নিজস্ব প্রতিবেদক।। সরকারী নিষেধাজ্ঞা ও ইউপি পরিষদের বিচার-শালিস অমান্য করে অবৈধ ড্রেজার দ্বারা বিভিন্ন মানুষের জমি থেকে জোড় পূর্বক মাটি কেটে বিক্রি করে চলেছে গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাউজানি গ্রামের মাটি খেকো মিনু সরদার গং। শুধু কি তাই?এ ঘটনায় ভুক্তভূগী জমির মালিক থানায়ও অভিযোগ দায়ের করলেও থামছেনা মাটি খেকোর দল। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদনেও সেটাই দেখা গেছে। এ ঘটনায় এলাকা উত্তপ্ত সৃষ্টি হয়ে রেয়েছে। প্রশাসনের দ্রুত কঠোর হস্তক্ষেপে ড্রেজারটি জব্দ করে ধ্বংস করা উচিৎ বলে এলাকার সাধারন মানুষ মনে করেন।
ঘটনার সূত্রে জানাযায়, রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়ন (৮নং ওয়ার্ড) পূর্ব তেনাপচা গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বার খন্দকারের ছেলে ভুক্তভূগী জমির মালিক আব্দুল খালেক খন্দকার ও তার আরো ভাইদের মিলে ৬ শরীকের নামে সেখানে ৩২ বিঘা জমি রয়েছে। কিছু জমি পদ্মার কোলের মধ্যে বেশিরভাগ রয়েছে ডঙ্গায়। মাটি খেকোরা সেই কোলের জমিতে জোড় পূর্বক ড্রেজার বসাইয়া মাটি কাটিয়া জমির ক্ষতিসাধন করিতেছে। আবার দেখা গেছে ড্রেজার কতৃক ক্ষতিসাধন এলাকার আশপাশে রাজ্জাক সরদার, মমিন সেখ, দেলোয়ার সরদার, রহিম সেখ, কুদ্দুস সেখ, আবুল শেখসহ আরো বিভিন্ন মানুষের বসত বাড়ি রয়েছে। সে বাড়ি গুলো ভাঙ্গনের হুমকির সন্মূখিন। তারা ভয়ে কিছু বলেনা। যে জমি থেকে মাটি কেটে চলছে, সেই জমির পরিচয় হচ্ছে- গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাউজানি মৌজায় দিয়ারা ৩৭ নং খতিয়ানভুক্ত ২২৭ নং দাগের জমি। এ ভাবে মাটি কাটতে থাকলে ডাঙ্গার আবাদী জমি ভেঙ্গে পরবে কোলের মধ্যে, ফলে বিশাল ক্ষতিগ্রস্থ হবে জমির মালিক আব্দুল খালেক খন্দকার গংদের।
এ বিষয়ে ১০ আগষ্ট শুক্রবার বিকেলে মাঠ পর্যায়ে তদন্ত কালে ভুক্তভূগী জমির মালিক আব্দুল খালেক খন্দকার ও আব্দুল কাশেম খন্দকার এ প্রতিবেদক রিয়াজুল করিমকে বলেন, আমাদের ৬ শরীকান্তের মোট জমি ৩২ বিঘা সেই জমির কিছু আছে নদীর কোলের মধ্যে আর বেশির ভাগ ডাঙ্গায় রয়েছে আবাদী জমি। মিনু সরদার ও তার ভাইয়েরা মিলে আমাদের দখলীয় জমিতে জোড় পূর্বক ড্রেজার বসাইয়া মাটি কাটিয়া জমির ক্ষতিসাধন করিতেছে। উক্ত জমি থেকে মাটি কাটা বাঁধা দিতে গেলে দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাউজানি গ্রামের মৃত সোহরাব আলী সরদারের ছেলে ইসলাম সরদার (৪৫) ও তার ভাই মিনু সরদার (৩৫) এবং একই গ্রামের মোঃ আব্দুল শেখের ছেলে রফিক শেখ (৪০) জোটবদ্ধ হইয়া আমাদের হুমকি-ধামকী দেয়।
তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে প্রতিকার পাইবার জন্য আমি গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদে অভিযোগ করি, সেখানে বাদী ও বিবাদীকে ডেকে একটি শালিসী বৈঠক করে বিচারকরা আমার জমি থেকে মিনু সরদার গংদের ড্রেজার উঠিয়ে নেওয়ার কথা বলে। সেই শালিস বোর্ডের সেই শিদ্ধান্ত অমান্য করে মিনু সরদার গংরা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। জোড়পূর্বক ড্রেজার চালিয়ে মাটি কাটতেই থাকে। পরবর্তিতে উপায়অন্ত না পাইয়া আমি রাজবাড়ীর বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে কার্যবিধি ১৪৪ ধারায় মিস পিটিশন দায়ের করে। মিস,পি নং-৩৬০/১৮, স্মারক নং ৮২২, তারিখ ২৯/৭/১৮। আদালত থেকে ১৪৪ ধারা বলবত রেখে মাটি খেকো বিবাদী মিনু সরদার গংকে সমন জারী করে। আদালতের সেই জারীকৃত কার্যবিধি ১৪৪ ধারা অমান্য করিয়া আমার দখলকৃত মাটি কেটেই চলছে। এরপর আবার আমি গোয়ালন্দ থানায় একটি মামলা করি পুলিশ তদন্ত করে গছে, তার পরেও ড্রেজার ওঠাচ্ছেনা।আমার জমি রক্ষার জন্য, আমি স্থানীয় সরকার প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী জানান, যখন পুলিশ আসে তখন তারা ড্রেজার মেশিন বন্ধ করে দেয়, পুলিশ চলে গেলে আবার মাটি কাটা শুরু করে দেয়। প্রশাসনের উচিৎ ড্রেজার ধ্বংস করে দেয়া।
এ বিষয়ে, গোয়ালন্দ থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোঃ ওলিয়ার রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শ করে একটি তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। তার সেই প্রতিবেদনে উল্যেখ করেছেনে যে, বাদী একজন অতি সহজ সরল ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তাই তিনি আইনের আশ্রয় নিয়েছেন।
পক্ষান্তরে, বিবাদীরা সমাজের মোড়ল মাতুব্বার হিংস্র প্রকৃতির মানুষ, তারা বাংলাদেশের প্রচলিত আইন কিছুই মানেনা। তাই তারা কার্যবিধির ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করিয়া নিজ ক্ষমতা বলে বাদীর জমিতে ড্রেজার বসাইয়া মাটি কাটিয়া বাদির বাদীর জমি ক্ষতি সাধন করিতেছে। এমতাবস্থায়, বিবাদীদের প্রতি গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করিয়া তাদেরকে আটক করিয়া বিচারের কাঠগড়ায় নিয়া এই ড্রেজার মেশিন বিজ্ঞ আদালতের ধার্যকৃত তারিখ পর্যন্ত বন্ধ করা যাইতে পারে।
বিবাদীরা (আসামী) হচ্ছে, গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাউজানি গ্রামের মৃত সোহরাব আলী সরদারের ছেলে ইসলাম সরদার (৪৫) ও তার ভাই মিনু সরদার (৩৫) এবং একই গ্রামের মোঃ আব্দুল শেখের ছেলে রফিক শেখ (৪০) জোটবদ্ধ হইয়া পূর্বের জারীকৃত কার্যবিধি ১৪৪ ধারা অমান্য করিয়া বাদীর নালিশি জমিতে জোড় পূর্বক ড্রেজার বসাইয়া মাটি কেটে বাদীর ক্ষতি সাধন করিয়া চলিতেছে।
মিস,পি নং-৩৬০/১৮, ধারা কার্যবিধি ১৪৪, স্মারক নং ৮২২, তারিখ ২৯/৭/১৮ বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত, রাজবাড়ী বরাবর পুলিশ এ প্রতিবেদন দিয়েছেন।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ এস.এম. রিয়াজুল করিম
ফোনঃ০১৭৫১-৭৫৭৮৯২,০১৫৫৮-৫১৬৩৮২
কার্যালয়ঃ
পৌর নিউ মার্কেট, আই ভবন (২য় তলা, রুম নং-১২৫) ( জেলা স্কুলের সামনে), প্রধান সড়ক, রাজবাড়ী।