বিশেষ প্রতিনিধি ।। নারী নেতৃত্বে সফলতার স্বীকৃতি স্বরুপ সম্মানজনক ‘গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । পুরস্কার গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী নারীদের অধিকার নিশ্চিত করতে একটি নতুন জোট গঠনের তাগিদ দেন ।
২৭ এপ্রিল-১৮ শুক্রবার সন্ধ্যায় সিডনিতে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারের গালা ডিনারের পর এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটি তুলে দেওয়া হয় ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সম্মানসূচক অ্যাওয়ার্ড প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তার ছোট বোন শেখ রেহানা ।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ‘গ্লোবাল সামিট অফ উইমেন’ বাংলাদেশসহ এশীয় প্র্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নারী শিক্ষা ও ব্যবসায়িক উদ্যোগের বিষয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের জন্য এই পুরস্কার দিয়েছে ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার এই ‘গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ যেসব নারী তাদের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য নিজেদের ক্ষমতার পরিচয় দিয়েছেন সেসব নারীদেরক উৎসর্গ করেছেন ।
এ অনুষ্ঠানে নৈশভোজের পর শেখ হাসিনার হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়ার আগে তার সম্পর্কে একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয় ।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, গ্লোবাল উইমেন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত এবং সম্মানবোধ করছি । আমি বিশ্বব্যাপী নারীদের এই পুরস্কার উৎসর্গ করছি; যারা ভাগ্য পরিবর্তনে নিজেদের ক্ষমতার পরিচয় দিয়েছেন ।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুলের আমন্ত্রণে এই উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড নিতে তিনদিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিডনি গিয়েছেন । এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অস্ট্রেলিয়ায় আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ম্যালকম টার্নবুলকেও ধন্যবাদ জানান ।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারী ক্ষমতায়ন এবং নারী কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে চার দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন বলেন, প্রথমত; নারীর সক্ষমতা নিশ্চিত করতে প্রচলিত একমুখী ধারণা পরিহার করতে হবে । দ্বিতীয়ত; প্রান্তিক ও ঝুঁকির মুখে থাকা নারীরা এখনও কম খাদ্য পাচ্ছে, স্কুলে যেতে পারছে না, কম মজুরিতে কাজ করছে এবং সহিংসতার শিকার হচ্ছে । কোনো নারী ও মেয়েকে পেছনে রাখা উচিৎ নয় । তৃতীয় বিষয় হলো নারীদের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সুনির্দিষ্ট স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলা করতে হবে এবং চতুর্থত; জীবন ও জীবিকার সমস্ত ক্ষেত্রে নারীদের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে হবে ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে পর পর দুই দফায় তার নেতৃত্বাধীন সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকার কারণেই সুষ্ঠু, অধিকারভিত্তিক, লিঙ্গ সংবেদনশীল এবং বাস্তবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সুযোগ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন । তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন নারী ক্ষমতায়নের রোল মডেল ।
বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মহান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন সংগ্রামে বাঙালি নারীদের ত্যাগ ও অবদানের কথা স্মরণ করেন । বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির কথা উল্লেখ করেন তিনি ।
অনুষ্ঠানে নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ও অধিকার আদায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী । বাংলাদেশের মানুষের অধিকার বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়নের নিজের সংগ্রামের কথাও শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ২০১৭ সালের প্রতিবেদনে ১৪৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৭তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম স্থানে । নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে ১৫৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম । তিনি আরো বলেন, নারীদের প্রতি সমর্থন ও অধিকার নিশ্চিতে একটি নতুন জোট গঠন করতে হবে । যে যার জায়গা থেকে নারীদের জন্য আমাদের কাজ করতে হবে ।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ এস.এম. রিয়াজুল করিম
ফোনঃ০১৭৫১-৭৫৭৮৯২,০১৫৫৮-৫১৬৩৮২
কার্যালয়ঃ
পৌর নিউ মার্কেট, আই ভবন (২য় তলা, রুম নং-১২৫) ( জেলা স্কুলের সামনে), প্রধান সড়ক, রাজবাড়ী।