আজ : শুক্রবার, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীর সুলতানপুরে খাল খননের অর্থ হরিলুট! বিএডিসি ঠিকদারের বিরুদ্ধে দূর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ


প্রতিবেদক
জনতার মেইল.ডটকম

প্রকাশিত: ৫:০৪ অপরাহ্ণ ,১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ | আপডেট: ১১:৩৬ অপরাহ্ণ ,১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
রাজবাড়ীর সুলতানপুরে খাল খননের অর্থ হরিলুট! বিএডিসি ঠিকদারের বিরুদ্ধে দূর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ

মোঃ আলমাস আলী॥  প্রায় ১৮ লাখ ১২ হাজার টাকা ব্যয়ে বিএডিসি’র (সেচ প্রকল্প) অধীনে রাজবাড়ী সদর উপজেলার ভাটি সুলতানপুরে খালিশা-হাজরাখালী খাল পূণ:খননে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অনিয়ম-দূর্নীতি করায় গ্রামবাসীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। সাব-ঠিকাদার বেকুর মালিককে দিয়ে খনন কাজ করায় শুভংকরের ফাঁকির ঘটনা ঘটছে বলে এলাকাবাসী জানায়।

সরেজমিন অনুসন্ধানকালে জানা যায়, উপজেলার ভাটি সুলতানপুর ইউনিয়নের শেষ সিমানা রামকান্তপুর মাঠ থেকে খালিশা রামকান্তপুর হিন্দুপাড়া ব্রীজ হয়ে ফরিদপুর কুমার নদী পরানপুরের মূল নদীতে সম্পৃক্ত হয়েছে। ওয়াটার র্বোডের খনন করা খালটি ১৮ লাখ ১২ হাজার টাকা ব্যয়ে পূন:খনন করা হচ্ছে। সুলতানপুুরের রামকান্তপুরের মাঠ থেকে ফরিদপুর জেলার পরানপুর কুমার নদী পর্যন্ত ১৫০০ শ’ মিটার খাল পূণ: খননের  জন্য ঠিকাদার নিয়োগ হয়েছে। পটুয়াখালীর মিজানুর রহমান সিকদারের ঠিকাদারী  প্রতিষ্টানই খাল পূন: খননের কার্যাদেশ পায়। পটুয়াখালীর ঠিকাদার মিজানুর রহমান সিকদার সাব-ঠিকাদার আহম্মদ আলীর নিকট কাজটি বিক্রি করে দেয়। কিন্তু সাব-ঠিকাদার আহম্মদ আলী তার লভ্যাংশ ঠিক রাখতে অনিয়মের আশ্রায় নিয়েছেন বলে এলাকাবাসী জানায়।

১৩ ফেব্রুয়ারি-২২ রোববার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভাটিসুলতানপুরের শেষ সিমানায় নদীর পারে একটি অকেজু ভেকুসহ মেহেদী নামের একজন শ্রমিক অবস্থান করছেন। কাজের বিষয় নিয়ে তার নিকট জানতে চাইলে, ১২ ই- ডিসেম্বর কাজ শুরু হয়ে ১৯ শে জানুয়ারী ২০২২ইং খনন কাজটি শেষ হয়েছে, তবে কোন তদারকি কর্মকর্তা আসেন নাই বলে তিনি জানান। খাল খনন কাজ চলাকালীন সময়ে কোন  তদারকি কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে আসছেন বলে এলাকাবাসীর নজরে পড়েনাই। খালের দু‘পাড় উঁচু করে খালের গভীরতা দেখানো হয়েছে। খাল পূন:খনন কাজের কোথাও কোন কাজের তথ্য সম্বলিত সাইনর্বোড দেয়া হয়নি। সরকারী নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে ঠিকাদার তার খেয়ালখুশিমতো খাল সংস্কার  কাজ দ্রুত গতিতে শেষ করেছেন। নাব্য ফেরাতে খাল পূন: খননের নামে খাল কেটে ড্রেন তৈরী করা হয়েছে। খাল খনন করে ঐ কাটা মাটি আবার খালের উপরেই ফেলা হয়েছে। ফলে কাজের কাজ কিছু না হলেও খাল পুন: খননের নামে সরকারের ১৮ লাখ ১২ হাজার টাকা গচ্ছা যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। খালের পাড় বাঁধাই করা হয় নাই। খাল খননে কোন বকচড়া রাখা হয়নাই। দেওয়া হয়েছে শুভংকরের ফাঁকি। খাল খননের মাটি দিয়ে খালের পাড় বাঁধাই না করে খননের নামে এলোমেলোভাবে এস্কেভেটর(ভেকু) মেশিন দিয়ে খালের দুই পাশের মাটি চেছে আগাছা পরিস্কার করা হয়েছে। খালের  কিছু অংশ এখনো খনন কাজ বাকী রয়েছে। খালের কোনো কোনো জায়গায় এখনি ভাংঙ্গন ধরেছে। অভিযোগ রয়েছে, খালের পাড় বাধাই না করে ঔ মাটি দিয়ে কিছু কিছু লোকের (টাকার বিনিময়ে)  বাড়ীর উঠান বাধাঁই করা হয়েছে। যা দৃশ্যমান রয়েছে। খাল পাড় বাধাই না করায় রাস্তা ও বাড়ীঘর বিলীনের আশংখা রয়েছে। এতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে খালের দুই পাড়ে অবস্থিত বাড়ী-ঘর ও আবাদি জমি খালেই বিলীনের আশংখা করছেন স্থানীয়রা। গ্রামবাসী নানান অভিযোগ করে বলেন, কাজের ব্যাপারে অনিয়মের কথা বললেই ঠিকাদারের লোকজন ও ভেকু চালক হুমকি দিয়েছে। খনন কাজের সাইনর্বোড না থাকায় খাল খনন কাজে কোথায় কতটুকু চওড়া কিংবা  গভীরতা হবে তা এলাকাবাসী জানতে পারেনী বলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এদিকে, সাব-ঠিকাদার আহম্মদ আলী বলেন, কাজ নিয়ম অনুযায়ী করা হয়েছে। মূল ঠিকাদার মিজানুর রহমান সিকদার পটুয়াখালীকে তার মুঠোফোনে খাল খননের অনিয়মের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে ফোন কল কেটে দেন।

ঘটনাস্থলে সাব-ঠিকাদার আহম্মদ আলীর উপস্থিতিতে খাল খননের অনিয়ম-দূর্নীতির ব্যাপারে রাজবাড়ী বিএডিসি’র এসও ইসরাফিলের নিকট জানতে চাইলে, খাল খননে কোন অনিয়ম হয়নী বলে তিনি জানান।

Comments

comments