নদী ভাঙ্গনের হুমকি স্বরুপ বালু মহল ইজারা বন্ধের দাবি জানালেন-রাজবাড়ীর এমপি
প্রকাশিত: ৩:১৭ অপরাহ্ণ ,২ ডিসেম্বর, ২০১৯ | আপডেট: ১:৩০ পূর্বাহ্ণ ,৪ ডিসেম্বর, ২০১৯
রাজবাড়ী প্রতিনিধি।। যে সমস্ত বালু মহল নদী ভাঙ্গনের জন্য হুমকি স্বরুপ, সে সকল বালু মহল ইজারা দেওয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন- সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী।
২রা ডিসেম্বর-১৯ সোমবার বেলা ১১.টার দিকে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা বালু মহল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় তিনি একথা বলেছেন।
অনুষ্ঠিত সভায়, রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক ও জেলা বালু মহল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি দিলসাদ বেগমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- কমিটির উপদেষ্টা রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী, রাজবাড়ী-২ আসনের এমপি জিল্লুল হাকিম, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খন্দকার মুশফিকুর রহমান, রাজবাড়ী পানিউন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শফিকুল ইসলাম সেখ ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রমূখ। এ সভায় কমিটির অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ইজারা ও বালু উত্তোলন বন্ধ করার দাবি জানিয়ে রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি বলেন- পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর তীরবর্তী এলাকার হাজার হাজার একর জমি, ঘর-বাড়ী, স্কুল, মসজিদসহ নানা প্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। বালু উত্তোলন বন্ধ করা না হলে নদী ভাঙ্গন অব্যাহত থাকবে। সে কারনে রাজবাড়ী সদর উপজেলার ধাওয়াপাড়র ঘাট সংলগ্ন বালু মহল সহ যে সমস্ত বালু মহল নদী ভাঙ্গনের জন্য হুমকি স্বরুপ, সে সকল বালু মহল ইজারা না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন- রাজবাড়ী জেলারে পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার বালি উত্তোলন করে সড়ক পথে রাস্তার ধারণক্ষমতার চেয়ে অধিক লোড বহনকারী দশ চাকার ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন জেলায় বালি পরিবহন করা হয়। এবং নৌপথে বলগেট ও নৌকায় করে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করে থাকে। চর খাজনার নামে এ সব বলগেট, ট্রাক ও নৌকা থেকে চাঁদা আদায় করে থাকে ইজারাদারের লোকজন। পদ্মার পানির উপর দিয়ে যাওয়ায় খাজনার নামে চাঁদা আদায় করা হয় প্রতি ঘনফুটে ৩.টাকা। চর চাঁদা ও পানির ভাড়া বাবদ দুই তরফা মিলে প্রতি ফুট বালির খাজনার নামে চাঁদা আদায় করা হয়ে থাকে ৫টাকা। ট্রাক ও বলগেট থেকে এভাবে প্রতিদিন প্রায় ২০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়।
তিনি আরো বলেছেন- সাম্প্রতি রাজবাড়ী জেলা পানিউন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তথ্য গোপন করে এক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। যে প্রতিবেদনে রাজবাড়ীর হাজার হাজার একর জমি, ঘর-বাড়ী, স্কুল, মসজিদসহ নানা প্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে বিলিন হবার তথ্য তুলে ধরা হয়নি। যার প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বালু উত্তোলন করা যাবে কিনা তা পরীক্ষা-নিরিক্ষা করবেন। প্রতিনিধি দল পরীক্ষা-নিরিক্ষা শেষে শুধুমাত্র বালু উত্তোলন করার পক্ষে মতামত দিলেই ভবিষ্যতে তা উত্তোলন করার অনুমতি দেয়া হবে। আর তা না হলে পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করা হবে। সেই সাথে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সভার সভাপতি ও কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন- রাজবাড়ীতে ৬টা বালু মহল ইজারা দেয়া হয়। এর মধ্যে ফুরশার হাট বালুমলটিতে বালু উত্তোলন করা যায়না বলে তা বন্ধ আছে। বাকি ৫টা বালু মহল এক সনা ইজারা দেয়া আছে। প্রতি বছরের ১ বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত এ সব বালু মহল ইজারা দেয়া হয়। তবে জেলা বালু মহল ব্যবস্থাপনা কমিটির অন্যতম সদস্য, রাজবাড়ী সদর উপজেলার চর জাজিরা, চর সিংহদিয়া ও চর পদ্মা বালু মহল ইজারা প্রদান না করতে সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি কাজী কেরামত আলী অনুরোধ জানিয়েছেন। তার দাবী পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে সদর উপজেলার নদীর তীরবর্তী এলাকার হাজার হাজার একর জমি, ঘর-বাড়ী, স্কুল, মসজিদসহ নানা প্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। বালু উত্তোলন বন্ধ করা না হলে নদী ভাঙ্গন অব্যাহত থাকবে।