আজ : মঙ্গলবার, ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমাদের তরুণেরা একটু প্রশিক্ষণ পেলেই এগিয়ে যাবে; সজীব ওয়াজেদ জয়


প্রতিবেদক
জনতার মেইল.ডটকম

প্রকাশিত: ৮:৩৬ অপরাহ্ণ ,২২ অক্টোবর, ২০১৯ | আপডেট: ৯:৪৮ অপরাহ্ণ ,২৩ অক্টোবর, ২০১৯
আমাদের তরুণেরা একটু প্রশিক্ষণ পেলেই এগিয়ে যাবে; সজীব ওয়াজেদ জয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়নে দেশের তরুণরা সরকারের কাছে হাত পেতে নেই। দেশ গড়তে তারা নিজেরাই আজ এগিয়ে এসেছে। আমি তাদের দেখে গর্বিত। তারা নিজ উদ্যোগে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশ্বে একটা অবস্থান তৈরি করে নিচ্ছে।

২২ অক্টোবর-১৯ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর রেডিসন হোটেলে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) ও ‘ইয়াং বাংলা’ আয়োজিত ‘ইয়াং বাংলা উইথ সজীব ওয়াজেদ’ আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে তরুণদের কাছ থেকে দেশ নিয়ে তাদের ভাবনার কথা শোনেন সজীব ওয়াজেদ। এ সময় তরুণদের বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তরও দেন তিনি।

আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

ইয়াং বাংলার বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা শেষে প্রশ্ন-উত্তর পর্বে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘আমরাই পারি, আমাদের তরুণরাই পারে’। আমাদের তরুণেরা একটু প্রশিক্ষণ পেলেই এগিয়ে যাবে। এখনো বিশ্বে রোবোটিকস, আইওটি, এআই এবং এ ধরনের সেক্টরগুলোর বিশেষ কোষ নেতৃত্ব নেই। আমাদের তরুণরা সঠিক প্রশিক্ষণ পেলে এই ক্ষেত্রগুলোতে নেতৃত্বে আসতে পারবে। বর্তমানে কোন উন্নয়ন কার্যক্রম এককভাবে শহরকেন্দ্রিক নয়। আমরা দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে ইন্টারনেট ছড়িয়ে দেয়ার জন্য ফাইবার অপটিক্যাল লাইন পৌঁছে দিচ্ছি। এখন পর্যন্ত আড়াই হাজার ইউনিয়নে তা পৌঁছে গেছে। সেই সঙ্গে স্টার্টআপ তৈরি, ইনোভেশন এবং উদ্যোক্তা তৈরির জন্য নেয়া সরকারী প্রশিক্ষণগুলো কিছুদিনের মধ্যেই সারাদেশ থেকে আয়োজন করা হবে বলেও তিনি জানান। স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিয়ে সব স্কুলে একটি করে ওয়াই-ফাই জোন করার বিষয়েও সরকার কাজ করছে।

সজীব ওয়াজেদ জয় তরুণদের অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, আপনার সন্তানকে নিজ পায়ে দাঁড়াতে শেখান। ২৫ বছর বয়সে কেউ বাচ্চা বা শিশু থাকে না অথচ আমার দেশে ২৫ বছর বয়সী একজন নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। সে একটি ব্যাংক এ্যাকাউন্টও খুলতে পারে না। তাহলে ভবিষ্যতে তারা নিজ পায়ে দাঁড়াবে কিভাবে। তাদের চাকরির কথা না বলে নিজ উদ্যোগে কাজ করতে বলুন। তাদের ভুল করতে দিন। কেননা নিজের ভুল থেকে যে শিক্ষা হয়, তা আমরা সহজে ভুলি না। এ সময় উপস্থিত তরুণদের হাতে নেয়া বেশ কিছু উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে সজীব ওয়াজেদ বলেন, শুধু বিসিএসের চিন্তা করা স্বার্থপরের মতো হয়। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অফিস। নিজের পরিবার নিয়ে ভাল থাকা। তারপর পেনশন কিন্তু আপনি সরকারের দিকে তাকিয়ে না থেকে নিজে যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তা থেকে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। আপনার আয় থেকে আয়কর লাভ করে রাষ্ট্র। আপনার প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের আয় থেকে রাষ্ট্র আয় পাবে। রাষ্ট্র সেই আয় দেশের জনসাধারণের জন্য কাজে লাগাতে পারবে। তাই নিজ উদ্যোগে কাজ করুন। আপনারা নিজেরা কোম্পানি খুলুন।

