মোঃ আলমাস আলী॥ রাজবাড়ীর জেলা রেজিস্ট্রার গোলাম মাহবুব চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অনিয়মতান্ত্রিক নকল নবিশ নিয়োগের নামে বিধিবহির্ভূতভাবে ঘুষের বিনিময়ে কতিপয় নকল নবিশের মাধ্যমে প্রায় অর্ধশত ব্যাক্তির কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অনেকের কাছ থেকে টাকা নেবার পর দিয়েছেন ভুয়া নিয়োগ পত্র। টাকা ফেরত চাইতে গেলে মাদকসেবী ও মাস্তান দিয়ে দিয়ে দিচ্ছেন হুমকি-ধামকি।গোলাম মাহমুব নিজেও একজন মাদকসেবী। কোনোভাবেই থামছে না তার ঘুষ বাণিজ্য। দায়িত্বে অবহেলা ও স্বেচ্ছাচারিতাসহ নারী কেলেংকারীতেও তিনি রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন মর্মে প্রমান রয়েছে।
জানা যায়, জেলা রেজিস্ট্রার গোলাম মাহবুব রাজবাড়ীতে যোগদান করার পর থেকে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে নকল নবিশ ও অমেদারসহ বেশকিছু ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারীকে ভূয়াঁ নিয়োগ দেওয়ার নামে অর্থ হাতিয়েছে। মহা-পরিদর্শক নিবন্ধন-ঢাকা এর স্বাক্ষর জাল করে ভূঁয়া নিয়োগ প্রদান করেছেন এই জেলা রেজিস্ট্রার গোলাম মাহাবুব।
অপরদিকে, রাজবাড়ী জেলা রেজিস্ট্রার ও অফিসসহকারী সুতিকার বিরুদ্ধে নকল নবিশ পদে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে ঘুষ গ্রহন করার অভিযোগ এনে রাজবাড়ীতে সাধারন ডাইরী করেছেন ভূক্তোভোগী জাহানারা বেগম। যার ডাইরী নম্বার-১৮৫/২০ তারিখ ০৮/০৬/২০ইং। ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে বলে সুত্রটি দাবী করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভূক্তভোগী জাহানারা বেগগের ছেলে ইকলাস শেখ (২২) কে নকল নবিশ পদে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে দলিল লেখক সুজন শেখের পরিচিতির মাধ্যমে জাহানারা বেগমের নিকট থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিয়ে স্বাক্ষীদের সামনে বিভিন্ন সময় ও তারিখে জেলা রেজিস্ট্রার গোলাম মাহাবুব নগদ ৪,৫০,০০০/- (চার লাখ পঞ্চাশ হাজার) টাকা ঘুষ হিসাবে গ্রহন করেন। ভূক্তভোগীর ছেলে ইকলাস শেখকে কয়েক দফা আইজিআরের স্বাক্ষরিত ভূঁয়া নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়। কিন্তু নিয়োগের বিষয়টি নিবন্ধন অধিদপ্তর ঢাকায় তল্লাশী করলে সেখানে বৈধ নিয়োগের কোন প্রমান পাওয়া যায়নী। ভূক্তভোগী জাহানারা বেগম জেলা রেজিস্ট্রারের সদ্য নিকাহ করা (কথিত) ৪নং স্ত্রী, নকল নবিশ চাঁদনী ওরফে হুমাইয়া বেগম তার বাবা হায়দার মহরীর খানখানাপুর বাজার সংলগ্ন বিল্ডিং বাড়ীতে কয়েক দফা ঘুষের টাকা ফেরত চাইতে গেলে জেলা রেজিস্ট্রার গোলাম মাহাবুব টাকা দিব-দিচ্ছি বলে ঘুরাইতে থাকে। পরবর্তীতে তিনি মাস্তান দিয়ে হুমকি-ধামকি দেয়াসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ দিয়ে তার বাড়ী থেকে গলা ধাক্কা দিয়ে বাহির করে দেয়। পরিশেষে গত ০২/০২/২০ইং তারিখে আনুমানিক ১০ ঘটিকার সময় গোয়ালন্দ মোড়ে বাসস্ট্যান্ডে জেলা রেজিস্ট্রারের নিকট পাওনা টাকা ফেরত চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ করেন, এবং আমার মেয়ের জামাই দলিল লেখক সুজন শেখের লাইসেন্স বাতিল করার হুমকি প্রদান করেন মর্মে লিখিত অভিযোগে প্রকাশ করা হয়।
আরেক ঘটনা, নকল নবিশ বিউটির ভাই হারুনকে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে নগদ ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, সামছুর স্ত্রী হামিদার নিকট থেকে ৪,০০,০০০/- লাখ টাকা, সাংবাদিক রফিকের ছোট ভাইয়ের নিকট ১,৩০,০০০/- টাকা, আকবর মহরীর মাধ্যমে শামিমা নাসরিনের নিকট থেকে ৪,০০,০০০/- টাকা, বরিশাল বাড়ী পিএ/ড্র্রাইভার (ডিআরের প্রতিবেশী) পরশ খাঁনের নিকট বাড়ীর দলিল জমা রেখে ৩,০০,০০০/- এবং মটর সাইকেল বিক্রিয় করে ৮০ হাজার টাকা, কালুখালী জামিলের নিকট থেকে ৩,০০,০০০/- লাখ টাকা, আব্দুল আল মেহেদী পাংশার নিকট থেকে ১০,০০,০০০/- লাখ টাকা, রাজবাড়ী সদরের শামিম আহম্মেদ শুভ‘র মাধ্যমে ১১,০০,০০০/- লাখ টাকাসহ আরো অনেক লোকের কাছ থেকে চাকুরী দেওয়ার নামে জেলা রেজিস্ট্রার গোলাম মাহাবুব প্রায় দেড় থেকে ২ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহন করেছেন। নকল নবিশ চাদনী (হুমাইয়া) জেলা রেজিস্ট্রারের ৪র্থ স্ত্রী তিনিও চাকুরী দেওয়ার নামে স্বামীর ক্ষমতার সৎ ব্যবহার করেছেন। তিনি ও হাতিয়েছেন প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা। এই সকল অভিযোগই ভূক্তভোগীদের। ভুক্তভোগীরা নানা দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাননি।
তার ইয়াবা সেবনের ভিডিও ফাঁস হওয়ায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেদকের কাছে রঙ্খিত একটি ভিডিওতে যাকে ইয়াবা সেবন করতে দেখা যাচ্ছে তিনি রাজবাড়ী জেলা রেজিষ্টার গোলাম মাহবুব। তার বাসাতে নিয়মিত এভাবে চলে মাদকের আড্ডা। জেলায় তার ঘুষ বাণিজ্যের তদারকি করে এই মাদকসেবীরা।
ঘুষ গ্রহনের বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য জেলা রেজিসট্রার গোলাম মাহাবুরের মুঠো ফোনে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই। ফলে তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নী।
এ বিষয়ে, জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগমের সাথে মুঠোফনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, জেলা রেজিষ্ট্রার তার অধিনে নয়। তার কিছুই করার নাই।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ এস.এম. রিয়াজুল করিম
ফোনঃ০১৭৫১-৭৫৭৮৯২,০১৫৫৮-৫১৬৩৮২
কার্যালয়ঃ
পৌর নিউ মার্কেট, আই ভবন (২য় তলা, রুম নং-১২৫) ( জেলা স্কুলের সামনে), প্রধান সড়ক, রাজবাড়ী।