বন্যার্ত মানুষের সাহায্যার্থে ছুটে চলেছেন রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক
প্রকাশিত: ৬:৪২ অপরাহ্ণ ,২০ জুলাই, ২০১৯ | আপডেট: ৯:৫২ অপরাহ্ণ ,২২ জুলাই, ২০১৯
উজ্জ্বল চক্রবর্ত্তী-স্টাফ রিপোর্টার।। রাজবাড়ীর নবাগত জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বন্যার্ত মানুষের দুঃখ-দূর্দশার খোঁজ-খবর নিতে ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করতে এক উপজেলা থেকে আরেক উপজেলায় এবং ইউনিয়ন ও গ্রাম-গঞ্জের বন্যা প্লাবিত অঞ্চলে প্রতিনিয়ত ছুটে চলেছেন। একদিকে সে নিজেও খোঁজখবর নিচ্ছেন আরেকদিকে, বন্যার্তদের সহযোগিতায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা।
রাজবাড়ী জেলায় শুরু হয়েছে বন্যা। সাম্প্রতিক অতি বৃষ্টি ও নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে রাজবাড়ী সদর, পাংশা, কালুখালী ও গোয়ালন্দ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গত কয়েক দিনে পদ্মায় পানি বাড়ায় রাজবাড়ীতে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। মানবেতর জীবন-যাপন করছেন পানিবন্দিরা তারা। হঠাৎ পানি বাড়ায় একদিকে- তলিয়ে গেছে জেলার বিস্তির্ণ এলাকার ধান ও পাট। আরেকদিকে- দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গবাদি পশুর খাবারের তীব্র সংকট।
এরই মাঝে, সরকারী সফর রাজধানী থেকে ফিরে এসেই- নবাগত জেলা প্রশাসক জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম পানিবন্দিদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তিনি এক উপজেলা থেকে আরেক উপজেলায়, ইউনিয়নে, গ্রামগঞ্জে ছুটে যাচ্ছেন বন্যা পরিস্থিতি দেখার জন্য,বন্যার্ত মানুষের দুঃখ-দূর্দশা বোঝার জন্য। আবার, নিজ হাতে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করে চলেছেন। বন্যার্তদের খোঁজখবর নিচ্ছেন বন্যার্তদের সহযোগিতায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করছেন।
২০ জুলাই-১৯ শনিবার বিকেলে রাজবাড়ী জেলার বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করেছেন ও শুকনা খাবার বিতরণ করেছেন জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম। রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের নয়নসুখ গ্রাম ও আকিরুননেসা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে ওই ইউনিয়নের ২০৬ টি পরিবারের মধ্যে শুকনা খাবার (ত্রান) বিতরণ করেন। প্রত্যেককে,১০ কেজি চাল,১ কেজি ডাল, ১ কেজি লবণ, ১ কেজি চিনি,২ কেজি চিড়া,১ লিটার সয়াবিন তেল এবং ৫০০ গ্রাম নুডুলস বিতরণ করা হয়।
ত্রাণ বিতরণ শেষে তিনি অন্তারমোড় হতে গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা, দেবগ্রাম ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের বন্যা উপদ্রুত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন।
এ সময়, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)মোহাম্মদ আশেক হাসান, রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাঈদুজ্জামান খান, গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবায়েত হায়াত শিপলু, জেলা ত্রাণ ও পুনরর্বাসন কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাবিবুল্লাহ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রফিকুল ইসলাম, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানসহ ট্যাগ অফিসারবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শন শেষে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ইতোমধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। তথ্য সংগ্রহ ও ত্রাণ তৎপরতার জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। সম্মানিত জেলা প্রশাসক জনাব দিলসাদ বেগম সার্বিক পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন এবং ত্রাণ তৎপরতাসহ সার্বিক অবস্থা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করছেন।
উল্লেখ্য, ২০/৭/২০১৯ তারিখ শনিবার সকালে- রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর পানি গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার এবং পাংশা উপজেলার সেনগ্রাম পয়েন্টে ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মহেন্দ্রপুর পয়েন্টে ১.০৪ মিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গত ১৯ /৭/২০১৯ তারিখ সকালে রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর পানি গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার এবং পাংশা উপজেলার সেনগ্রাম পয়েন্টে ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মহেন্দ্রপুর পয়েন্টে ১.২০ মিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ২০ জুলাই-১৯ তারিখ শনিবার জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।