আজ : বৃহস্পতিবার, ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোন পার্টি নির্বাচন করবে কি করবেনা এটা তাদের দলীয় সিদ্ধান্তঃ শেখ হাসিনা


প্রতিবেদক
জনতার মেইল.ডটকম

প্রকাশিত: ৪:২৮ অপরাহ্ণ ,৫ মে, ২০১৮ | আপডেট: ৫:২৮ অপরাহ্ণ ,৫ মে, ২০১৮
কোন পার্টি নির্বাচন করবে কি করবেনা এটা তাদের দলীয় সিদ্ধান্তঃ শেখ হাসিনা

জনতার মেইল ডেস্ক ।। বিএনপি নির্বাচনে আসা, না আসার বিষয়টি সম্পূর্ণ তাদের ব্যাপার । একাদশ সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়ার দলকে আনতে তিনি কোনো উদ্যোগ নেবেন না, স্পষ্ট বলে দিলেন- আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।
তিনি বলেছেন, দুই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে ।
কয়েকটি দেশ সফর করে আসা প্রধানমন্ত্রী বুধবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এলে তার কাছে আগামী নির্বাচনে বিএনপির শর্তের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে শেখ হাসিনা বলেন- “নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্র, কোন পার্টি নির্বাচন করবে, কোন পার্টি নির্বাচন করবে না, এটা তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত । একজনের দলীয় সিদ্ধান্তের উপরে আমি তো আর চাপিয়ে দিতে পারি না, তোমাদেরকে নির্বাচন করতেই হবে ।”
বিএনপির গত নির্বাচনে বর্জন করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তারা ঠেকানোর চেষ্টা করেছিল এবং মানুষকে হত্যা করেছে ।
খালেদার মুক্তির বিষয়ে সরকারের কিছু করার নেই বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা ।
তিনি বলেন, “তাদের নেত্রীকে যদি রাজনৈতিকভাবে জেলে পাঠাতাম, তাহলে ২০১৪, ১৫, ১৬তেই পাঠাতে পারতাম, কিন্তু সেটাতো করিনি । আমি রাজনৈতিকভাবে হ্যারাসও করিনি, গ্রেপ্তারও করিনি ।”
২০১৫ সালে মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে । ৪৮ জন লোক নিয়ে এক বাড়িতে থাকলেন, নির্দেশ দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করলেন । “কোর্ট রায় দিয়েছে । এখানে আমাদের কাছে দাবি করে তো কিছু হবে না । যেখানে কোর্ট রায় দিয়েছে আইনগতভাবে এগিয়ে গেছে । আইনগতভাবে যেহেতু কারাগারে গেছে । সেহেতু আইনগতভাবে মোকাবেলা করতে হবে ।”


উন্নয়নের কারণে বিএনপি ভোটে এলেও আওয়ামী লীগের জয়ে আশাবাদী শেখ হাসিনা ।
তিনি নির্বাচন নিয়ে বলেন, উন্নয়ন করার পরও যদি জনগণ ভোট না দেয় এবং তারা যদি ক্ষমতায় না আসতে পারেন তাহলে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়ে যাবে । “ইলেকশনে জেতাটা আমি জনগণের উপরেই ছেড়ে দিচ্ছি । জনগণ যদি মনে করে যে, তাদের উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত থাকুক, তারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবে ।
“ভবিষ্যতে আমরা যেই পরিকল্পনাগুলো নিয়েছি, আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হবে, মধ্যম আয়ের দেশ তো হবেই হবে । ইনশাল্লাহ আওয়ামী লীগই সেটা করতে পারবে ।
২০১৫ সালে ২৪ জানুয়ারি আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতে শোকগ্রস্ত মা খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে তার বাসায় গিয়েও ফটক বন্ধ করে ঢুকতে না দেওয়ার কথাও বলেন শেখ হাসিনা ।

কারাগারে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত সেবিকা রাখার ব্যাপরে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন- নিরাপরাধ ফাতেমা বেগমকে ‘মেইড সার্ভেন্ট’ হিসাবে দিয়ে অন্যায় করেছেন । “আপনি বলেন, সাজাপ্রাপ্ত কোন আসামিকে কে কোথায় মেইড সার্ভেন্ট সাপ্লাই দিয়েছে?”
ফাতেমার জন্য সোচ্চার না হওয়ায় মানবাধিকার সংগঠনগুলোর উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তাকে জেল খাটতে হচ্ছে খালেদা জিয়ার কারণে, সে কি সাজাপ্রাপ্ত আসামি ? কোনো অধিকারসংস্থা টু শব্দ করে না, বিনা কারণে একজন মহিলা কেন জেল খাটবে, আমাকে বলেন ।”
তারেককে ‘ফেরানো হবে’
তারেক রহমানের ফেরানোর বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “হ্যাঁ, অবশ্যই সে একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি, সেটা ভুলে গেলে চলবে না । তার যে অপরাধগুলো, সেগুলো আমাদের দেশেরই শুধু না, এফবিআই প্রতিনিধিও এসে কিন্তু সাক্ষী দিয়ে গেছে । তারপরে সে সাজাপ্রাপ্ত । দুইটা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, আরও মামলা রয়েছে । অনেক দেশ থেকে এ ধরনের আসামি ধরে নিয়ে আসা বা আনার চেষ্টার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে । তার সম্পর্কে আলোচনা করছি । ”
আদালতে দণ্ডিত তারেককে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করায় বিএনপি নেতাদেরও সমালোচনা করে তিনি বলেন- “একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে বিএনপির মতো একটা রাজনৈতিক দল, যারা নিজেদের মনে করে সব থেকে বড় দল, সব থেকে জনপ্রিয়, শক্তিশালী দল; তো সেই দলে কি একজন উপযুক্ত নেতা বাংলাদেশে খুঁজে পেল না ? “একজন সাজাপ্রাপ্ত, পলাতক আসামিকে তাদের চেয়ারপারসন বানাতে হল এবং সে বিদেশে থেকে নেতৃত্ব দেয় । রাজনীতিতে এতবড় দেউলিয়াত্ব আর কী আছে?”

ছাত্রলীগের সম্মেলন নিয়ে বলেন,
প্রত্যক্ষ ভোটে না হলে সমঝোতার মাধ্যমে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ভোটের আবার কিছু ভালোও আছে, মন্দও আছে, এটাও দেখতে হবে । আমরা চাই উপযুক্ত নেতৃত্ব এবং ছাত্র । “একটা বয়সসীমার বাধা আছে । ওই বয়সসীমার মধ্যে সত্যিকারে যে দক্ষ ও মেধাবী ছেলে তারা যেন নেতৃত্বে আসে, সেটা আমরা চাই । সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করব । যদি দেখা যায়, ভোটের মাধ্যমে উল্টাপাল্টা আসে, সেটা নিশ্চয় গ্রহণযোগ্য হবে না । এটা মাথায় রাখতে হবে ।”
আগামী ১১ ও ১২ মে কেন্দ্রীয় সম্মেলনের তারিখ নির্ধারিত আছে আওয়ামী লীগের সহযোগী ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের । এর উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি থাকবেন শেখ হাসিনা ।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ছাত্রলীগের কনফারেন্স যেভাবে হওয়ার হবেই । যদি সমঝোতা না হয়, ভোট হয় ।”
এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “প্রথম স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোট কিন্তু আমরা শুরু করেছি । এটা নির্ভর করে, যদি সমঝোতা করে নেওয়া যায়… যদি সমঝোতা না হয়, তাহলে ভোট হবে ।”

Comments

comments