আজ : বুধবার, ১১ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আওয়ামীলীগ অফিসে অগ্নিসংযোগ ও বোমা নিক্ষেপ ঘটনার মামলায় আতিয়ার গ্রেফতার


প্রতিবেদক
জনতার মেইল.ডটকম

প্রকাশিত: ৫:৫৩ অপরাহ্ণ ,১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ | আপডেট: ৯:৩৩ অপরাহ্ণ ,১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮
আওয়ামীলীগ অফিসে অগ্নিসংযোগ ও বোমা নিক্ষেপ ঘটনার মামলায় আতিয়ার গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক।। গত ৩/১২/২০১৮ তারিখ আনুমানিক রাত ১১.টার দিকে রাজবাড়ী জেলা সদরের মিজানপুর ইউনিয়নের ৫-নং ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগ অফিসে অগ্নিসংযোগ ও হত্যার উদ্দ্যেশ্যে নেতা-কর্মিদের উপর বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় ৪/১২/১৮ তারিখে দায়েরকৃত জি.আর-৫৬৬ নং মামলার এজাহার নামীয় আসামী আতিয়ার রহমান (৫৩) কে রোববার সকালের দিকে গ্রেফতার করেছে রাজবাড়ী সদর থানা পুলিশ। আটকের পর দুপরের দিকে রাজবাড়ী আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়।

গ্রেফতার কৃত ব্যাক্তি, রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের মৃত তাছের আলী মন্ডলের ছেলে ও মিজানপুর ইউপি পরিষদ চেয়ারম্যান। তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা রয়েছে যাহা, রাজবাড়ী সদর থানার এফআইআর নং-৩২, ১৯শে এপ্রিল ২০১২ সালের জিআর নং-১১৭, তাং ধারাঃ ১৪৩/৩২৩/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/৪২৭/১০৯/ পেনাল কোড ১৮৬০, এই মামলায় এজাহারে অভিযুক্ত আসামী আতিয়ার রহমান (৫৩)।

মামলার এজাহারে বর্ণিত, গত ৩/১২/২০১৮ ইং তারিখ আনুমানিক রাত ১১.টার দিকে বাদী দলীয় লোকজনসহ মিজানপুর ইউনিয়নের ৫-নং ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগ অফিসে নির্বাচনী মিটিং শেষে অফিসের বাহিরে যাওয়ার সাথে সাথে এজাহার নামীয় আসামীসহ অঙ্গাতনামা আরো ৩০/৩৫ জন আসামীসহ দলবদ্ধ হইয়া বাদী ও তার সঙ্গীয়দের হত্যার উদ্দ্যেশে পরপর ২ টি বোমা নিক্ষেপ করে। বোমার শব্দে বাদী তার লোকজনসহ আতঙ্কগ্রস্থ হইয়া দিকবিদিক ছুটাছুটি করে পালাইয়া আত্নরক্ষা করে। বাদীসহ তার লোকজন পালিযে যাওয়ার পর উপরোক্ত আসামীসহ তার সহযোগীরা আওয়ামীলীগ অফিসে প্রবেশ করিয়া অফিসের অগ্নিসংযোগ করে।আসামীদের দেওয়া আগুনে অফিসে থাকা চেয়ার টেবিল ফ্যান টেলিভিশনসহ অন্যান্য মালামাল পুড়িয়া অনুমান ১ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন হয়। এই ঘটনায়, মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ৫-নং ওয়ার্ডের সাধারন সম্পাদক বাদী হয়ে ১। আতিয়ার রহমান (৫৩) পিতা মৃত তাছের আলী মন্ডল সাং মহাদেবপুর ইউ: মিজানপুর উপজেলা রাজবাড়ী সদর রাজবাড়ী, ২। মোঃ সাজেদুল বিশ্বাস সাজ্জাদ (৩৫) পিং মৃত আবুল হোসেন গ্রাম মজলিশপুর থানা/জেলা রাজবাড়ী, ৩। মোঃ শাকিল সরদার (২৫) পিতা মোঃ ছামাদ সরদার গ্রাম ভবানীপুর থানা/জেলা রাজবাড়ীসহ অঙ্গাতনামা আরো ৩০/৩৫ জনকে আসামী করা হয়।

২ ও ৩ নং আসামী জেল হাজতে আছে। আজ আতিয়ার রহমানকে গ্রেফতার করা হয়।

এ ঘটনায়, পুলিশ তদন্ত রিপোর্ট থেকে জানাযায় যে, তদন্তে প্রাপ্ত  গ্রেফতারকৃত আসামীরাসহ মামলার আসামীরা গত ইং ৩/১২/২০১৮ তারিখ রাত্র ১১.ঘটিকার সময় পরস্পপর যোগসাজশে পরিকল্পিতভাবে মিজানপুর ইউনিয়নের ৫-নং ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগ অফিসে ককটেল বিষ্ফরন ও অগ্নিসংযোগ করিয়া উক্ত ঘটনা সংগঠিত করিয়াছে। মর্মে তদন্তকালে আসামীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক নির্ভরযোগ্য তথ্যাদী পাওয়া গিয়াছে। মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই মোঃ আরিফুজ্জামান মিয়া।

