গোয়ালন্দ উপজেলা সংবাদদাতা-মোঃ সোহাগ মিয়া।।দৌলতদিয়া, দেবগ্রাম, ছোটভাকলা ইউনিয়নের মানুষ রিলিফ চায়-না, চায় নদী শ্বাষন।এটাই তাদের দাবি!
পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের মানচিত্র থেকে মুছে যাচ্ছে বিভিন্ন ওয়ার্ড ও গ্রাম।পদ্মার ভাঙনে প্রতিদিন বিলীন হয়ে যাচ্ছে নতুন নতুন এলাকা ও গ্রামের ঘরবাড়ি গাছপালা, ফসলি জমি, মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
গতকাল দুপুরে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ঢল্লাপাড়া গ্রামে পরিদর্শনে গেলে সেখানে দেখা যায়, পদ্মা নদীর প্রবল স্রোতে থেমে থেমে ভেঙে চলছে নদীর পাড়। ফলে নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
ঢল্লাপাড়া গ্রামের নিয়ামত মীর মালত (৬৮) জানান, ৪৫ বছর পূর্বে তাদের বাড়ি নদী থেকে ৫ কিলোমিটার অদূরে বিশ্বনার্থপুর গ্রামে ছিল। পদ্মা নদীর ভাঙনের ফলে ঢল্লাপাড়া গ্রামে এসে নতুন বাড়ি নির্মাণ করি। এখানেও ভাঙনের ফলে গত ১ সপ্তাহে গ্রামের অন্তত ৩ শতাধিক ঘরবাড়ি বিলিন হয়ে গেছে। অবশিষ্ট ৫০টি বাড়ি যেকোন সময় পদ্মায় বিলিন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এলাকায় দরিদ্র পরিবারের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে।তিনি আরো বলেন- সবাই শুধু এসে এসে দেখে যায়, কেউ কিছু করেনা, নদীতে ভাঙ্গলে মানুষের যে কি দুঃখ কষ্ট হয়, তা আপনারা বুঝবেননা। তবে জনতার মেইল.কমের মাধ্যমে সরকারের কাছে আমাদের একটাই দাবি- আমরা রিলিফ চাইনা, চাই নদী শ্বাষন।আমাদের বাড়ী-ঘড়, জমি-জমা বাঁচাতে চাই, আপনারা নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে আমাদের বাঁচান।
৩ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মোঃ সেলিম রেজা জানান, উত্তর দৌলতদিয়ার ১৭টি মৌজার মধ্যে প্রায় ১২টি মৌজাই পদ্মায় বিলিন হয়ে গেছে।পদ্মা নদীর ভাঙনে গত ৫ বছর যাবৎ কয়েকটি ওয়ার্ড বিলিন হয়ে যাওয়ায় দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের স্থানীয় নির্বাচন বন্ধ রয়েছে। গ্রামের অভাবি লোকেরা ভিটা বাড়ি ও ফসলি জমি হারিয়ে মহাসড়ক, বেড়িবাধ ও রেল লাইনের পাশে আশ্রয় নিয়েছে। একাধিক ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মধ্যে কয়েকটি পরিবার হচ্ছেন-ইদ্রিস মীর মালত, আকবর শেখ, মইনুদ্দিন মাস্টার, আনোয়ার সরদার, গেদন সরদার, আজাহার, নেওয়াজ ফকির, লিয়াকত প্রমুখ। তাহারা ঘরবাড়ি হারিয়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে। দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ঢল্লাপাড়া, আফসার শেখেরপাড়া, নোহাই মন্ডলপাড়া, কিয়ামদ্দিন মেম্বারের পাড়া, কাচারি ডাঙা, ইছাইল শিবরামপুর, দেবগ্রাম, বেথুরী, মধু সরদার পাড়া, জয়নাল মিস্ত্রির পাড়া, মুন্সীপাড়া, আমিন ম-লের পাড়া প্রভৃতি গ্রাম পদ্মা নদীর প্রবল ভাঙ্গনে মানচিত্র থেকে মুছে গেছে।
এর আগে, দৌলতদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুরুল ইসলাম মন্ডল এবং দেবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আতর আলী সরদার ইউনিয়নবাসীদের সঙ্গে নিয়ে মানব বন্ধন কর্মসূচীর মাধ্যমে পদ্মা নদীর ভাঙন থেকে তার এলাকা রক্ষার জন্য জোর দাবি করেছে।
গত শুক্রবার শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ আলহাজ কাজী কেরামত আলী, রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী, গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু নাসার উদ্দিন ও রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা লঞ্চযোগে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে। এসময় পদ্মার তীর এলাকায় হাজার হাজার গ্রামবাসী প্রতিমন্ত্রীর নিকট জানায়, আমরা ত্রানের চাউল ও টাকা চাইনা চাই পদ্মা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য নদী শাসন।প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদীভাঙন রক্ষার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ এস.এম. রিয়াজুল করিম
ফোনঃ০১৭৫১-৭৫৭৮৯২,০১৫৫৮-৫১৬৩৮২
কার্যালয়ঃ
পৌর নিউ মার্কেট, আই ভবন (২য় তলা, রুম নং-১২৫) ( জেলা স্কুলের সামনে), প্রধান সড়ক, রাজবাড়ী।