঁয়াজ কত টাকায় বিক্রি হচ্ছে তার বর্ণনা দিচ্ছিলেন।

*যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে বাংলাদেশি প্রবাসী সূত্রে জানা গেছে,বৃহস্পতিবার রাজবাড়ীর খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম যখন কেজি প্রতি ২০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে তখনই লন্ডনের বাজারে পেঁয়াজের খুচরা মূল্য ছিলো প্রতি কেজি বাংলাদেশি টাকায় ৫৫ টাকা করে। আবার বড় বড় গ্রোসারি শপে ২৫ কেজি পেঁয়াজের বস্তার দাম ছিলো ৮ পাউন্ড, যা কেজি দরে হিসাব করলে ৩২ পেন্স দাম হয়। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রতি কেজিতে ৩৫ টাকা করে পড়ে।

Comments

comments