উল্লেখ্য, ৬ জুন-১৮ তারিখে জনতার মেইল.কম’ এ প্রকাশিত।

ভিজিএফ এর চাল বিতরন কার্ড ইউপি চেয়ারম্যান কতৃক পুরষ ও মহিলা ইউপি সদস্যদের মধ্যে নয়-ছয় করে অনিয়মতান্ত্রীক ভাবে ভাগ-বাটোয়ারা করাকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি নালিশী অভিযোগ করায় একই উইপির ৭,৮,৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য মালেকা বেগমকে অফিস কক্ষে প্রকাশ্যে দিবালোকে জনতার সন্মুখে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বেইজ্জিতি ও সন্মানহানি করে এবং মারপিটেরও হুমকি দিয়েছে রাজবাড়ী জেলা সদরের মিজানপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান।

এ বিষয়ে ৫/৬/১৮ইং তাং মঙ্গলবার দুপুরে মালেকা বেগম জনতার মেইল.কমকে বলেন, আসছে ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষ্যে আমাদের মিজানপুর ইউনিয়নের গরীব মানুষের জন্য ১০কেজী করে চাউল বিতরনের ২ হাজার ৬শত ভিজিএফ কার্ড এসেছে বলে চেয়ারম্যান জানান। এই ২হাজার ৬শত কার্ডের মধ্যে রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি ও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, সংরক্ষিত মহিলা এমপি ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান=এদের জন্য নাকি ১ হাজার কার্ড রেখে দিয়ে আমাদের ইউপি পরিষদের জন্য দিয়েছে ১হাজার ৬শতটি কার্ড।
সেখান থেকে চেয়ারম্যান নিয়েছে ৪শত কার্ড ও প্রত্যেক পুরুষ সদস্যদের বরাদ্দ দিয়েছে ১৪০/১৫০টি করে কার্ড এবং প্রত্যেক মহিলা সদস্যদের জন্য বরাদ্দ দিয়েছে মাত্র ৩৬টি ভিজিএফ কার্ড।

নারী-পুরুষের এই বৈষম্য-ব্যবধানানের প্রতিকার চেয়ে গত ২৪/৫/২০১৮ইং তারিখে রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি নালিশী অভিযোগ করায় চেয়ারম্যান সাহেব আমার উপরে মনখুন্ন হয়।

মালেকা বেগম আরো বলেন, এরপর গত ৩/৬/১৮ইং তারিখে রাজবাড়ী বাজারের মধ্যে থাকা আমাদের ইউপি অফিসে দুপুরের দিকে হত দরিদ্র কর্মসংস্থানের তালিকা আনতে যাই । সেখানে আমাদের মিজানপুর ইউপি সেক্রেটারী (সচিব) মস্তফা ভাইয়ের নিকট তালিকা চাইতেই চেয়ারম্যান আমার দিকে রক্ত চক্ষু করে রাগাম্বিত হয়ে বলে- এই মালেকা তুই এই অফিসে আইছিস কিজন্যে ? তুই কোনো তালিকাই পাবিনা আর এখানেও আসবিনা, এখানে তোর কোন অধিকার নেই।

আমি মালেকা তখন বলেছি, আপনিও জনগনের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এখানে এসছেন আমিও জনগনের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এখানে এসেছি, আপনারও যে অধিকার আমারও সেই একই অধিকার, আসবোইতো। একথা বলায় চেয়ারম্যান আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে বেইজ্জতি ও সন্মানহানী করে, চেয়ারম্যান তখন সেক্রেটারীকে বলে মালেকার তালিকা এখনই ফেলেদাও।
আর তুই মালেকা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিস তোর এতবড় সাহস, তুই সেখানে যা, দেখি আমার কি করতে পারে ? তুই যদি না যাস তোর কিন্তু বাঁশ দিয়ে পিটাতে পিটাতে অফিস থেকে বেড় করে দিব। এ ঘটনার বর্ননা দিতেই বুকফাটা কষ্টে কাঁদতে শুরু করেন ইউপি সদস্য মালেকা বেগম। একথা বলার সময় তার স্বামী মন্টু সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

মিজানপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান কতৃক তার এ সন্মানহানী ও বেইজ্জতি ঘটনার জন্য সরকারের নিকট বিচারের দাবি জানান ইউপি সদস্য মালেকা বেগম।

এ ঘটনায়, পরিষদের সকল পুরুষ ইউপি সদস্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে উল্টো মালেকা বেগমকেই খারাপ বলছেন। তবে অন্যান্য প্রত্যাক্ষদর্শীরা ভয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে রাজি নন।

ঘটনা তদন্তে জানাযায়, চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান হচ্ছে বিএপি’র প্রভাবশালী নেতা, আর মহিলা ইউপি সদস্য মালেকা বেগম আওয়ামীলীগ মাইন্ডের হওয়ায় তার উপরে আগে থেকেই রাগ ছিল চেয়ারম্যানের। সে কারনেই এমন খারাপ আচরন করেছে চেয়ারম্যান।

Comments

comments