ডাঃ রতন ক্লিনিকের ওটিতে রোগীর মৃত্যু! ডাঃ ও নার্স পলাতক, তালাবদ্ধ করে দিয়েছে পুলিশ
প্রকাশিত: ১২:০৬ অপরাহ্ণ ,৯ জুলাই, ২০২২ | আপডেট: ১:৪৩ পূর্বাহ্ণ ,১২ জুলাই, ২০২২
রাজবাড়ী প্রতিনিধি।। ডাঃ রতন ক্লিনিকে টনসিল অপারেশন করতে গিয়ে ফিরোজ কাজী (৪২) নামে এক রোগী মৃত্যু ঘটেছে। ফিরোজ কাজী- রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের র্সূয্য নগর এলাকার কালীনগর গ্রামের বাসিন্দা। শুক্রবার (৮জুলাই-২২) রাত ১১.টার দিকে রাজবাড়ী জেলা সদরের পৌর শহরের বড়পুল এলাকার ‘ডা. রতন ক্লিনিকে’ ওটিতে-ই এ ঘটনা ঘটে।
জানাযায়, এর আগেও ২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল এই ক্লিনিকে ভুল অপারেশনের কারণে রেবেকা বেগম (২৭) নামে সিজারিয়ান এক নারীর অকাল মৃত্যু হয়। মৃত রেবেকা কালুখালী উপজেলার মদাপুর ইউনিয়নের চরকৃষ্ণপুর গ্রামের নজরুল শেখের স্ত্রী ছিলেন। এছাড়াও এই ক্লিনিকের নাইট গার্ডও মারা যায় ক্লিনিকের মধ্যে ঘুমন্ত অবস্থায়। ক্লিনিকটিতে একাধিক রোগীর মৃত্যু ঘটলেও ক্লিনিকটির মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা নেওয়া হয়না বলে জনশ্রুতি রয়েছে। এর পরেও ক্লিনিকের কার্যক্রম অব্যাত রয়েছে।
রোগীর স্বজনেরা জানান, ফিরোজ কাজী অনেকদিন ধরে টনসিলের সমস্যায় ভুগছিলেন। ৮ এপ্রিল সকালে তিনি টনসিলের সমস্যা নিয়ে রাজবাড়ী পৌর শহরের ডক্টরস কেয়ার নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নাক, কান, গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. হাসান আলীকে দেখান। সেখানে ডা. হাসান আলী তাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে অপারেশন করার পরামর্শ দেন। অপারেশন করানোর জন্য ডা. হাসান আলীর সাথে ফিরোজের ১৫ হাজার টাকা চুক্তি হয় এবং ডা. রতন ক্লিনিকে অপারেশন করার কথা বলে। ডাক্তারের কথা অনুযায়ী বিকেলে ফিরোজ কাজী ডা. রতন ক্লিনিকে ভর্তি হন। ঠিক সন্ধ্যা ৭.টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকানো হয়। দীর্ঘ সময় অতিবাহীত হলেও ফিরোজকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের না করায় রোগীর স্বজনদের সন্দেহ হয়। এরপর রাত ১১.টার দিকে রোগীর স্বজনেরা অপারেশন থিয়েটারে গিয়ে দেখে ফিরোজ কাজী আর বেঁচে নেই। এদিকে, ক্লিনিকের দ্বায়িত্বরত ডাক্তার ও নার্সসহ সকলে পালিয়ে যায়। সে সময় নিহতের স্বজনরা কান্নাকাটি করে ও উত্তেজিত হয়ে ক্লিনিকের ম্যানাজারকে মারধোর করে। পড়ে পুলিশ এসে নিরাপত্তা ইস্যুতে ক্লিনিকটি তালাবদ্ধ করে দেয়। এবং ভর্তিকৃত রোগীদের অন্য হাসপাতালে স্থানন্তর করেন।
তবে, ফিরোজ কাজীর টনসিল অপারেশনের সময় এনেস্থেশিয়া(অজ্ঞান) ডাক্তার কে ছিলেন তাহা জানাযায়নি। সার্জারী ডাক্তারের ভুলের কারনে না-কি এনেস্থেশিয়া(অজ্ঞান) ডাক্তারের অবহেলার কারনে এ মৃত্যু ঘটেছে তাহাও জানাযায়নি। তবে তদন্ত করা হলে আসল অপরাধী বেড়িয়ে আসবে বলে সকলের ধারনা।
নিহতের ভাই ইউনুছ কাজী বলেন, আমার ভাইয়ের টনসিলের সমস্যা ছাড়া শারীরিক ভাবে আর কোনো সমস্যা ছিলো না। সে নিজে বিকেলে টনসিলের অপারেশন করানোর জন্য ক্লিনিকে আসে। ডাক্তারের অবহেলার কারণে আজ আমার ভাইয়ের মৃত্যু হলো। আমি ডাক্তারসহ ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের শাস্তির দাবি জানাই।
রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মো. শাহাদাত হোসেন বলেন- খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তবে ক্লিনিকের কাউকে পাওয়া যায়নি, সবাই পালিয়ে যায়। নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা ক্লিনিকটি তালাবদ্ধ করে দেই। এবং ক্লিনিকে ভর্তি রোগীদের অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করি।এ বিষয়ের মৃত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।