আজকের অনুষ্ঠানে অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে সজীব ওয়াজেদ বলেন, শুধু বিসিএসের চিন্তা করা স্বার্থপরের মতো এক চিন্তা। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অফিস। নিজের পরিবার নিয়ে ভালো থাকা। তারপর পেনশন।

এ সময় জয় আরও বলেন, ‘এখনকার তরুণেরা দেশের দিকে হাত পেতে থাকে না। আজকের তরুণদের দেখে আমি গর্বিত। তারা সরকারের কাছে হাত পেতে নেই। আমরাই পারি, আমাদের তরুণেরাই পারে। তারা নিজ উদ্যোগে দেশকে এবং দেশের মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।’

অনুষ্ঠানে ইয়াং বাংলার নেয়া ‘ভিশন ২০২১ ইন্টার্নশিপ’ সম্পর্কে আলোচনায় তরুণদের দেয়া প্রস্তাবের ভিত্তিতে সজীব ওয়াজেদ বলেন, আমরা সব মন্ত্রণালয়ে ইন্টার্নশিপ চালু করতে চাই। কিন্তু যে মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিব এ্যাক্টিভ, তারা দ্রুত এ কার্যক্রম শুরু করেছে। বাকিরা হয়ত শুরু করবে। তবে জেলা পর্যায়ে ডিসি অফিসে ইন্টার্নদের কাজে লাগানোর প্রস্তাবটি খুবই ভাল। আমরা এই প্রস্তাবের নিরিখে কাজ করব। আজ ইয়াং বাংলার মাধ্যমে যে উদ্যোগগুলো নেয়া হচ্ছে তা কিন্তু সরকারী উদ্যোগ নয়। মাথায় রাখবেন, ইয়াং বাংলা সিআরআইয়ের প্রতিষ্ঠান। আর সিআরআই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গবেষণা সংস্থা। সুতরাং আপনারা ইয়াং বাংলা’র মাধ্যমে যে দেশ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছেন তা আওয়ামী লীগের কারণে সম্ভব হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফারহাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর রিসার্চ এ্যান্ড ইনফরমেশনের সমন্বয়ক তন্ময় আহমেদ। এ ছাড়াও অংশগ্রহণকারী হিসাবে ছিলেন- ইয়াং বাংলা’র সকল জেলা কো-অর্ডিনেটর,শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের কো-অর্ডিনেটর এবং ২০১৭ সালের জয় বাংলা ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ড বিজয়ী জহির ইকবাল নান্নু, বিগত তিনবার জয় বাংলা ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ড বিজয়ী, ক্যাম্পাস এ্যাম্বাসেডর ও স্টুডেন্ট টু স্টার্টআপের অংশগ্রহণকারীরা।

উল্লেখ্য, ইয়াং বাংলা দেশের বৃহত্তম ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম ইয়াং বাংলা বরাবরের মতোই তরুণদের দেশ গঠনের উপযোগী করে গড়ে তুলতে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৪ সালে আত্মপ্রকাশ লাভের পর থেকে যুগোপযোগী ও প্রগতিশীল এই সংগঠনটি তরুণদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তার বৈচিত্র্যময় সব কার্যক্রমের মাধ্যমে। দেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের কাছে অনুপ্রেরণার নাম জয় বাংলা ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ড। দেশ গঠনে তরুণদের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এই এ্যাওয়ার্ড বর্তমানে কয়েক হাজার তরুণ উদ্যোক্তাকে দেশ গঠনে অনুপ্রেরণা প্রদান করছে।

Comments

comments