প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ৫:০৮ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ আগস্ট ২৮, ২০২১, ৯:৪৪ অপরাহ্ণ
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে পান চাষীরা অপ্রতুলতা ও প্রতিকূলতায় হিমশিম।
বালিয়াকান্দি প্রতিনিধি।। পান খেয়ে ঠোঁট লাল করিলাম বন্ধুর দেখা পাইলাম না। গ্রাম বাংলায় প্রচলিত আঞ্চলিক গানের ছন্দে মনমুগ্ধকর যে রস রয়েছে, তেমনি পানের রসের মধ্যেও সেই সুমধুর স্বাদ খুঁজে পায় প্রকৃত পান প্রেমিকেরা। বাংলাদেশের অনেক মানুষের মধ্যেই পান খাওয়ার ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। দক্ষিন এশিয়ার দেশগুলোতে পানের চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও পানের সমাদর বাড়ছে। আমাদের দেশে একটি শ্রেনী-পেশার মানুষ পান চাষ করে জীবন জিবীকা নির্বাহ করছেন বংশানুক্রমে। আজ আমরা তুলে ধরছি বাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার পান চাষীদের বর্তমান হালচাল। রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলায় বারমল্লিকা, ইসলামপুর, নবাবপুর, জামালপুর, চরারকান্দি, ঠাকুর নওপাড়া সহ বিভিন্ন গ্রামে পান চাষীরা পানের বরজ তৈরী করে পান চাষ করছে। এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া পান চাষের খুবই উপযোগী। বালিয়াকান্দি উপজেলায় মোট ৮৫ হেক্টর জমি পান চাষের আওতায় রয়েছে। তন্মধ্যে ৯ হেক্টর জমিতে সাচী পান (সেন্টযুক্ত মিষ্টিপান) চাষ হয়। ২৬ শে আগষ্ট বৃহস্পতিবার বালিয়াকান্দির পান চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, একসময় তারা ব্যাবসা-সফলভাবে পান উৎপাদন করতো। বর্তমানে চাষের সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি ও শ্রমিকের মুজুরী বৃদ্ধির পাশাপাশি রোগ বালাই, পোকা মাকড় ও ভাইরাসের আক্রমন সহ বহুবিধ প্রতিকুলতায় পানের দরপতন হচ্ছে। ফলে উৎপাদন খরচ তুলতে চাষীদের হিমসিম খেতে হয়। তাদের চোঁখে-মুখে হতাশার ছাপ লক্ষ্য করা গেছে। চাষের খরচ মেটাতে ও সংসার নির্বাহে পরিবারে সদস্যদের নিয়ে কষ্টে দিন কাটছে। কৃষি পরামর্শ এবং সরকারি সহযোগীতা, স্বল্পসুদে ঋন, অনুদান, বা পৃষ্টপোষকতা পেলে ঘুরে দাঁড়াতে পারে পান চাষীরা। নয়তো এভাবে চলতে থাকলে এ অঞ্চলে পান চাষ বন্ধ হয়ে যাবে বলে স্থানীয় চাষীরা আশংকা করছেন।
কিভাবে সুস্বাদু পান উৎপাদন করতে হয় বালিয়াকান্দির পান চাষীদের তা ভালভাবে রপ্ত রয়েছে। পান চাষে আলোর চেয়ে সূর্যের ছায়া বেশী প্রয়োজন। এজন্য পানের বরজে বাঁশের নল, বাঁশের চেড়া, বিচালী, পাটকাঠি, বাইল, পাতার সাহায্যে ঢেকে রাখ্ হয়।পান চাষের বর্তমান সমস্যা সম্পর্কে নওপাড়ার পান চাষী সুজয় মন্ডল জানান, আগে একবার পানের চারা লাগালে ৫-৭ বছর পর্যন্ত পান তোলা যেত। কিন্তু এখন বিভিন্ন প্রতিকুলতায় ২/৩ বছরের বেশি পান তোলা যায় না। গাছ নষ্ট হয়ে যায়। ঠাকুর নওপাড়ার পান চাষী লিটন নন্দী বলেন, একবিঘা জমিতে এত শ্রম ও অর্থ ব্যায়ে ৬ মাসে ১০ হজার টাকা লাভ বের করা যায় না। তাহলে কিভাবে ফ্যামিলি বাঁচাই। নির্মল সরকার বলেন, তিনি কয়েক বছর যাবৎ ২ পাখি জমিতে পানের চাষ করে লাভের মুখ দেখতে পায়নি। আব্দুল সামাদ সেখ ও মোঃ বাচ্চু সেখ বলেন, পোকা মাকড় ও ভাইরাসে পান এবং গাছ নষ্ট করে, সঠিক কোন পরামর্শ পাই না, কৃষি সুপারভাইজার বা কৃষি কর্মকর্তা দেখা মিলে না।
বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ার হোসেন জনতার মেইল প্রতিনিধিকে জানান, বালিয়াকান্দিতে উচ্চ ফলনশীল ফসলের মধ্যে পান অন্যতম। বালিয়াকান্দি উপজেলায় ৪ টি ইউনিয়নে ৮৫ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়। আমরা সাধারনত এই পান চাষীদের বিভিন্ন সময় নানা ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকি। মাঠ পর্যায়ে যে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আছেন তারা তাদেরকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাদের পরামর্শ নিয়েই তারা কাজ করে থাকেন। এছাড়াও উঠান বৈঠক এর মাধ্যমে তাদেরকে প্রশিক্ষন দিয়ে থাকি, যাতে তারা সঠিকভাবে পান চাষ করতে পারেন এবং লাভবান হতে পারেন। এছাড়াও আমাদের কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর থেকে পূর্বে যে সকল পান বিদেশে রপ্তানী করা হতো সে ব্যাপারে আবারও প্রচেষ্টা চলছে। অতিশীঘ্রই আশাকরি আমরা খুব ভাল একটি সুখবর পেতে পারি য়ে, বালিয়াকান্দির পান আবারও দেশের বাহিরে রপ্তানী হচ্ছে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ এস.এম. রিয়াজুল করিম
ফোনঃ০১৭৫১-৭৫৭৮৯২,০১৫৫৮-৫১৬৩৮২
কার্যালয়ঃ
পৌর নিউ মার্কেট, আই ভবন (২য় তলা, রুম নং-১২৫) ( জেলা স্কুলের সামনে), প্রধান সড়ক, রাজবাড়ী।
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম মেনে নিবন্ধনের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন সম্পন্ন ।