শুধু শিক্ষার্থী নয় শিক্ষকদেরও কম্পিউটার শিখতে হবে- রাজবাড়ীতে মন্ত্রী মস্তফা জব্বার
প্রকাশিত: ৩:৪৪ অপরাহ্ণ ,৮ মার্চ, ২০১৯ | আপডেট: ১১:৪৭ অপরাহ্ণ ,৮ মার্চ, ২০১৯
উজ্জল চক্রবর্ত্তী-স্টাফ রিপোর্টার।। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসে প্রযুক্তি (কম্পিউটার) ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের পড়াতে হবে।আগামীতে শিক্ষকরা যদি কম্পিউটার দ্বারা ছাত্র/ছাত্রীদের লেখা-পড়া করাতে না পারেন তাহলে ২০২৩ সালের পরে শিক্ষকদের চাকরি থাকবে না। আমি স্পষ্ট বলে দিলাম।সে কারনে, শুধু শিক্ষার্থী নয় শিক্ষকদেরও ২০২১ সালের মধ্যে কম্পিউটার শিখতে হবে।
৮ মার্চ-১৯ শুক্রবার দুপুরে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকীর আব্দুল জব্বার স্কুল এন্ড কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপযুক্তি মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার এ কথা বলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, আমি বলছি না আমাদের শিক্ষকদের কম্পিউটার বিজ্ঞানী হতে হবে। তবে তাদের কম্পিউটার পরিচালনায় প্রাথমিক জ্ঞান টুকু থাকতেই হবে। যেমন বিভিন্ন সফটওয়ার ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো, গুগল সার্চসহ সংশ্লিষ্ট লিঙ্কটি শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেয়ার মত যোগ্য হতে হবে। এইটুকু যোগ্যতা যদি কোন শিক্ষকের না থাকে তবে সেই শিক্ষকের আগামী ২০২৩ সালের পরে চাকরি থাকবে না।আমি স্পষ্ট বলে দিলাম। আগেভাগেই জানিয়ে দিলাম, কারন পরে বলবেন আগে বললেন না কেন?
২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ৯০ শতাংশ মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর হাতে থাকবে এ দেশের তৈরী মোবাইল সেট। বর্তমানে আমাদের তৈরী কম্পিউটার বিদেশে রফতানি হচ্ছে।আমাদের দেশের স্বল্প শিক্ষিত নারী শ্রমিকরা সর্বোচ্চ মান সম্পন্ন ল্যাপটপ ও মোবাইল সেট তৈরী করছে। অল্প সময়ের মধ্যে তথ্য-প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ যে ভাবে এগিয়েছে তা অনেক বড় বড় দেশ কল্পনাও করতে পারে না। বাংলাদেশ এখন শুধুই কৃষি নির্ভর দেশ নয়। আগামীতে জাতীয় আয়ের বড় একটা অংশ আসবে প্রযুক্তি খাত থেকে।যা ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।
আমাদের দেশের মত মেধাবী শিশু পৃথিবীর কোন দেশে জন্মায় না বলে আমার বিশ্বাস।শিশুদের প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করুন। আমি কথা দিচ্ছি প্রযুক্তির সাথে শিশুরা নিরাপদ থাকবে।ইতিমধ্যে অন্তত ২০ হাজার অশ্লীল সাইট বন্ধ করা হয়েছে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে বাংলাদেশে সকল ক্ষতিকর সাইট তালাবন্ধ করা হবে।আমি মন্ত্রী হিসেবে, আমাদের সন্তানদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ নিয়ন্ত্রণ শুরু করেছি। বর্তমানে সেই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের নিয়ন্ত্রণে ৪টি টিভি চ্যানেল সম্প্রচারিত হচ্ছে। আগামী এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশের সকল টিভি চ্যানেল এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচারিত হবে।
এছাড়াও, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলায় এই স্যাটেলাইট কাজে আসবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট শুধু নামের বিষয় নয়, যে কাজ গুলো আমরা অন্যের উপর নির্ভরশীল ছিলাম সেগুলো এখন আমরা নিজেরা করতে পারব।’
মন্ত্রী আরো বলেন, পরিশেষে আবারো বলছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে ঘোষনা দিয়েছেন।আমরা সেটা ২০২১ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে প্রতিটি জেলা/উপজেলায় বিভিন্ন স্কুলে “শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব” স্থাপন করেছি।দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আরো ল্যাব স্থাপন করা হবে। সে কারনে, শুধু শিক্ষার্থী নয় শিক্ষকদেরও কম্পিউটার শিখতে হবে।
রাজবাড়ী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ফকীর আব্দুল জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আরহাজ্ব কাজী কেরামত আলী। রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী, বাংলাদেশ পরমানু শক্তি কমিশনের সাবেক পরিচালক জালাল উদ্দিন মিয়া, রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাকিব খান।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন- গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল ইসলাম, গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবায়েত হায়াত শিপলু, গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ।
এর আগে, দৌলতদিয়া রেষ্ট হাউস মাঠ প্রাঙ্গনে তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।