নিজস্ব প্রতিবেদক।। আমি মনে করি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে পতিতাপল্লী বা ঘাটের চাঁদাবাজীর সাথে জড়িত কোন ব্যক্তির সাথে আদর্শিক কারণে কোন ব্যালেন্স বা আপোষ হতে পারেনা, বলেন- রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী।
গত ১৭ জুলাই ২০১৯ ইং তারিখে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় “ গোয়ালন্দে আরেক এরশাদ শিকদার” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। উল্লেখিত প্রতিবেদনের একাংশে স্থানীয় সংসদ সদস্যের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রকাশিত বক্তব্য সম্পর্কে প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী।
প্রতিবাদলিপিতে তিনি উল্লেখ করেছেন রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে কেন্দ্রীয় নির্দেশনার আলোকে আমি বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজবাড়ীর দু’টি আসনের নির্বাচন, সদ্য সমাপ্ত উপজেলা নির্বাচন সহ অন্যান্য জাতীয় ও স্থানীয় কর্মসূচী অন্য যে কোন সময়ের তুলনায় বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করে আসছি। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় নির্দেশনার আলোকে জেলা-উপজেলা সম্মেলন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের অংশ হিসেবে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কাউন্সিল সম্পন্ন করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে দলের ত্যাগী ও দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত, পদ বঞ্চিত অনেক নেতা-কর্মীর দায়িত্ব পালনের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
দৈনিক যুগান্তরে জনাব কাজী কেরামত আলী এমপি’র উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে ভাল-মন্দের সাথে ব্যালেন্স করে তিনি চলেন। আমি মনে করি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে পতিতাপল্লী বা ঘাটের চাঁদাবাজীর সাথে জড়িত কোন ব্যক্তির সাথে আদর্শিক কারণে কোন আপোষ হতে পারেনা।
দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর সমর্থন ও চাহিদার কারণে সুবিধাবাদী ও স্বার্থান্বেষী কেউ নেতৃত্ব থেকে বাদ পড়লে তার দায়ভার অন্যের উপর চাপানোর সুযোগ নেই।
দলের কাছে ব্যক্তিগতভাবে আমার কোন চাওয়া পাওয়া নেই। আমার বিরুদ্ধে দলের অভ্যন্তরে কোন গ্রুপিং বা ডিভিশন করার কোন নজির আজ পর্যন্ত নেই।
জনাব কাজী কেরামত আলী এমপির উদ্ধৃতি নিয়ে দৈনিক যুগান্তরে আমার বিরুদ্ধে দলে ডিভিশন করার যে, প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়েছে তা একেবারেই অবান্তর, অসত্য ও ভিত্তিহীন।
প্রতিবাদকারী-
কাজী ইরাদত আলী
ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক
রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগ
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই ২০১৯ ইং তারিখে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় “ গোয়ালন্দে আরেক এরশাদ শিকদার” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের অংশ বিশেষ তুলে ধরা হলোঃ-
ঘাটের ফেরিওয়ালা থেকে থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, অসংখ্য হত্যাকাণ্ডের গডফাদার ও পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী, স্থানীয় এমপির আশ্রয়-প্রশ্রয়ে সে এখন আরও বেপরোয়া, পুলিশও বিব্রত- এমন সব চাঞ্চল্যকর তথ্য রয়েছে খোদ পুলিশের গোপন প্রতিবেদনে।
‘দৌলতদিয়া পতিতালয়ের ভেতরে বাড়িওয়ালা লাভলী ও সালমী হত্যা, ছাত্রলীগ নেতা জাহাঙ্গীর মার্ডার, পলাশ মার্ডার, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির মেধাবী ছাত্র সাইফুল ইসলাম রিপন হত্যা, আপন দুই ভাই সাদ্দাম ও রুবেলকে হত্যাসহ সব ঘটনায় নুরু মণ্ডলের হাত রয়েছে বলে জনশ্রুতি আছে।
