আজ : শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীতে ইলিশ রক্ষা অভিযানে চৌদ্দ দিনে ২৮০ জেলে আটক


প্রতিবেদক
জনতার মেইল.ডটকম

প্রকাশিত: ৯:০৭ অপরাহ্ণ ,২২ অক্টোবর, ২০১৯ | আপডেট: ১১:১১ অপরাহ্ণ ,২৩ অক্টোবর, ২০১৯
রাজবাড়ীতে ইলিশ রক্ষা অভিযানে চৌদ্দ দিনে ২৮০ জেলে আটক

স্টাফ রিপোর্টার।। রাজবাড়ীতে চলমান মা ইলিশ রক্ষা অভিযানে ২২ অক্টোবর-১৯ মঙ্গলবার পর্যন্ত আটক করা হয়েছে ২৮০ জন জেলেকে। পাশাপাশি ২ হাজার ৬৪০ কেজি (৬৬)মন মাছ,১২ লাখ ৮৫ মিটার জাল ও ৪টি নৌকা জব্দ করা হয়েছে। আটককৃতদের কে বিভিন্ন মেয়াদে জেল-জরিমানা করা হয়েছে।

জানাগেছে, রাজবাড়ীর পাঁচ উপজেলার ৪টি পদ্মা নদীর কোল ঘেসা এবং পাংশা থেকে দৌলতদিয়া পর্যন্ত ৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ নদী রয়েছে জেলার অংশে।

প্রতিদিনের এ অভিযানে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মজিনুর রহমানের নেতৃত্বে- জেলা প্রশাসন, পুলিশ, নৌ-পুলিশ, ফরিদপুর র‌্যাব ও আনসার ব্যাটালিয়ানের সদস্যরা ভোর রাত থেকে সকাল এবং বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত নদীর বিভিন্ন অংশে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে মাছ, জাল, নৌকা জব্দসহ জেলেদের আটক করা হয়। পরবর্তীতে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জেলেদের বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও জরিমানা এবং জব্দকৃত জাল পুড়িয়ে ধ্বংসের পাশাপাশি মাছ গুলো বিভিন্ন এতিমখানা ও দুঃস্থ-গরিবদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
জেলা মৎস্য জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মজিনুর রহমান জনতার মেইলকে জানান- ৯ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর বিকাল পর্যন্ত ১৪ দিনে ২৮০ জন জেলেকে আটকের পর ২৪৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও ৩২ জনকে বিভিন্ন অংকের জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত। অভিযানে ২ হাজার ৬৪০ কেজি ইলিশ মাছ, ১২ লাখ ৮৫ হাজার মিটার জাল ও ৪ টি নৌকা জব্দ করা হয়। আটকৃতদের মধ্যে সদর উপজেলা, পাংশায়, কালুখালী ও গোয়ালন্দের জেলে রয়েছে। এ সময় আটক জেলেদের থেকে নগদ  টাকা জরিমানা আদায় এবং জব্দকৃত ৪ টি নৌকা নিলামে বিক্রি করা হয় এবং জব্দকৃত জাল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস ও মাছ গুলো বিভিন্ন এতিমখানা ও দুঃস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়।

তিনি আরো জানান, জেলায় ৯ হাজার ১১৯ জন নিবন্ধিত জেলে থাকলেও ইলিশ ধারার সাথে সম্পৃক্ত আছে ৪ হাজার ৬৪০ জন। যাদের প্রত্যেককে অভিযানের শুরুতে ২০ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে। আগামীতে ৩০ কেজি করে চাল জেলেরা পায় সে বিষয়ে প্রস্তাবনা দেবেন। অভিযানে তার দপ্তরসহ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, আসনার ব্যাটালিয়ান,নৌপুলিশ ও র‌্যাব সহযোগীতা করছেন। তিনিও জেনেছেন অভিযানে যাবার আগেই জেলেরা জেনে যায়। একটি চক্র তার অফিস ও গোদারবাজার এলাকায় তাদের উপর নজর রাখে। যখন নদীতে অভিযানে যান, তখন তারা তাদের সতর্ক করে দেন। তবে মাছ বিক্রির বিষয়ে কাউকে ধরতে পারলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম জানান, ইলিশ রায় নদীতে জেলা প্রশাসান নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে জেল-জরিমানা করছেন। অভিযানের শুরুতেই জেলেদের চাল বিতরণ করা হয়েছে। সে সময় জেলেদের বুঝানো ও সচেতন করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও কেন তারা নদীতে নামছে বুঝতে পারছি না। তবে এ ২২ দিন জেলেরা ইলিশ ধরা বন্ধ রাখলে তাদের জনই ভাল। কারণ মাছ গুলো ডিম দিলে নদীতে প্রচুর মাছ হবে এবং জেলেরা আগামীতে বেশি ও বড় বড় মাছ পাবে। এতে তারাই তখন আর্থিক ভাবে লাভবান হবে। সে জন্য এখন তাদের দেশ ও জাতির স্বার্থে মাছ ধরা বন্ধ রাখা উচিত। তবে গত কত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর রাজবাড়ীর নদীর পার ও গ্রাম গুলোতে মাছ বিক্রি হচ্ছে এমন সংবাদ তেমন শোনা যাচ্ছে না। মাছ বিক্রি হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে তাৎনিক জেলা প্রশাসনের লোকজনকে পাঠানো হয়। কিন্তু দুরুত্ব ও সময়ে কারণে ওই স্থানে গিয়ে তাদের পাওয়া যায় না। অভিযোগের সত্যতা পেলে জেলা প্রশাসনের দিক থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলেরা জানান- তারা মাছ ধরে সংসার চালান। অভিযান শেষে ২২ দিন পর নদীতে একটি মাছও থাকবে না। যে কারনে তারা জেল জরিমানার ভয় না করে ঝুকি নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে নামেন। যদি সারা বছর নদীতে মাছ থাকতো তাহলে অভিযানের সময় আমরা নদীতে মাছ ধরতামনা।

Comments

comments