সাবেক মাদক সেবনকারী সুপারের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জাল করার অভিযাগ
প্রকাশিত: ৯:০৯ অপরাহ্ণ ,২৪ এপ্রিল, ২০১৯ | আপডেট: ১১:১৪ অপরাহ্ণ ,২৫ এপ্রিল, ২০১৯
স্টাফ রিপোর্টার।। সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ সাঈদুজ্জামান খান এবং জেলা শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষর জাল করে এডহক কমিটি অনুমোদনের অভিযাগ পাওয়া গেছে রাজবাড়ী সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের চরশ্যামনগর দাখিল মাদ্রাসার সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সুপার মুহাম্মদ কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ সাঈদুজ্জামান খান জানান, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সুপার মুহাম্মদ কামরুজ্জামান তারটা সহ অন্যান্য ব্যক্তিদের স্বাক্ষরও জাল করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তেই প্রমাণিত হয়েছে। তার পরও জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় তিনি সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পারমিস সুলতানাকে প্রধান করে এক সদস্য বিশিষ্ঠ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সুপার মুহাম্মদ কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ২৪শে এপ্রিল-১৯ বুধবার এক সদস্য বিশিষ্ঠ একটি তদন্ত কমিটি গঠন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসকের কাছে ওই অভিযোগটি দাখিল করেছেন ওই মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মোঃ আব্দুল মতিন মিয়া।
গত ৪ এপ্রিল-১৯ জেলা প্রশাসককে দেয়া অভিযোগ পত্রে বলা হয়েছে, গত ২ ফ্রেব্রুয়ারী সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সুপার মুহাম্মদ কামরুজ্জামান রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি ও সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ সাঈদুজ্জামান খান এবং জেলা শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষর জাল করে ৫ ফেব্রুয়ারী অনলাইনে এডহক কমিটি চেয়ে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বরাবর আবেদন করেন। যদিও তিনি (অভিযোগকারী) সংশ্লিষ্ঠদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত ২ ফেব্রুয়ারী অনলাইনে এডহক কমিটি চেয়ে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বরাবর আবেদন করেন। পরবর্তীতে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড অনলাইন থেকে কপি উত্তোলন করে দেখতে পান জাল স্বাক্ষর দিয়ে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সুপার মুহাম্মদ কামরুজ্জামানের কমিটি অনুমোদ এবং ওই অনুমোদিত কমিটি জমা দিয়ে সুকৌশলে ব্যাংকে টাকা তোলার প্রক্রিয়া করা হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে তিনি গত ১৯ মার্চ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সেকশন অফিসারের সাথে যোগাযোগ করেন এবং ব্যাখ্যাও প্রদান করেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পারমিস সুলতানা জানান, মাদক সেবন, অনিয়ম, দূর্ণীতি এবং নৈতিক চরিত্রের অবক্ষয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত তদন্ত কমিটি তথ্য প্রমাণ গ্রহণ শেষে সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রদান করে। ওই প্রতিবেদন প্রদানের পূর্বেই ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সুপারকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত এবং ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে মোঃ আব্দুল মতিন মিয়াকে নিযুক্ত করেন। এরই মাঝে বরখাস্ত হওয়া সুপার মুহাম্মদ কামরুজ্জামান সুকৌশলে রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি ও সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ সাঈদুজ্জামান খান এবং জেলা শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষর জাল করে অনলাইনে এডহক কমিটি চেয়ে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বরাবর আবেদন করে ওই কমিটির অনুমোদ করান। পরবর্তীতে বিষয়টি তারা জানতে পেয়ে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ডিজিসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। যে কারণে গত ২১ এপ্রিল বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের রেজিষ্টার ওই কমিটি বাতিল করে ভারপ্রাপ্ত সুপার মোঃ আব্দুল মতিন মিয়ার করা কমিটিকে অনুমোদন দেন। ইতোমধ্যেই তদন্ত কাজ শুরু করা হয়েছে।
তবে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বরখাস্ত হওয়া সুপার মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, তার কাছে সকল প্রকার প্রমাণাদি রয়েছে। অভিযোগকারীর অভিযোগ সঠিক নয়।