স্টাফ রিপোর্টার।। করোনাভাইরাসের কারনে কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলার একতারপুর গ্রামবাসীরা যাতে খাবারের কষ্ট না করে সেই লক্ষ্যে কর্মহীন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে শ্রীকৃষ্ণ শিক্ষা ও সংস্কৃতি সংঘ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়ে ৪০টি দরিদ্র পরিবারের খাবারের দ্বায়িত্ব নিয়েছে সংগঠনটি। আর্তমানবতার সেবায় নিয়োজিত থাকা শ্রীকৃষ্ণ শিক্ষা ও সংস্কৃতি সংঘের নিজস্ব অর্থায়নে ওই ৪০ পরিবারের মাঝে দফায় দফায় খাদ্য সামগ্রী সহায়তা করে চলেছে সংগঠনটির সদস্যরা। শুধু কি তাই? এছাড়াও, সংগঠনটি ওই এলাকার ২/৩ গ্রামের মানুষের মাঝে সচেতনামূলক হ্যান্ডবিল, ভাইরাসরোধক মাক্স, হ্যান্ড স্যানিটাইজারও বিতরণ করেছেন। সেই সাথে করোনাভাইরাস নিধনের জন্য একতারপুর গ্রামের মোড়ে মোড়ে হ্যান্ড ওয়াস কর্নার বসিয়েছে ও মানুষের বাড়িতে বাড়িতে ও রাস্তা-ঘাটে ব্লিসিং পাউডার মেশানো পানি দফায় দফায় স্প্রে করে চলেছে সংগঠনটির সদস্যরা।
এই, শ্রীকৃষ্ণ শিক্ষা ও সংস্কৃতি সংঘের কর্মকান্ড এখানেই শেষ নয়! ভবিষ্যতে দেশের খাদ্য সংকটে না পড়ে সে লক্ষ্যে তারা মানুষের জমিতে ফসল জন্মাতেও পরিশ্রম করে যাচ্ছে। সংগঠনটি মনে করছেন- এভাবে যদি দেশে দির্ঘদিন লকডাউন থাকে, আর মানুষ যদি কাজ-কর্ম করতে না-পারে, তাহলে দেশে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। সে কারনে সংগঠনের সদস্যরা একতারপুর গ্রামের আনাচে-কানাচে পড়ে থাকা বিভিন্ন মানুষের আবাদি-অনাবাদি জমিতে চাষাবাদ করে ফসল রোপন করে দিচ্ছে। যাতে করে একতারপুর গ্রামবাসীদের কিছুটা হলেও খাদ্য চাহিদা পূরন হয়। এসকল উন্নয়নমূলক ও সচেতনামূলক কাজের পাশাপাশি আবার খাদ্য বিতরণও করছে তারা।
তারই ধারাবাহিকতায় ২০ এপ্রিল-২০২০ সোমবার কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলার একতারপুর গ্রামের কর্মহীন ৪০টি দরিদ্র পরিবারের মাঝে ২য় দফায় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এ খাদ্য সামগ্রী মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পৌঁছে দিচ্ছে শ্রীকৃষ্ণ শিক্ষা ও সংস্কৃতি সংঘের সদস্যরা। খাদ্য সামগ্রী বিতরন অনুষ্ঠানে নিরাপদ বিশ্বাস, শুশান্ত কুমার ঘোষসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্র্গ ও সংগঠনটির নেতাকর্র্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, প্রথমদিকে ৫/৪/২০২০ তারিখে ২০টি দুস্থ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে নতুন আরো ২০টি কর্মহীন দরিদ্র পরিবারকে খুঁজে বের করে। ২য় ধাপে এবার মোট ৪০টি অসহায় পরিবারের মাঝে খাদ্যা সামগ্রী সয়ায়তা দেওয়া হয়।