এসব মামলার এজাহারে নুরু মণ্ডলের নাম না থাকলেও মূল কলকাঠি নুরু মণ্ডলই করে থাকেন।’ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ওরফে নুরু মণ্ডলের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সম্পর্কে পুলিশের গোপন প্রতিবেদনে এভাবেই তাকে উপস্থাপন করা হয়েছে।
আর এলাকার মানুষের কাছে তিনি খুলনার সেই ‘এরশাদ শিকদার’-এর চেয়েও ভয়ংকর। ২০ বছর ধরে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। অনেকে তাকে পদ্মাপরের ত্রাসও বলে থাকেন।
যখন যে দল ক্ষমতায় আসে, তখন রাতারাতি তিনি সেই দলের সদস্য বনে যান। এজন্য সবসময় তিনি ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থেকে নির্বিঘ্নে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেছেন। সরকারি দলের স্থানীয় নেতারাও তাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন।
এভাবেই অধরা এক শীর্ষ সন্ত্রাসী হয়ে উঠেছেন এই নুরু মণ্ডল। স্থানীয় পুলিশের খাতায় তিনি সর্বহারা, খুনি ও শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত।
২০০৮ সালের পর রাজনৈতিক তদবিরে তার নাম পুলিশের তালিকা থেকে বাদ পড়ে। তবে তার সব কর্মকাণ্ডের রেকর্ডপত্র সংরক্ষিত আছে পুলিশের অপরাধ নথিতে। রাজবাড়ী জেলা পুলিশ বলছে, নুরু মণ্ডলের সন্ত্রাসী কার্যক্রম এখনও অব্যাহত আছে। দুর্ধর্ষ এই সন্ত্রাসীর নিয়ন্ত্রণে দৌলতদিয়া এলাকাজুড়ে রয়েছে।
নিকটাত্মীয়দের সমন্বয়ে ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ, যার নেতৃত্ব দেন তিনি নিজেই।
খোদ পুলিশের গোপন প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে, ‘নুরু মণ্ডল একসময় দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরিওয়ালার কাজ করে জিবিকানির্বাহ করতেন। শিক্ষাজীবনে তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডিও পেরুতে পারেননি।
কালের বিবর্তন ও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বর্তমানে তিনি দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের স্বঘোষিত রাজা বলে পরিচিত। ‘স্থানীয় সংসদ সদস্যের (কাজী কেরামত আলী) প্রত্যক্ষ মদদে তিনি এখন রাজনীতিবিদও।
এই পরিচয়ের আড়ালে এমন কোনো কাজ নেই, যা তিনি করেন না। ঘাটের ফেরিওয়ালা থেকে ভয়ংকর সন্ত্রাসী এই নুরু মণ্ডল এখন বিপুল বিত্তবৈভবেরও মালিক।’
পুলিশ প্রতিবেদনের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির খারাপ দিকের দায় আমি নেব না। খারাপ মানুষ সবসময়ই খারাপ। দোষী হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তার বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে। নুরু মণ্ডলের বিরুদ্ধে এর আগেও নানা ধরনের অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে।’
আপনার ছত্রছায়ায় নুরু মণ্ডল ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার অভিযোগ করা হয়েছে কেন জানতে চাইলে বলেন, ‘না না, এসব ঠিক না। সে তো গোয়ালন্দ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তবে কথা হচ্ছে, আমার ভাই (কাজী এরাদত) রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর দলে ডিভিশন করে ফেলছে। বিষয়টি আমি নেত্রীকেও বলব।’
তিনি বলেন, ‘আমি দায়িত্বে (জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) থাকাকালীন ব্যালেন্স করে চলতাম। বুঝেন তো রাজনীতিতে ভালো-মন্দ নিয়েই চলতে হয়।’
বিঃ দ্রঃ- (যুগান্তরের এই সংবাদের অংশ আরো আছে)
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ এস.এম. রিয়াজুল করিম
ফোনঃ০১৭৫১-৭৫৭৮৯২,০১৫৫৮-৫১৬৩৮২
কার্যালয়ঃ
পৌর নিউ মার্কেট, আই ভবন (২য় তলা, রুম নং-১২৫) ( জেলা স্কুলের সামনে), প্রধান সড়ক, রাজবাড়ী।