স্টাফ রিপোর্টার।। ডিবি পুলিশের ভাষ্য; গোপন সংবাদের ভিত্তিতে, বৃহস্পতিবার বিকেলে এসআই মোজাম্মেল হক, এসআই মোতালেব হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স অভিযান চালিয়ে রাজবাড়ী বাজারের মৃধা মাকের্টের বন্ধু টেলিকম এর সামনে হতে ৪০০ পিছ ইয়াবাসহ মোঃ ফজলুল হক(৩২) নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে। এ সময়, তার সহায়তাকারী হিসাবে মোঃ জামাদুল আওয়াল কাউছার(৩০) কে তার দোকান থেকে ১টি মোবাইলসহ গ্রেফতার করে।
মোঃ ফজলুল হক রাজবাড়ী জেলা সদরের কামালদিয়া কান্দি গ্রামের মৃত সোহরাব মোল্লা ও মোছাঃ ছবিরুন্নেছার ছেলে। এবং মোঃ জামাদুল আওয়াল কাউছার শেখ সদর উপজেলার লক্ষ্মীকোল গ্রামের মোঃ আব্দুল কুদ্দুস শেখের ছেলে।
এ বিষয়ে জানতে রাজবাড়ী ডিবি অফিসে গিয়ে গ্রেফতারকৃত মোঃ ফজলুল হক ও কাউসারের সাথে কথা হলে ধৃত ফজলুল হক এ প্রতিবেদককে জানায়; ইয়াবা কেনার জন্য গোপিনাথ পুরের মুরাদ টাকা নিয়ে এসে আমাকে ফোন করলে আমি তখন বাড়িতে ছিলাম, সে কারনে টাকাগুলো কাউসারের কাছে রাখতে বলি, মুরাদ টাকাগুলো কাউসারের কাছে রেখে দেয়। ৯৫ হাজার টাকার বিনিময়ে আমি মুরাদের নিকট ৪০০ পিস ইয়াবা বিক্রি করি, মুরাদের কাছে ইয়াবা দেওয়ার সময় মজিব বিল্ডিংয়ের পাশে গলির মধ্যো থেকে ডিবি পুলিশ আমাকে আটক করে কিন্তু মুরাদকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়। পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর তারা আমাকে জিঙ্গেস করে ইয়াবা বিক্রির টাকা কোথায়? আমি বলি কাউসারের কাছে, তখন পুলিশ কাউসারের কাছে গিয়ে টাকা চায়, কিন্তু কাউসার টাকা পেয়েছে বললেও টাকা দিতে চায়না, ও বলে ফজলুর কাছে টাকা পাবো, অনেক দিন পর আজ ৯৫ হাজার টাকা পেয়েছি আরও ১৫ হাজার টাকা পাবো, সেই টাকা আগে দিতে বলেন।
ফজলু আরো বলে, কারন কাউছার আমার কাছে প্রায় এক/দেড় মাস পূর্বের হাওলাতের ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা পাবে। কাউছারদের গ্রামের আক্তার মাষ্টারদের সমিতি থেকে লোন নিয়েছিলাম, টাকা পরিশোধ করতে না পাড়ায় ওই সমিতির লোকরা আমাকে আটকে রেখে ছিল, তখন কাউসারের নিকট থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা হাওলাত নিয়ে সমিতির টাকা পরিশোধ করে তাদের হাত থেকে ছাড়া পাই। সেই থেকে কাউছার আমার কাছে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা পাবে। আজ ইয়াবা বিক্রি করে ৯৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেছিলাম, সে কারনে টাকা হাতে পাওয়ায় কাউছার দিতে চাইছিলনা। কাউছার বুঝতেও পারে নাই মূলত ঘটনাটা কি? পরে কাউছারের থেকে পুলিশ ৯৫ হাজার টাকা নিয়ে নিয়েছে।
প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে ফজলু জানায়, আমার কোর্ট-প্যান্টের কারখানা আছে, সেই ব্যবসায়ী হিসাবে কাউছারসহ সবাই আমাকে চেনে-জানে। আমার মাদক ব্যবসা সম্পর্কে কাউছার কোন কিছুই জানেনা, কেউ জানেনা।
প্রত্যাক্ষদর্শী জনী, মিসু, শামিমসহ আরো অনেকে জানায়; কাউছার একটা ভাল ছেলে, ও পড়া-লেখার পর থেকে গ্রামে বিকাশ ও ফ্লাক্সিলোড ব্যবসা করতো, মোবাইল/ কম্পিউটারে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করে ইনকাম করে আর খেলা-ধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকে, বাজে কোন আড্ডায় মেশেনা। চলতি মাসের ১৬ তারিখে মৃধা মাকের্টে বন্ধু টেলিকম নামের মোবাইল দোকান উদ্বোধন করেছে। মাদক তো দুরের কথা ও কোন ঝগড়া বিবাদ বা কোন হাউকাউয়ের ধারের কাছেও নেই। পুলিশ শুধু শুধু ওর জীবনে কলঙ্কের দাগ লাগিয়ে দিল। এই মাদক ব্যবসায়ার সাথে জড়িয়ে পুলিশ এটা মোটেও ঠিক করে নাই।
এদিকে, কাউছারের বাবা, মা সহ পরিবারে সবাই কান্নাকাটি করছে, তারা বলছে সমাজে আমরা মুখ দেখেো কি করে ? নিরপরাধ ভাল ছেলের গায়ে যারা কলঙ্কের দাগ লাগাইলো, আল্লাহ তাদের বিচার করবে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি যে, রাজবাড়ী সদর থানাধীন রাজবাড়ী পৌরসভা রেলগেইট সংলগ্ন মৃধা মাকের্টের দোকান নং-১১, বন্ধু টেলিকম প্রোঃ মোঃ কাউছার শেখের দোকানের সামনে কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী মাদকদ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রয়ের জন্য অবস্থান করিতেছে। উক্ত সংবাদটি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করিয়া আমি সংবাদের সত্যতা যাচাই ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংগীয় অফিসার-ফোর্সসহ ইং-২০/১০/২০২২ তারিখ ১৬:১৫ ঘটিকার সময় উক্ত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হইলে ডিবি পুলিশের উপস্থিতি টের পাইয়া কৌশলে পালানোর চেষ্টাকালে ০২(দুই)জন ব্যক্তিকে আটক করি।
উপস্থিত স্বাক্ষীদের মোকাবেলায় ধৃত ১নং আসামী মোঃ ফজলুল হক(৩২) তার পরিহিত প্যান্টের সামনের ডান পকেট হইতে মোট ৪০০ (চারশত) পিছ মাদকদ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেট নিজ হাতে বাহির করিয়া দেয়।
এবং ধৃত আসামী মোঃ জামাদুল আওয়ালও কাউছার শেখ এর ব্যবহৃত ০১টি অপ্পো এফ-৭ মোবাইল সেট জব্দ করা হয়।
ধৃত ১নং আসামী অবৈধ মাদকদ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিজ হেফাজতে রাখিয়া এবং ২নং আসামী উক্ত ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রয় কাজে সহায়তা করিয়া ২০১৮ সনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) এর ১০(ক)/B১ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করিয়াছে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ এস.এম. রিয়াজুল করিম
ফোনঃ০১৭৫১-৭৫৭৮৯২,০১৫৫৮-৫১৬৩৮২
কার্যালয়ঃ
পৌর নিউ মার্কেট, আই ভবন (২য় তলা, রুম নং-১২৫) ( জেলা স্কুলের সামনে), প্রধান সড়ক, রাজবাড়ী।