বিতরণকৃত খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে- প্রত্যেক পরিবার প্রতি ৫ কেজি করে চাউল, ১ কেজি মটরের ডাউল, ২ কেজি আলু ও ২ কেজি আটা।
২১ এপ্রিল-২০২০ মঙ্গলবার দুপুরে এ সকল কর্মকান্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে, শ্রীকৃঞ্চ শিক্ষা ও সংস্কৃতি সংঘের সভাপতি হিরণ কুমার বিশ্বাস (এসআই) জনতার মেইলকে বলেন- আমাদের সংগঠনের জন্মলগ্ন থেকেই আর্তমানবতার সেবায় নিয়োজিত রয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য স্বেচ্ছায় সেবা দান করা, আর তাই দেশের এই ক্লান্তিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা সংগঠনের সদস্যরা দ্বায়িত্ব স্বরুপ সামান্য কাজ করে যাচ্ছি। দেশ বা জেলাব্যাপী কাজ করার মতো অর্থ ও জনবল আমাদের সংগঠনটির নেই। সে কারনে আমাদের সাধ্য অনুযায়ী গ্রাম/এলাকা ভিত্তিক কাজ করে যাচ্ছি। আমরা সচেতনামূলক হ্যান্ডবিল, ভাইরাসরোধক মাক্স, হ্যান্ড স্যানিটাইজারও বিতরণ করেছি, সেই সাথে একতারপুর গ্রামের মোড়ে মোড়ে হ্যান্ড ওয়াস কর্নার বসিয়েছি ও মানুষের বাড়িতে বাড়িতে ও রাস্তা-ঘাটে ব্লিসিং পাউডার মেশানো পানি দফায় দফায় স্প্রে করে চলেছে আমাদের সংগঠনের সদস্যরা। তিনি বলেন, আমাদের গ্রাম থেকে খুঁজে বেড় করে এই দূঃর্সময়ে আমরা কর্মহীন ৪০টি দরিদ্র পরিবারে খাদ্য সরবরাহের দ্বায়িত্ব নিয়েছি, তারা যাতে অভূক্ত না থাকে। যতদিন এই করোনা থাকবে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে ততদিন পর্যন্ত এসকল পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাব, এটা আমাদের শ্রীকৃঞ্চ শিক্ষা ও সংস্কৃতি সংঘের অঙ্গিকার।
হিরণ কুমার বিশ্বাস আরো বলেন- এভাবে যদি দেশে দির্ঘদিন লকডাউন থাকে, আর মানুষ যদি কাজ-কর্ম করতে নাপারে, তাহলে দেশে খাদ্য সংকট হতে পারে। সে কারনে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে ব্যাতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের গ্রামের আনাচে-কানাচে যে আবাদি-অনাবাদি জমি রয়েছে, আমাদের সংগঠনের সদস্যরা সেই জমি চাষ করে ফসল রোপন করে দিচ্ছে। যাতে আমাদের গ্রামের একটু হলেও খাদ্য চাহিদা মেটাতে পারি। তিনি বলেন- দেশের সকল জেলা/উপজেলা/ইউনিয়/ওয়ার্ড/গ্রাম পর্যায়ে সবাই যদি আমাদের মতো কাজ করে যেত, তাহলে ভবিষ্যতে দেশে খাদ্যের অভাব হবেনা বলে আমি মনে করি। এভাবে দেশের সবাই মিলেমিশে একসাথে যদি কাজ করি তাহলে শুধু করোনা কেন যে কোন দূর্যগ আমরা কাটিয়ে উঠতে পারবো আমি বিশ্বাস করি।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ এস.এম. রিয়াজুল করিম
ফোনঃ০১৭৫১-৭৫৭৮৯২,০১৫৫৮-৫১৬৩৮২
কার্যালয়ঃ
পৌর নিউ মার্কেট, আই ভবন (২য় তলা, রুম নং-১২৫) ( জেলা স্কুলের সামনে), প্রধান সড়ক, রাজবাড়ী।