আজ : বুধবার, ১১ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মধুখালীতে কাজের বেটি ফাতেমা হত্যা মামলা সিআইডিতে বদলী


প্রতিবেদক
জনতার মেইল.ডটকম

প্রকাশিত: ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ ,৭ মার্চ, ২০২০ | আপডেট: ১:০৭ পূর্বাহ্ণ ,৮ মার্চ, ২০২০
মধুখালীতে কাজের বেটি ফাতেমা হত্যা মামলা সিআইডিতে বদলী

এই সেই (অজ্ঞাত) শ্বাসরোধ করে হত্যা হওয়া কাজের মেয়ে ফাতেমা বেগম। ছবিঃ- জনতার মেইল.কম

মধুখালীতে কাজের বেটি ফাতেমা হত্যাকান্ড, দেড় বছরেও শনাক্ত হয়নি আসামী! মামলা সিআইডিতে বদলী।

মোঃ আলমাস আলী ॥ ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার কামারখালী বাজার চাদঁতারা মসজিদ সংলগ্ন রাজ্জাক শেখ (৯৬) এর বাড়ীর কাজের মহিলা ফাতেমা হত্যার দেড় বছর পূর্ণ হওয়ার পথে।অথচ পুলিশ এখনো এ হত্যার কোনো কুলকিনারা করতে পারেনি। আসামীরা এখনো অন্ধকারেই রয়ে গেছে। আসামী ধরাতো দুরের কথা এ হত্যার কোন ক্লু পর্যন্ত তারা উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। কাজের বুয়া ফাতেমা  হত্যাকান্ড ১৮ মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত অধরাই রয়ে গেল ঘাতকেরা। এলাকাবাসী  সুবিচারের আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন। অপরদিকে পুলিশের তেমন কোনো তৎপরতা না থাকায় ক্রমশ ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি। ফলে হত্যাকারীরা খুব সহজেই পার পেয়ে যাচ্ছে। এমন হতাশার কথাই জানিয়েছে কামার খালী বাজার এলাকার উপস্থিত জনগন।

তারা এ প্রতিবেদককে জানান- জেলার মধুখালী উপজেলার কামার খালী বাজার চাদঁতারা মসজিদ সংলগ্ন রাজ্জাক শেখ তিনি একজন মুসাফির মানুষ।  অসহায় গরীব মানুষদের খেদমদ কারী মানুষ হিসাবে তিনি অত্র এলাকায় পরিচিত। তারই বাড়ীতে কাজ করতে আসেন  ৪৫ বছর বয়সী পাগলী ফাতেমা নামক এক মহিলা। ফাতেমা কথা বলতেন কম। তিনি বেশীর ভাগ সময়ই চুপচাপ থাকতেন। ঘটনাস্থল রাজ্জাক শেখের বাড়ীতে আসার আগে ফাতেমা কামার খালী বাজারের হোটেলগুলোতে কাজ করতেন। রাজ্জাক শেখের বাড়ীতে কাজ করতেন ৫০ বছর বয়সী প্রতিবেশী রাবেয়া নামক অপর এক মহিলা। তিনিই ফাতেমাকে কাজের জন্য রাজ্জাক শেখের বাড়ীতে  নিয়ে আসেন। কয়েকদিন ১৫দিন পর ফাতেমার মরাদেহ রাজ্জাক শেখের চৌচালা ঘরের আড়ার সাথে রশি দিয়ে গলায় ফাঁশ লাগানো অবস্থায় দেখা যায়। বাড়ীর মালিক রাজ্জাক শেখ নিজেই মধুখালী থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়। পুুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন এবং লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।  এ বিষয়ে মধুখালী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। মামলা নং-২৩ তারিখ ১৯/০৮/১৮ইং।

অপরদিকে, ময়না তদন্ত রির্পোট পর্যালোচনা এবং প্রাথমিক তদন্ত দেখা যায়, ঘটনার দিন অজ্ঞাতনামা আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে ভিকটিম ফাতেমাকে শ্বাসরোধ করিয়া হত্যা করে। হত্যার মূল রহস্য আড়াল করতেই ফাতেমার মরাদেহ  ঘরের আড়ার সাথে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়। যাহা পেনাল কোড ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় অপরাধ। অতপর কাজের মেয়ে ফাতেমা হত্যার ঘটনায় মধুখালী থানার এসআই কামরুজ্জামান বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ২৬/১৮ তারিখ ২৫/০৯/১৮ইং।

গত ১৯/৮/১৮ইং তারিখ রাজ্জাক শেখের বাড়ীর চৌচালা ঘর থেকে কাজের মেয়ে ফাতেমার মরাদেহ  উদ্ধার করে পুলিশ। ফাতেমা হত্যার মোটিভ ১৮ মাসেও পরিস্কার হয়নি। ভয়াবহ এই হত্যাকান্ডের মোটিভ খুঁজতে তৎপর ফরিদপুর জেলার সিআইডি পুলিশ। এ প্রতিনিধির সাথে আলাপ কালে তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি, গুপ্ত ঘাতককে খুজঁতে এলাকাবাসীর সহযোগীতা কামনা করেন।  হত্যার মোটিভ উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি। যদি কোন ব্যক্তি মৃত ফাতেমার সন্ধান পেয়ে থাকেন, তবে ফরিদপুর সিআইডি পুলিশ অফিসকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।

বাড়ীর মালিক রাজ্জাক শেখ কাজের মেয়ে ফাতেমার ঠিকানা জানতেন না, ফাতেমা চুপচাপ থাকতেন, তার মাথায় সমস্যা ছিল, কেউ কেউ রহিংগা নারী বলেও ধারনা করতেন, রাজ্জাক শেখ মসজিদে থাকা অবস্থায় খবর পান ফাতেমা গলায় রশি দিয়েছে, তখনো ফাতেমা মারা যায়নি, এলাকার মহিলারা ফাতেমাকে পানি খাইতে দেয়, পানি গলায় আটকে যায়, তখন অনেকেই ফাতেমার গলায় হাত দিয়ে পানি নামাতে চেষ্টা চালায়, ফলে ফাতেমার গলায় হাতের দাগ পড়তে পারে বলে বাড়ীর মালিক রাজ্জাক শেখ এ প্রতিবেদককে জানায়।

ঘটনারদিন পুলিশ সন্দহ ভাজন ঐ বাড়ীর কাজের লোক অলিউর নামক এক ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করেন, কিছুক্ষন পর অলিউরকে ছেড়ে দেয়া হয় বলে জানা যায়। অপরদিকে, কাজের মেয়ে ফাতেমাকে কারা, কী কারনে হত্যা করলো তা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচিত হয়ে আসছে। সূত্র জানায়, ফাতেমার গলায় নতুন মোটা রশি দিয়ে ঝুলানো অবস্থায় দেখা যায়।

Comments

comments